স্মৃতির পাতায় প্রিয়জন
- শওকত আলী রতন
- ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
লেখাটা কিভাবে শুরু করব বা করা উচিত সেটি ভেবে পাচ্ছি না। কারণ ১৫ বছরের গল্প পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা এতটা সহজ না। নয়া দিগন্ত পত্রিকার পাঠক ফোরাম ‘প্রিয়জন’-এর কথাই বলছি। সেই ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বর আড়ম্বরপূর্ণ যাত্রা শুরু করেছে পাঠকনন্দিত পাঠক ফোরাম প্রিয়জন। সাংগঠনিক কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন লেখক সৃষ্টি করাই ছিল প্রিয়জন পাতার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে। আর সেটি সফলভাবে করতে পেরেছে। এজন্য নয়া দিগন্তের কর্র্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। প্রিয়জন পাতায় লেখালেখির মাধ্যমে আজ অনেক লেখক দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। এটিও নয়া দিগন্তের অবদান বলে মনে করছি।
প্রিয়জনের শুরুটা হয়েছিল খুবই জাঁকজমকভাবেই। এখনকার মতো এত পত্রিকার আধিক্য ছিল না তখন। নবীন লেখকদের প্লাটফর্ম হিসেবে প্রিয়জন পাতায় লেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। এত অধিকসংখ্যক লেখক প্রতিদিন প্রিয়জনের ডেস্কে আসত যে, তাদের বসার মতো জায়গাও দেয়া যেত না। তার পরেও এতটুকুু বিরক্তবোধ করেননি কেউ।
নয়া দিগন্তের জন্মলগ্ন থেকে আমি প্রিয়জনের সাথে আছি। শুরুটা হয়েছিল নয়া দিগন্তের বি স আহমেদ ফারুকের হাত ধরেই। তার সান্নিধ্য আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে প্রিয়জনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে। সেই সময়ে আমি ঢাকার দোহার উপজেলার দোহার প্রিয়জনের নেতৃত্বে দিয়েছি। বছরে একাধিক ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, শিক্ষাউপকরণ বিতরণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, চারা গাছ বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, কবিতা আবৃত্তি, শীতার্তদের শীত বস্ত্র বিতরণ, অসহায়দের পাশে থাকার মতো কমকাণ্ডগুলো সম্পন্ন করেছি। এসব কর্মকাণ্ডে স্থানীয়রা আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করায় কঠিন কাজগুলো অতি সহজে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।
কেন্দ্রীয় প্রিয়জনের উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছি। ৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে আমাকে অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিতে হয়েছে। তারপরও কখনো পিছপা হয়নি; বরং সব অনুষ্ঠানে সবার আগে উপস্থিত হয়েছি।
সারা দেশের প্রিয়জন সদস্যদের অংশগ্রহণে (সেরা প্রিয়জন, গল্প, কবিতা, ছড়া, সমালোচক, সংগঠক, সংগঠন) ক্যাটাগরিতে সার্চ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেরা ঘোষণা করা ছিল একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। সার্চ অনুষ্ঠান কবি সাহিত্যিকদের মিলনমেলায় পরিণত হতো। তাই প্রতি বছর আড়ম্বরপূর্র্ণ অনুষ্ঠানগুলোতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রিয়জনরা ছুটে আসত সার্চ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে। ওই সময়টাতে দেশসেরা সংগঠন হিসেবে কেন্দ্রীয় প্রিয়জন, উল্লাপাড়া প্রিয়জন, কুমিল্লা প্রিয়জন, দাউদকান্দি প্রিয়জন, চাঁদপুর প্রিয়জন, দোহার প্রিয়জন, নারায়ণগঞ্জ প্রিয়জন, সিলেট প্রিয়জন, খুলনা প্রিয়জন, সোনারগাঁও প্রিয়জনসহ আরো অনেক সংগঠনের বেশ সুনাম ছিল। এসব সংগঠন থেকে নিয়মিত লেখালেখি করতেনÑ হাসিনা মমতাজ, হাসিনা সাঈদ মুক্তা, নাফিসা লিমা, তাহমিনা তানি, তাসনিয়া তাহমিনা তিষা, এ এন ওয়াহিদ, সালমান তারেক শাকিল, ফিহির হোসাইন, পল্লব শাহরিয়ার, আতাউল্লাহ নাঈম, আমিনুল ইসলাম রাজু, গাজী মুনছুর আজিজ, ফারহা দীবা ইরানী, ইরানী বিশ্বাস, সামসুজ্জামান নীপু, মো: আলী আশরাফ খান, নুরুজ্জামান লাবু, ইলিয়াস আহমেদ, দেলোয়ার হোসাইন, রবিউল হোসাইন, নেয়ামত উল্লাহ, রশিদ হারুন, কবি ফজলুল হক, সামিউল আজিজ উজ্জ্বল, মোস্তফা হায়দার, নাদিম মজিদ, হাসনাইন হীরা, এফ এম ইকবাল, সৈকত সাদিক, মতিন সৈকত, সামছুজ্জামান সোহাগ, সাইফুল ইসলাম জুয়েল, সামসুন্নাহার শারমিনসহ অগণিত লেখক। এই লেখকদের লেখা নিয়েই সাজানো হতো প্রিয়জনের প্রতিটি সংখ্যা।
অসংখ্য লেখকের মাঝখান থেকে আমরা দু’জন প্রিয়জন সক্রিয় সদস্যকে হারিয়েছি। সবার প্রিয় নানা এ এন ওয়াহিদ ও তাসনিয়া তাহমিনা তিষা। তাদের দু’জনের কথা মনে পড়তেই শ্রদ্ধার মাথা অবনত হয়ে পড়ে। প্রিয়জনের এই দু’জনের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে প্রিয়জনদের কাছে। তাদের আত্মার শান্তি ও রূহের মাগফিরাত কামনা করছি।
এছাড়া কেন্দ্রীয় প্রিয়জনের আয়োজনে ফ্রি ব্লাড ডোনেটর ক্লাব, বার্ষিক বনভোজন, বন্যার্র্তদের সহযোগিতা ও শীতবন্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানগুলো খুবই প্রশংসা কুড়িয়েছে। নিয়মিত মাসিক সভার মাধ্যমে কর্র্মপদ্ধতি নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়ন করা হতো। মাসিক সভাগুলোতে সব শ্রেণী-পেশা ও সব বয়সের মানুষের উপস্থিতি জানিয়ে দিত কতটা প্রাণের সংগঠন প্রিয়জন। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ১৫টি বছর। কাছে-দূরের অনেক প্রিয়জন কাজের তাগিদে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছেন। আবার অনেকেই এখনো প্রিয়জনের সাথে যুক্ত থেকে লিখছেন। তাদের সাধুবাদ জানাই, যারা প্রাণের সংগঠন মনে করে এখনো প্রিয়জনে লিখছেন বা মূল্যবান মতামত দিয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
প্রিয়জন তরুণ ও নবীন লেখকদের লেখালেখির চারণভূমি বলা চলে। এখনো নতুন নতুন লেখক প্রিয়জনে লিখছেন। প্রিয়জন পাতা এখন প্রতি মাসের দ্বিতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহের শনিবার প্রকাশিত হয়। প্রিয়জন সদস্যদের গল্প, কবিতা, ছড়া, ফিচার দিয়েই সাজানো হচ্ছে এ পাতাটি। আহমেদ ফারুক প্রিয়জনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেয়ার পর পাতাটির বিভাগীয় সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন সাহিদা শিল্পী। প্রিয়জনের কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও প্রিয়জনের নতুন পুরাতন সব সদস্যদের উজ্জীবিত হয়ে সক্রিয়ভাবে প্রিয়জন পাতায় লেখার আহ্বান জানাচ্ছি। সবাই ভালো থাকবেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
কেন্দ্রীয় প্রিয়জন
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা