‘গ্রহত্ব' হারিয়েও আকর্ষণীয় থেকে গেছে প্লুটো
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ জুন ২০২০, ২০:১১, আপডেট: ০৯ জুন ২০২০, ২০:০৪
ছিল গ্রহ, আচমকা মর্যাদা হারিয়ে ‘বামন গ্রহ’ হয়ে উঠলো। সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে প্লুটোর ঠিক সেই দশা হয়েছে। বাকি সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও গ্রহ হিসেবে আর স্বীকৃতি পাচ্ছে না সৌরজগতের সবচেয়ে দূরের এই বস্তু।
বেচারা প্লুটো কেন গ্রহের মর্যাদা হারিয়ে ফেললো? অনেক দশক ধরে আমাদের সৌরজগতের নবম গ্রহ হিসেবে পরিচিত ছিল প্লুটো। বহু দূর থেকে সেটি আমাদের সূর্য প্রদক্ষিণ করে চলে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌরজগতের সবচেয়ে ছোট গ্রহ হিসেবে প্লুটোর স্বীকৃতি ছিল।
কিন্তু প্রাগ শহরে আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা সংগঠনের সম্মেলনে গ্রহ হিসেবে প্লুটোর মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মানুষ এই সিদ্ধান্তের ফলে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। কারণ ১৯৩০ সালে মার্কিন বিজ্ঞানী ক্লাইড টম্বো প্লুটো আবিষ্কার করেছিলেন। জ্যোতির্বিদ্যার ইতিহাসে একমাত্র গ্রহ আবিষ্কারের কৃত্বিত্ব হারিয়ে ফেললো অ্যামেরিকা।
এমনকি ‘নিউ হোরাইজন্স' নামের মহাকাশযানও প্লুটোর অধঃপতন রুখতে পারলো না। ২০১৫ সালে এই যান কাছ থেকে প্লুটোর অসাধারণ সব ছবি তোলে। তাতে অত্যন্ত জটিল কাঠামো, তিন হাজার মিটারেরও বেশি উঁচু বরফের পাহাড় চোখে পড়ে। সেখানে সম্ভবত বরফের আগ্নেয়গিরিও রয়েছে। দূরের এই গ্রহের এমনকি নিজস্ব বায়ুমণ্ডলও রয়েছে। তাহলে গ্রহ হিসেবে কেন স্বীকৃতি হারালো প্লুটো?
কারণ সেটিও তো বাকি গ্রহের মতো সূর্য প্রদক্ষিণ করে। তবে গ্রহ হবার প্রধান শর্তই যে পূরণ করে না প্লুটো। গ্রহ হতে হলে বিবর্তনের সময় আশেপাশের সব উপাদান খালি করে নিজস্ব কক্ষপথে সবচেয়ে প্রভাবশালী মহাজাগতিক বস্তু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের পৃথিবীসহ সৌরজগতের বাকি গ্রহগুলি সেই শর্ত পূরণ করে। কিন্তু প্লুটো সেই কাজে সফল হয়নি।
একেবারে বাইরের প্রান্তে প্লুটোর কক্ষপথে আরও অনেক মহাজাগতিক বস্তু রয়েছে। এমনকি সেগুলির মধ্যে কয়েকটি প্লুটোরই মতো! যেমন ২০০৫ সালে এরিস নামের বরফে ঢাকা একটি বস্তুর খোঁজ পাওয়া যায়। সেটির কারণেই বাকি সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও বছরখানেক পর প্লুটো গ্রহের মর্যাদা হারায়।
বিবর্তনের সময় প্লুটো এত পরিমাণ উপাদান সংগ্রহ করেছে, যে সেটির আকার গোল হয়ে উঠেছে। ফলে এই মহাজাগতিক বস্তুকে এখন ‘বামন গ্রহ’ বলা হয়। তবে মর্যাদা যাই হোক না কেন, প্লুটোর অসাধারণ জগতের আকর্ষণ কম নয়। ডয়চে ভেলে