২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

কালাটুপি

-

তোমরা হয়তো মাছরাঙা পাখির নাম শুনেছ। অনেকে মাছরাঙা দেখেছও। এরা আকারে ছোট বা মাঝারি। এ পাখির রয়েছে নানা প্রকারভেদ বা প্রজাতি। এগুলো হলো গাঙ মাছরাঙা, গেছো মাছরাঙা, পাইসা মাছরাঙা ইত্যাদি। এগুলো অ্যালসিডিনিস উপবর্গের মাছরাঙা। এগুলো ছাড়াও আরো এক ধরনের মাছরাঙার সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। এর নাম কালাটুপি মাছরাঙা। মাথার উপরের অংশ কালো বলেই এদের এমন নামকরণ হয়েছে।
এদের পিঠ গাঢ় উজ্জ্বল বেগুনি রঙের। দেহতল বা বুক ফ্যাকাশে লাল। গলার জায়গা ধবধবে সাদা। এ পাখির পেছনের অংশ ও লেজ বেগুনে-নীল। ডানার কিছু অংশ কালো। পেট ফ্যাকাশে কমলা রঙের। তবে ওড়ার সময় ডানার ভেতরের সাদা অংশ দেখা যায়। এদের চোখ কালচে বাদামি, ঠোঁট গাঢ় লাল। পা (পাতাসহ) কালচে-লাল। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কালাটুপি মাছরাঙার গলা, বুক কালো রঙের হয়ে থাকে।
এ পাখির দৈর্ঘ্য ২৮ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার, ডানা ১১ থেকে ১৩ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৫-৬ সেন্টিমিটার, পা প্রায় ২ সেন্টিমিটার ও লেজ ৮-৯ সেন্টিমিটার। এরা বেশি বিচরণ করে নদী, জলাধার, বেলাভূমি, জোয়ার-ভাটাপ্রবণ এলাকা, নদীর মোহনা ইত্যাদি জায়গায়। গাছের ডালে বসে কোথায় মাছ আছে তা পর্যবেক্ষণ করে। মাছ দেখামাত্র ডাইভ দিয়ে তা শিকার করে পানির নিচে গিয়ে। এতে যেন কোনো মিস নেই। মাছ খেতে অভ্যস্ত বলে জলাশয়ের পাশে গাছের গর্ত বা কোটরে বাসা বানায়। এর ভেতরে বসে মাথা বের করে সব দেখে শিকারের উদ্দেশে। মাছ ছাড়াও ছোট ব্যাং, কাঁকড়া, ছোট টিকটিকি, পোকামাকড়সহ অন্যান্য খুদে প্রাণী শিকার করে খুব দ্রুত খায়। দেহের তুলনায় খেতে পারে বেশি, যেন সারা দিনই খায়।
কিছু পাখি ওড়ার সময় নানা ধরনের শব্দ করে। কিন্তু কালাটুপি মাছরাঙারা ওড়ার সময় কোনো শব্দ করে না বা ডাকে না। গাছের ডালে বসে কি-কি-কি করে ডাকে। অনেক সময় এরা বাসা বানায় নদী-জলাশয়ের পাড়ে সমতল সুড়ঙ্গ তৈরি করে। ডিম পাড়ে চার-পাঁচটি। সাধারণত ডিম পাড়ে মে-আগস্টে।
ডিম দেয়ার ১৫-১৬ দিন পরে তা থেকে বাচ্চা বা ছানা বের হয়। এরা উড়তে শেখে ২৫-২৮ দিন পর। এদের বেশি দেখা যায় শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মিয়ানমার, চীন, লাওস, ভারত, পাকিস্তান, কোরিয়া, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে।
কালাটুপি মাছরাঙাকে বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখি বলা হয়ে থাকে। এদের বেশি দেখা যায় চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের বিভিন্ন বনাঞ্চলে। তবে শীতের সময়ই বেশি দেখা যায়। শীতের সময় নানা সুরে ডাকেও বেশি। অতীতে খুব বেশি দেখা যেত সিলেট বিভাগে। এখন ওখানে এদের আনাগোনা কমে গেছে।
ভালো খবর হলো, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে এরা বিপদমুক্ত বলে বিবেচিত। তাতে দেখা যাচ্ছে এদের সংখ্যা দ্রুত কমছে না, বরং কোনো কোনো স্থানে বাড়ছে। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে এদের বিচরণ তাই অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কালাটুপি মাছরাঙার বৈজ্ঞানিক নাম হালসিয়ন পিলেটা। হালসিয়ন পিলেটা মানেই টুপিপরা মাছরাঙা। এর ইংরেজি নাম ব্ল্যাক-কেপড কিংফিসার। এরা এইচ. পিলেটা শ্রেণীর পাখি। আর আলসেডিনিডা পরিবারভুক্ত।


আরো সংবাদ



premium cement
নাটোরে স্কুলছাত্রকে ডেকে নিয়ে হত্যা, আটক ৪ মেহেদির রঙ শুকানোর আগেই দুর্ঘটনায় তরুণ নিহত ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস অস্বাস্থ্যকর কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের

সকল