১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অপেক্ষার প্রহর শেষ, এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা

অপেক্ষার প্রহর শেষ, এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা - ফেসবুক থেকে

চীনের উহানে অবরুদ্ধ ছিলাম। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত, টানা ৮ দিন। কোভিড-১৯ ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির সরকার ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের উহান শহরটি লকড ডাউন করে দেয়। কিছুদিন পর উহানের আশে-পাশের আরো ১৩টি শহর লকড ডাউন করে দেয়া হয়। পরিচিত শহরটি হঠাৎ করেই অপরিচিত হয়ে উঠে। দোকানপাট বন্ধ, যানবাহন নেই, রাস্তাঘাটে লোকজনের দেখা নেই, জনশূন্য, ভুতুরে আতঙ্কের একটি শহরে পরিণত হয়। এদিকে দিন যতই যায় আতঙ্ক আর ভয় বাড়তে থাকে। শূন্যতা আর একাকিত্বে দিনগুলো কাটতে থাকে।

অবশেষে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থপনায় বিশেষ বিমানযোগে আমরা ৩১২ জনের মতো গত ১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আসি। অবরুদ্ধ থেকে এসে আবারও অবরুদ্ধ হলাম। তবে এ অবরুদ্ধ ছিল একটু ভিন্নরকম। সবার চোখে-মুখে ছিল সস্তি এবং শান্তি। একই ছাদের নিচে বসবাস ৩১২ জনের বসবাস। যেন বিশাল একটি পরিবার। যে পরিবারের সদস্য ছিল, বিসিএস কর্মকতা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ডাক্তার, পিএইচডি গবেষক, ব্যাচেলর-মার্ষ্টাসের এক ঝাঁক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, ছিল অনেক কিউট বাচ্চা। যাদের মধ্যে ছিল শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর আন্তরিকতা। একসাথে খাবার খাওয়া, নামায পড়া, বিকেলে ছাদে হাঁটাহটি করা, বসে গল্প করা, তাশ খেলা, লুডু খেলা, দাবা খেলা, টিভি দেখা, সবাই একে অপরকে খুব কাছে থেকে জেনেছে, বুঝেছে, যেন এক মায়ার জালে আবদ্ধ হয়ে গেছে।

প্রথমদিকে যদিও হজ্জক্যাম্পে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা দেখে সবার মাঝে একধরনের হতাশা আর বিরক্তি কাজ করছিলো। কারণ ঢালাওভাবে এক রুমে ৪০/৫০ জনের মতো মেঝেতে বিছানা করে থাকার ব্যবস্থা, মেয়ে-ছেলে ও বাচ্চা নিয়ে আড়াল-আবডাল ছাড়াই, মশার উৎপাত যা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিল না। কিন্তু মিডিয়ায় হজ্জ ক্যাম্পের এরকম চিত্র তুলে ধরায় এক দিনেই হজ্জক্যাম্পের অনেক পরিবর্তন এলো, ছেলে-মেয়েদের পৃথক করা, পরিবারগুলোকে আলাদা করা, মশার ওষুধ দেয়া এছাড়াও দিনের পর দিন অনেক সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।

যদিও প্রথম দিনেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনির কর্মকর্তা এবং আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফিরে আসা বাংলাদেশেীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আপনারা অনেক উন্নত দেশে ছিলেন, অনেক ভাল সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, সেরকম হয়তো আমরা রাতারাতি দিতে পারবো না, বিনয়ের সাথে দুঃখ প্রকাশও করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সরকারের নিয়ম মেনেই আমাদেরকে সব করতে হচ্ছে। সময়মতো সব পাবেন। আপনাদের একটু ধৈর্য ধরতে হবে।

