২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

একটি পাখি একটি ফুল

-

জলমুরগি

হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল জলাশয়, যেখানে রয়েছে নলখাগড়া বা অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ, পদ্মবন ইত্যাদির আধিক্য বেশি যেখানে, সেখানেই দেখা যেতে পারে কালো কালো মুরগির মতো এক ধরনের পাখিকে। একটি নয়, কখনো জোড়ায় বা কখনো কখনো দলবল নিয়ে ওরা ঘোরাফেরা করে। অনেকেই দেখে হুট করে জলপিপি বলে ভুল করতে পারে। এটির নাম জলমুরগি। ইংরেজি নাম মুরহেন।
নিরাপদ দূরত্বে থেকে একটু আড়ালে দাঁড়িয়ে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে, এই জলমুরগিগুলো সাঁতার কাটছে মাথাটাকে সামনে পেছনে করে করে। লেজ তুলে চলেছে বলে কারো পেছনটা দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ নলের উপর পা আঁকড়ে বসে আছে। আবার দু-একটা পাখি অন্যমনস্কভাবে হেঁটে হেঁটে খাবার খুঁজছে। আমাদের দেশে স্থায়ী বাসিন্দা জলমুরগি যেমন আছে, তেমনি শীতের অতিথি হিসেবেও প্রচুর জলমুরগি আমাদের দেশে আসে। ওরা জোড়ায়-জোড়ায় বা ছোটো দলে, ঘুরে বেড়ায়। আবার শীতের অতিথিরা এলে ৫০-৬০টির দলও হয়। ওরা পানিতেই বেশির ভাগ সময় কাটায়। পদ্ম, শাপলা কিংবা অন্যান্য জলজ লতাগুল্ম ঠেলে ঠেলে ওরা শব্দহীন সাঁতার কাটে। সামান্যতম বিপদের সঙ্কেত পেলেই আত্মগোপন করে জলজ উদ্ভিদের আড়ালে। তখন এক ধরনের আওয়াজ করে ওরা। আওয়াজটা হয় অনেকটা ‘কাড়–ক-কুড়–ক’ ধরনের। আত্মগোপন করার সময় ডানার চেয়ে পায়ের কাজটা-ই বেশি হয় ওদের। আর বিপদ বড়ো হলে জল ছেড়ে ওড়াল দেয়। অনেকটা অনিচ্ছা সত্ত্বেই যেন ওরা ওড়ে। তখন পা দুটো ল্যাগব্যাগ করে ঝুলতে থাকে। মনে হয় ওড়াটা ওদর খুব পছন্দ নয়। কিন্তু যখন দেশান্তরী হয়, তখন ওরা অবলীলায় বড়ো বড়ো পাহাড় পর্বতের উপর দিয়ে চলে যায় দূরদূরান্তে।

বেলি ফুল

বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ফুল হচ্ছে বেলি ফুল। এটি প্রায় সবার পরিচিত একটি ফুল। বেলি হচ্ছে জেসমিন গণের গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। বেলি গাছ ঝোপাল, ছোট, প্রায় এক মিটার উঁচু। কচি ডাল রোমশ। পাতা একক, ডিম্বাকর, ৪-৮ সেমি লম্বা গাঢ় সবুজ। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ফুল ফোটে কয়েকটি একটি থোকায়।
ফুলের আকার ও গড়ন অনুসারে কয়েকটি প্রকারভেদ আছে। কলম ও শিকড় থেকে গজান চারায় চাষ। শীতে ছেঁটে দিতে হয়। টবেও এটি ভালো জন্মে থাকে।
বেলিকে অনেকে মনে করেন বনমল্লিকা শব্দ থেকে উদ্ভত। বেলি গাছ দেখতে কদর্য অধিকাংশ সময় পাতা থাকে না, আর কিছু পাতা থাকলেও তাতে শ্রী থাকে না। বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানের বাগানে চাষ করা হয়। স্বল্প জায়গায় লাগানো যায়, সুগন্ধি আছে। অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
উন্নত গুণমানের ক্ষেত্রে বেলি ফুল তেলের জন্য একটি ভালো উৎস এবং এটি আজও সুগন্ধি শিল্পের উদ্দেশে চাষ করা হচ্ছে। বেলির মূল এবং কচি পাতা থেঁতো করে সিদ্ধ করে সেবন করলে বুকে সর্দি বসলে ভালো হয়ে যায়। বেলি ফুল চূর্ণ করে গরম পানির সাথে সেবন করলে কৃমি ভালো হয়। বেলির মূল সিদ্ধ করে সেবন করলে শ্বাসকষ্টে উপকার পাওয়া যায়। বেলির মূল থেঁতো করে এই রস আতপ চাল ধোয়া পানি ও চিনি মিশিয়ে খেলে বমি বমি ভাব দূর হয়। বেলি পাতা বেটে ক্ষতের উপর প্রলেপ দিলে ক্ষত দ্রুত ভালো হয়। যাদের রাতে ঘুম হয় না তারা বেলির পাতা বেটে পানিতে গুলিয়ে সেবন করে খেলে ঘুম ভালো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement