২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নবাব সিরাজ উদ্দৌলা : ইতিহাসের এক মহানায়ক

-

নবাব মুর্শিদকুলি খান বাংলায় যে নবাবী শাসনের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নবাব সিরাজ উদ্দৌলা ছিলেন এর শেষ উজ্জ্বল নক্ষত্র। নবাব আলিবর্দী খানের দৌহিত্র সিরাজ মাতামহের মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালে বাংলার মসনদে সমাসীন হন। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। তিনি সাকল্যে ১৪ মাস আট দিন রাজত্ব করেন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন ঐতিহাসিক পলাশী যুদ্ধে ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে তার রাজত্বের অবসান ঘটে। ‘ক্লাইভের গাধা’ নামে পরিচিত, ইংরেজদের বশংবদ নবাব মীর জাফরের পুত্র মীরনের নির্দেশে ৩ জুলাই মোহাম্মদী বেগ নামের আততায়ীর হাতে সিরাজ উদ্দৌলা শাহাদাত বরণ করেন। স্বদেশপ্রেমী ও তেজোদ্দীপ্ত তরুণ নবাবের এ নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই কার্যত বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্ত যায় এবং ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গ-ভারতে প্রায় ২০০ বছরের পরাধীনতার গ্লানিকর ইতিহাসের সূচনা হয়। নবাব সিরাজ উদ্দৌলা ইতিহাসের এক মহানায়ক। অন্য দিকে তিনি ভাগ্যহতও বটে। ক্ষমতালোভী ইংরেজ ও তাদের দোসরদের হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন। নিজের রক্তস্রোতে বাংলার মাটিকে রঞ্জিত করেছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আজো সিরাজকে ইতিহাসে কলঙ্কিত চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন, পলাশীর বিপর্যয়ের জন্য তাকে দায়ী করা ইতিহাসবিদ, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদের দেখা পাওয়া যায়।
নিজেদের ক্ষমতার স্বার্থে নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে খলচরিত্র হিসেবে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা শুরু থেকেই ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও তাদের এদেশীয় দোসর গোষ্ঠী সচেতনভাবেই চালিয়েছিল। এ কাজে তারা ইংরেজ ইতিহাসবিদদের পাশাপাশি সমকালীন এদেশীয় ইতিহাসবিদদেরও ব্যবহার করেছে। ইংরেজ শাসকদের অনুকম্পা ও দাক্ষিণ্য লাভের বিনিময়ে ইউসুফ আলী খান রচিত তারিখ-ই-বাঙ্গলা-ই-মহব্বত জঙ্গী গ্রন্থে, গোলাম হোসাইন খান তাবাতাবাই তার সিয়ার-উল-মুতায়াখ্খেরিন গ্রন্থে এবং মুনশি গোলাম হোসেন সলিম রিয়াজ-উস-সালাতিন গ্রন্থে ইংরেজ ইতিহাসবিদদের মতোই অসত্য ও বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করেছেন। তাদের বর্ণনায় ইংলিশ কোম্পানি কর্তাদের উদার, বিশ্বস্ত, সহনীয় এবং সম্মানিত হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নাকি শঠতা, প্রতারণা, মন্দজ্ঞান নেই। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নবাব একজন ল¤পট, মাতাল, চরিত্রহীন, নিষ্ঠুর, অপদার্থ ও অর্বাচীন। কর্কশ স্বভাবের সিরাজ উদ্দৌলা নাকি এতটাই দুর্বিনীত ছিলেন যে, তার সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে আমির-ওমরাহদের সম্মান বিসর্জন দিয়ে উৎকণ্ঠা ও আশঙ্কার মধ্যে থাকতে হতো। নবাব তাদের সামনে পেলে চক্ষু রক্তবর্ণ করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। সমকালীন কিছু ইউরোপীয়-ইংরেজ ইতিহাসবিদের ভাষ্য মতে, সিরাজ উদ্দৌলা এমনই দুশ্চরিত্র, দুর্বিনীত ও নিষ্ঠুর ছিলেন যে, তাতে কেবল রাজ্যের অভিজাতবর্গই নয়, সাধারণ মানুষও তার প্রতি বিরূপ ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন। এমতাবস্থায় মুর্শিদাবাদের অভিজাত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাকে অপসারণ করতে নাকি বদ্ধপরিকর হয়ে ইংরেজদের সামরিক সহায়তা পাওয়ার আশায় তাদের ডেকে আনে। এসব বর্ণনায় সিরাজ উদ্দৌলাকে কেবল হেয় প্রতিপন্ন করার অপপ্রয়াসই নয়, পলাশী যুদ্ধের সব দায় নবাবের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ইংরেজ বেনিয়াদের দায়মুক্তি দেয়ারও অপকৌশল লক্ষ করা যায়।
উনিশ শতকের কয়েকজন বাঙালি লেখকের রচনাতেও সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে কল্পিত সমালোচনা পাওয়া যায়। এদের মধ্যে রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায় (মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়স্য চরিতং গ্রন্থ), মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার (রাজাবলি গ্রন্থ) নীলমণি বসাক, দুর্গাদাস লাহিড়ী, নবীনচন্দ্র সেন (পলাশীর যুদ্ধ কাব্য গ্রন্থ) প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। তাদের রচনায় সিরাজের চরিত্রে অযথা কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা লক্ষণীয়। তাদের বর্ণনা মতে, নবাব ছিলেন দুশ্চরিত্র। পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ গ্রন্থের রচয়িতা রজতকান্ত রায়ের মতো আধুনিক ইতিহাসবিদদের কেউ কেউ এ ধরনের কল্পিত ও অলীক অভিযোগের সত্যতা আছে বলে মনে করেন। অথচ ১২২ বছর আগে ১৮৯৮ সালে প্রকাশিত সিরাজদ্দৌলা নামক গ্রন্থ প্রণেতা প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় যুক্তিতর্কের মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন, সিরাজ সম্পর্কে এই অভিযোগগুলো অসার ও অলীক। তবু কেন সিরাজ সম্পর্কে এমন মিথ্যাচার? বস্তুত, এমন সর্বৈব মিথ্যাচারে সিরাজ উদ্দৌলার চরিত্র হননের মধ্য দিয়ে সমাজে তার সম্পর্কে বিদ্বেষী মনোভাব তৈরির চেষ্টা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে বাঙালি বিদ্যমান সাম্প্রদায়িকতার পরিবেশ ক্ষুণœ করারও লক্ষ্য ছিল। এটাকে বলা যেতে পারে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভাজন সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর ইংরেজদের ‘ভাগ কর-শোষণ কর’ নীতি বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ। শুধু তাই নয়, ইংরেজ শাসক ও তাদের দেশীয় দালালদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা-সংগ্রামে সিরাজ উদ্দৌলার অনুকূল ভাবমূর্তি যাতে গড়ে না ওঠে সে দিকেও কুচক্রীদের সচেতন প্রচেষ্টা ছিল।
সত্যকে বেশি দিন চাপা দিয়ে রাখা যায় না। সাময়িকভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব, স্থায়ীভাবে নয়। এ সত্য ইতিহাস উদ্ঘাটনে এগিয়ে আসেন সত্যানুসন্ধানী কোনো-না-কোনো ইতিহাসবিদ। পলাশী ও সিরাজ সম্পর্কে এ কাজটি করেছেন ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়। তিনিই প্রথম তার অনন্য রচনা সিরাজদ্দৌলা নামক গ্রন্থে পলাশী যুদ্ধের প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে পূূর্বেকার তাঁবেদার ফরমায়েশি ইতিহাসবিদ ও লেখকদের অসত্য, বিকৃত ও বানোয়াট ইতিহাসের মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করেন, ইংরেজ সমর্থন-সহযোগিতায় রচিত পলাশী যুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মিথ্যার ওপর প্রতিষ্ঠিত। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়ের রচনায় ইস্ট ইন্ডিয়া কো¤পানির অন্যায় দেশ দখল, অনাচার, শোষণ ও লুণ্ঠন প্রমাণিত হয়েছে। তিনি যৌক্তিকভাবে পলাশী যুদ্ধের কলঙ্কের জন্য ইংরেজদের মূল দায়ীরূপে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন। পূর্ববর্তী বাঙালি লেখকরা বিশেষ করে নবীনচন্দ্র সেন যে তার রচনায় সিরাজ উদ্দৌলার চরিত্রে অযথা কলঙ্ক লেপনের অপচেষ্টা করেছেন সে জন্য অক্ষয়কুমার কঠোর ভাষায় তাকে ভর্ৎসনা করেছেন। মৈত্রেয়ের ভাষ্য মতে, সিরাজ উদ্দৌলা স্বল্প সময় রাজত্ব করলেও শাসক হিসেবে ছিলেন ‘নিখাদ দেশপ্রেমিক’, অসম সাহসী যোদ্ধা, বিপদে পরম ধৈর্যশীল, নিষ্ঠাবান, কঠোর নীতিবাদী, ধার্মিক এবং যেকোনো পরিণামের ঝুঁকি নিয়েও প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। অক্ষয়কুমার নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে ইংরেজ ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী প্রথম বীর রূপেও গণ্য করেছেন।
অক্ষয় মৈত্রেয়ের মতো মুর্শিদাবাদ-কাহিনী গ্রন্থের লেখক ঐতিহাসিক নিখিলনাথ রায়ও সিরাজ ও পলাশী যুদ্ধ সম্পর্কে পূর্ববর্তী লেখকদের অসত্য ও বিকৃত তথ্য খণ্ডন করেছেন। বাংলা থিয়েটারের স্বর্ণযুগের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিলেন নটগুরু গিরিশচন্দ্র ঘোষ। একাধারে সঙ্গীতস্রষ্টা, কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যপরিচালক ও নট হিসেবে সুপরিচিত গিরিশচন্দ্র ঘোষের অন্যতম সৃষ্টি সিরাজদ্দৌলা (১৯০৫) নাটক। প্রখ্যাত নাট্যকার ও সাংবাদিক শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের অমর সৃষ্টি সিরাজুদ্দৌলা (১৯৩৮) নাটক। পলাশী ট্র্যাজেডি অবলম্বনে রচিত এ নাটক দু’টিতে সিরাজ উদ্দৌলার চরিত্র অঙ্কিত হয়েছে দেশপ্রেমিক, স্বাধীনচেতা ও প্রজাবৎসল বীরচরিত্র হিসেবে। মহতী এ কাজে ব্রতী হয়েছেন পরবর্তীকালে আরো অনেক ইতিহাসবিদ। আর এভাবেই ইতিহাসে সত্য উন্মোচিত হয়েছে।
নবাব সিরাজ উদ্দৌলা একজন রক্তে-মাংসে গড়া মানুষ। রাজ পরিবারে মাতামহের অতি আদরে বড় হয়েছেন তিনি। রাজদণ্ড গ্রহণের আগে তার মধ্যে কিছু চারিত্রিক ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। কিন্তু সেসব ত্রুটির তিলকে তাল বানিয়ে এদেশীয় ও ইংরেজ ইতিহাসবিদ ও লেখকরা তার বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার শুরু করেছিল, তা ছিল অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজদণ্ড গ্রহণের আগেই তিনি যে তার চারিত্রিক ত্রুটিগুলো শুধরে নিয়ে সংযত জীবন শুরু করেছিলেন এর সাক্ষ্য সিরাজের পরম শত্রু ইংরেজ পণ্ডিতদের লেখনীতেও পাওয়া যায়। নবাব হিসেবে তিনি মাতামহের অন্তিম উপদেশ মোতাবেক, বণিকের মুখোশ পরিধান করে বাংলার রাজনৈতিক ক্ষমতার দণ্ড কুক্ষিগতকরণে সচেষ্ট ইংলিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে বাংলাকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। শুরুতে কূটনৈতিকপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে ইংরেজদের সাথে শান্তিপূর্ণ মীমাংসার নানা উদ্যোগ তিনি নিয়েছিলেন। তবে তার সেসব প্রচেষ্টা নস্যাৎ হওয়ায় রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার তাগিদেই তিনি অবাধ্য ও বিপজ্জনক ইস্ট ইন্ডিয়া কো¤পানির বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছিলেন। নবাবের বিরুদ্ধে সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শুরুতে সুবিধা না করতে পেরে মাদ্রাজ থেকে আগত কোম্পানিকর্তা রবাট ক্লাইভ নবাব দরবারের স্বার্থান্বেষী কুচক্রী ও ষড়যন্ত্রকারী মীরজাফর-জগৎশেঠ গং-এর সাথে গোপন আঁতাতের মাধ্যমে ‘পলাশী যুদ্ধ’ নামক প্রহসনের আয়োজন করেছিল। এ যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ্দৌলাকে ‘পরাজিত’ করে ইংরেজ বেনিয়ারা ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে। তাদের ক্ষমতার সপক্ষে যুক্তি দাঁড় করানো এবং সিরাজকে হত্যার দায়মুক্তি দেয়ার জন্য পলাশী ও সিরাজ সম্পর্কে অসত্য-বিকৃত ইতিহাস রচনা করে এ দেশবাসীকে ইংরেজরা বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করেছে।