এরপর দু’দিন যেতে না যেতেই প্রয়োজনীয় সবকিছুই দেবার চেষ্টা করেছেন এখানকার দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তারা। দিনে ৫ বেলা খাবার, নিয়মিত তাপমাত্রা চেকআপ, প্রয়োজনীয় ওষধ প্রদান, মাস্ক দেয়া, সাবান, পেষ্ট, তোয়ালে, নামাযের ব্যবস্থা করা, এছাড়াও বিনোদনের জন্য টেলিভিশন, ইন্টারনেট, দাবা, লুডু , কেরামবোর্ড, তাছাড়া সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর তো রাখছেন।

এ ১৪ দিনে খুব কাছে থেকে দেখলাম, আমাদের আবেগময় মানুষের ভালোবাসা, কত আন্তরিকতা, পাশে থেকে দেখছি কেউ কথা বলছে বাবা- মার সাথে, কেউ কথা বলছে তার সন্তানের সাথে, কেউ কথা বলছে তার প্রিয়জনের সাথে। প্রতিদিন কারো না কারো আত্মীয়-স্বজন রান্না করে খাবার পাঠাচ্ছে, সেই খাবার সবাই একসাথে মিলেমিশে খাচ্ছে। সকাল হলে দেখা যাচ্ছে অনেকের আত্মীয় স্বজন একনজর দেখার জন্য হজ্জ ক্যাম্পের আশেপাশে ভিড় করছেন। বৃদ্ধ মা এসেছে তার সন্তানকে দেখার জন্য, স্ত্রী এসেছে তার স্বামীকে দেখার জন্য। অনেকেই ছাদে থেকে ২০০ গজ দূর থেকে স্বজনের সাথে হাত নেড়ে অনুভূতি প্রকাশ করছেন। একদিন দেখলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আলমগীর হোসেন ছাদে দাঁড়িয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী এবং তার মেয়ের সাথে কথা বলছেন, ওদিক থেকে মেয়ে ভিডিও কলে বাবাকে বলছে, বাবা চলে আসো, আমার কাছে আসো, আমি তোমাকে দেখতে পাচ্ছি। ৩ বছরের মেয়েটির কথা শুনে বাবা আবেগ ধরে রাখতে পারেননি, আমিও ধরে রাখতে পারেনি চোখের পানি।

এবার একটু ভিন্ন অভিজ্ঞতায় চলে আসি, ভিন্ন গল্প বলি। অত্যান্ত হৃদয়বিদারক, খুবই মর্মান্তিক, চোখের পানি আমি ধরে রাখতে পারিনি।

চীন ফেরত এক স্বামী তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বললেন, আমার জন্য একটি জায়নামায পাঠিয়ে দিও। ওদিক থেকে স্ত্রী খুব কড়া সুরে বললেন পারবে না। বুঝতে পারলাম, তাদের মাঝে হয়তো আগে থেকে মন-মালিন্য আছে বা ঝগড়া-ঝাটি হয়েছে। আমি অবাক হলাম, দু’দিন পর দেখলাম, তিনি আবার চেষ্টা করছেন স্ত্রীর সাথে কথা বলতে। কিন্তু স্ত্রী ফোন ধরছেন না। তিনি এবার মেয়ের বাবার সাথে কথা বলছেন, বাবাও দেখি ছেলেটির কোনো কথার গুরুত্ব দিলেন না, উল্টা বলে দিলেন মেয়ে ফোন ধরছে না, তুমি ফোন দিচ্ছো কেন?

এদিকে ছেলেটির এক বন্ধু তার এই মানসিক অবস্থা দেখে স্ত্রীর অফিসে ফোন দেযন এবং তার সহকর্মীকে বুঝিয়ে বলেন যে তার স্ত্রী যেন তার স্বামীর সাথে কথা বলেন। এবার স্ত্রীর ফোন এলেন ঠিকই, কিন্তু অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং জানিয়ে দিলেন সে আর সংসার করবেন না। ছেলেটির কাছে জানতে পারলাম, গত মাসেও স্ত্রীর জন্মদিনে সুদূর চীন থেকে সে তার বন্ধুকে দিয়ে আড়ং থেকে দামী জামা আর কেক কিনে স্ত্রীর অফিসে পাঠান। সেই স্ত্রী কী করে এতো নিষ্ঠুর আচরণ করতে পারে, তার ভিতর কি একটু দয়া-মায়া কাজ করলো না? স্বামী যতই খারাপ হোক না কেন, এরকম পরিস্থিতিতে কোনো স্ত্রী স্বামীর খোঁজখবর নেবে না ভাবতেই অবাক লাগে, আর কোনো শ্বশুরও এই পরিস্থিতিতে ফোন দিবেন না কেমন করে হয়? তাহলে কি ভেবে নেবো, করোনা ভাইরাস আতঙ্ক কাজ করছে তাদের মাঝে, না পারিবারিক কোন দ্বন্দ, না মেয়েটি নতুন করে স্বামী ছাড়া অন্য কোনো স্বপ্ন দেখছে? মানুষ অন্ধ হয়ে গেলে এই ভুলগুলো করে। আল্লাহ তাদের হেদায়াত দান করুক। ফিরে আসুক ছেলেটির ঘরে তার ভালোবাসার মানুষটি।

আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এত বড় মহামারি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে বাংলাদেশ সরকার আমাদেরকে রাষ্ট্রীয় খরচে অর্থাৎ ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা খরচ করে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে এসে বড় মহত্বের পরিচয় দিয়েছে। এ যেন যুদ্ধের ময়দান থেকে ৩১৪ জন সৈনিককে উদ্ধার করেছেন। এটা অনেক সম্মানের, অনেক গর্বের। ধন্যবাদ এবং বিশেষ কৃতজ্ঞতা সরকারের কাছে।

আর একটি কথা না বললেই নয়, চীন থেকে আসার পর থেকেই অনেকের ফোন আসতে থাকে, সবার একই প্রশ্ন আপনি ভালো আছেন তো। জানি সবাই ভালোবাসা ও আন্তরিকতা থেকে জানতে চায়। আবার অনেকের মাঝে ভুল ধারণাও জন্ম নিয়েছে। অনেকে মনে করছেন চীন থেকে আসা আমরা এখানে সবাই কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত। এ জন্য আমাদের কোরেন্টাইনে রাখা হয়েছে। একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, আমরা এখানে যারা আছি কেউ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত নই। চীন থেকে আসার সময় তিন জায়গায় আমাদের মেডিকেল চেকআপ করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশেও আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

এবার আসি কেন ১৪ দিন আমাদের কোরেন্টাইন এ রাখা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা আছে, এ ভাইরাসের নমুনা ধরা পড়তে কমপক্ষে ১৪ কোরেন্টাইনে রাখা প্রয়োজন। তাছাড়া বাংলাদেশ দুতাবাস ও চীন সরকারের ১৪ দিন কোরেন্টাইন রাখার চুক্তিতে আমাদের নিয়ে আসা হয়। তাই আমরা সরকারের নিয়ম মেনেই চলছি। তাই সবার কাছে অনুরোধ, নেতিবাচক মনোভাব দূর করে ইতিবাচক মনোভাব তৈরী করুন। সচেতনা বৃদ্ধি করুন। সবাই সবার পাশে থাকুন।

বাইরে থেকে অনেকেই মনে করছেন, আমরা হজ্জ ক্যাম্পে অনেক কষ্টে ছিলাম, যেন কারাগার, বন্দীজীবন। কিন্তু না মোটেই না। আমরা এখানে খুব আরামে ছিলাম, কোনো রকম কষ্ট অনুভূত হয়নি। আমরা রাষ্ট্রীয় সম্মানে ছিলাম, কোনো কিছু চাইতে না চাইতে পেয়ে যেতাম, আমার কাছে তো মনে হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে রাষ্ট্রীয় আথিতেয়তায় ছিলাম। এখানকার দায়িত্বরত সেনা ভাই ও চিকিৎসকদের অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা আমাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখার জন্য।

আগামীকাল শেষ হবে অপেক্ষার প্রহর। ফিরে যাবে সবাই তাদের পরিবারের কাছে। ছেলে ফিরে যাবে তার বাবা-মার কাছে। কোনো বাবাও হয়তো ফিরবে তার ফুটফুটে বাচ্চাটির কাছে। কোনো প্রিয়জন ফিরবে তার প্রিয়জনার কাছে। আনন্দের এক একটি অনুভূতি অপেক্ষা করছে শেষ মুহূর্তটির জন্য। যে যেখানেই ফিরি না কেন, সবাই সুস্থ থাকুক, পরিবার পরিজনের সাথে সম্পর্ক মজবুত হোক, ভালোবাসার বন্ধনে অটুট থাকুক আনন্দের মুহূর্তগুলো। পাশাপাশি আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে সচেতন হই। অন্যকে সচেতন করি। ভাইরাসটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। বেশি বেশি পেপার পড়ি ও টিভি নিউজ দেখি। বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করি। অহেতুক বিভ্রান্তি না ছড়াই।

আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এই ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হয়নি। ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের অবস্থা ভয়াবহ। আজ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫২৪ এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬,৫৭৮। আমরা প্রার্থনা করি আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক। পাশাপাশি চীন দেশের জন্যও আমরা দোয়া করি। খুব দ্রুত কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ করুক। একটা কথা মনে রাখবেন সৃষ্টির আদিকাল থেকেই মহামারীর রোগের প্রচলন। তাই আমরা কোন দেশকে ছোট করে না দেখি , কোনো জাতিকে খারাপ চোখে না দেখি। মনে রাখবেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভালো থাকলে আমরাও ভালো থাকবো। তাই শুভ কামনা হোক সবার জন্যই।

ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে, যার নির্দেশনায় এবং প্রচেষ্টায় ৩১২ জন বাংলাদেশীকে উহান থেকে দ্রুত ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই চীনের বাংলাদেশ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সার্বিক সহযোগিতার জন্য। ধন্যবাদ বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রালয়ের কর্তৃপক্ষকে। ধন্যবাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং হজ্জ ক্যাম্পের দায়িত্ব পালনরত সকলকে। কৃতজ্ঞতা দেশবাসীর কাছে দোয়া করার জন্য এবং ধন্যবাদ মিডিয়ায় সাংবাদিক বন্ধুদের উহানে আটকে পরা বাংলাদেশেীদের খবর সুন্দরভাবে তুলে ধরার জন্য ও সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরো একটি অনুরোধ রাখবো, উহানের আশেপাশের শহরগুলোতে এখনো ৩০০ শ'-এর মতো বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রী আটকা পড়ে আছে। অবস্থা খুবই করুন, আতঙ্ক আর শূন্যতায় দিন পার করছে। তারা ফিরে আসতে চায়। আশা করি খুব দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

চীন সরকারের কাছে আমার বিশেষ কৃতজ্ঞতা, কোভিড-১৯ মহামারীর সংকট মুহুর্তে যখন নিজের দেশের মানুষকেই বাচাতে পারছেন না। প্রতিদিন লাশের পর লাশ গুনতে হচ্ছে। সেই মুহূর্তে আমাদের মতো বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষ নজর ও দেখভাল করা এবং আমাদেরকে বাংলাদেশে পৌছানোর ব্যবস্থা করা এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য। আমি আশা করি চীন সরকারের যে প্রচেষ্টা তাতে দ্রুত এই কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে।

ইমশিয়াত শরীফ
পিএইচ ডি গবেষক
১৫-০২-২০২০
ফোন: 01911316980
email: imshi8@yahoo.com
* লেখকের ফেসবুক পোস্ট থেকে

 


আরো সংবাদ



premium cement