সত্য সন্ধানী ইতিহাসবিদ ও গবেষকদের প্রচেষ্টা ইতিহাসে সিরাজের স্থান হয়েছে আপন মহিমায়। তবে এখনো অনেকের রচনায় পলাশী ও সিরাজ উদ্দৌলা সম্পর্কে উনিশ শতকীয় ইংরেজ ও তাদের পদলেহী ইতিহাসবিদদের ভাষ্যেরই প্রতিফলন দেখা যায়। ইংরেজ শাসনাধীনে সমকালীন ইতিহাসবিদদের ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃতির উদ্দেশ্য আমাদের কাছে স্পষ্ট। কিন্তু হালের কতিপয় ঐতিহাসিক কেন তা করছেন? এটি কেবল তাদের সঙ্কীর্ণ মানসিকতা বলা যাবে না, ক্ষেত্রবিশেষে উপনিবেশবাদ-সাম্রাজ্যবাদের প্রতি তাদের আনুগত্যের প্রমাণ বলেও মনে করা যেতে পারে।
নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার-বিশ্লেষণ করলে প্রমাণিত হয়, ব্যক্তিগত চরিত্রে নবাব সিরাজ উদ্দৌলা ছিলেন সহজ ও সরল মানুষ। তার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কম ছিল সত্য, তবে বিবেচনাবোধ ছিল প্রখর। তার কূটনীতি জ্ঞানও কম ছিল না। সবকিছুর ঊর্ধ্বে তিনি ছিলেন একজন মহান দেশপ্রেমিক, স্বাধীনতাপ্রিয় ও সাহসী যোদ্ধা। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তিনি ব্যর্থ হলেও স্বদেশকে বিনা প্রতিরোধে তুলে দেননি সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে। তিনি যদি ইংরেজদের সাথে সমঝোতা করতেন, তাদের অপকর্ম দেখেও ভান করতেন না দেখার, কুচক্রী ষড়যন্ত্রীদের লুণ্ঠন কাজে বাধা না দিতেন, নবাব হিসেবে বাকি জীবন আরাম আয়েশেই কাটাতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং দেশের মানুষের মর্যাদারক্ষার্থে আত্মবলিদানের পথই বেছে নিয়েছেন। তিনি নিজে যত না পাপ করেছিলেন, তার ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, তাকে ইতিহাসের খলনায়ক হিসেবে উপস্থাপন করে স্বার্থান্বেষী চক্র এর চেয়েও বেশি পাপ করেছে। সিরাজ উদ্দৌলা ইতিহাসে আপন মহিমায় ভাস্বর হয়ে আছেন। বিশ্ব ইতিহাসে দেশপ্রেম আর বীরত্বের জন্য যাদের নাম অমর, নবাব সিরাজ উদ্দৌলা তাদের অন্যতম। তিনি আমাদের জাতীয় বীর, ইতিহাসের উজ্জ্বল মহানায়ক। তার স্থান বাংলার প্রতিটি সাধারণ মানুষের মণিকোঠায়। স্বাধীনতাকামী এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামীদের জন্য নবাব সিরাজ এক অনন্য প্রেরণার নাম। বাংলাদেশে সরকারিভাবে সিরাজ উদ্দৌলাকে স্মরণ করা হয় না। অবশ্য তার নাম স্মরণ করে এদেশের মানুষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় প্রতিটি দিনই। ২৩ জুন পলাশী দিবস। এ দিনে ইতিহাসের এ মহানায়কের প্রতি বিন¤্র শ্রদ্ধা। হ
লেখক : অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়।
e-mail: s_rahman_khan@yahoo.com

 


আরো সংবাদ



premium cement
কাউখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু চুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান অব্যাহত, ঘাতক বাসচালক গ্রেফতার তামাক পণ্যে সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে ২৫ সংসদ সদস্যের চিঠি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে মহিষের আক্রমণে বাবা-ছেলেসহ আহত ৪ গফরগাঁওয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে সরকার : মির্জা ফখরুল মিরসরাইয়ে মৃত্যুর ১৫ দিন পর ব্যাংক কর্মকর্তার কবর থেকে লাশ উত্তোলন দেশে দেড় হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং, দুর্ভোগে মানুষ রংপুরে মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার বাড়ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি, অনলাইনে ক্লাস চালুর চিন্তা বিশ্বের অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা হবে বাংলাদেশে : ধর্মমন্ত্রী

সকল