১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পবিত্র কোরআনে কারিম যেভাবে বিন্যস্ত হয়

পবিত্র কোরআন যেভাবে বিন্যস্ত হয় - প্রতীকী ছবি।

আয়াত বিন্যাস
পবিত্র কোরআনুল কারিমের প্রতিটি আয়াত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। অনুরূপ এর ক্রমবিন্যাসও তাঁর-ই নির্দেশনায় সাজানো। সব যুগের হক্কানি উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী পণ্ডিতরা এই বিষয়ে অভিন্ন মত পোষণ করেন। তারা এও বলেন, আমাদের সামনে কোরআনে কারিমের যে প্রতিলিপি বিদ্যমান-তাতে কারো ইজতিহাদ ও নিজস্ব মতামত প্রদানের সুযোগ নেই।

উম্মাহ এ ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করে যে কোরআনের এই নুসখার প্রতিটি আয়াত রাসূল সা:-এর প্রত্যক্ষ ইশারায় বিন্যস্ত হয়েছে। পবিত্র কোরআন, সুন্নাহ, হাদিস ও সাহাবাদের কথাবার্তায় এ বিষয়টি সুপ্রাণিত। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি এটা অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায় কোরআনরূপে, যাতে তোমরা বুঝতে পার। আমার কাছে তা উম্মুল কিতাবে (লাওহে মাহফুজে) সংরক্ষিত আছে, আর তা হলো অতি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন জ্ঞান-বিজ্ঞানে পূর্ণ।’ (সূরা জুখরুফ, আয়াত : ৩-৪)

সুতরাং পবিত্র কোরআন আজও ঠিক সেভাবে সংরক্ষিত আছে যেভাবে সংরক্ষিত আছে লওহে মাহফুজে এবং আল মালাইকাতুল মুকাররবিন তথা নৈকট্যশীল ফেরেশতাদের হাতে।

সূরা বিন্যাস
সুরার বিন্যাস নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। কেউ বলেন, পবিত্র কোরআনের প্রতিটি সূরাও আয়াতের মতোই অপরিবর্তীতভাবে বিন্যস্ত। এই মত ব্যক্ত করেছেন আল আমবারি, আবু জাফর আন নুহাস রহ: প্রমুখ।

অন্যদিকে আস সুয়ুতি রহ: জুমহুর ও বেশিসংখ্যক আলেমের অভিমত উদ্ধৃত করে লিখেছেন, সাহাবায়ে কেরাম রা: মতামতের ভিত্তিতে সুরার বিন্যাস করেছেন; যেই আলেমদের মধ্যে ইমাম মালিক রহ:-এর নামও রয়েছে। এ দুই পক্ষ ছাড়াও একটি দল আছে, যারা বলে, পবিত্র কোরআনের বেশির ভাগ সূরা অপরিবর্তীতভাবে বিন্যস্ত এবং অল্প কিছুসংখ্যক সুরা সাহাবায়ে কেরাম রা: মতামতের ভিত্তিতে বিন্যাস করেছেন।

পারার বিন্যাস
কোরআনের মোট ৩০ পারা (অংশ) আছে। এ ব্যাপারে সবাই একমত যে পারার বিন্যাস মতামতের ওপর ভিত্তি করেই সাজানো হয়েছে। এজন্য একেক রকম নুসখা ও প্রতিলিপিতে পারার বিন্যাস ভিন্ন ভিন্ন পরিলক্ষিত হয়।

সংখ্যা ও পরিমাণ নির্দিষ্ট করতে এবং হিসাবের সহজার্থে নিজেদের সুবিধামতো বিশেষজ্ঞরা পারা সাজিয়েছেন। কেননা পারার বিন্যাসে শরিয়তে কোনো নির্দেশনা বা হুকুম করা হয়নি।

আয়াত অবতীর্ণের বিন্যাস
কোরআনে যে সিরিয়ালে আয়াত ও সুরা বিন্যস্ত, এভাবে একের পর এক আয়াত নাজিল হয়নি; বরং প্রেক্ষাপট ও প্রয়োজন অনুসারে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দা ও রাসূল মোহাম্মদ সা:-এর ওপর প্রাসঙ্গিক আয়াত অবতীর্ণ করেন। দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুয়তি জীবনে মক্কা ও মদিনায় পুরো ৩০ পারার ১১৪টি সুরা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর কাছে ওহির মাধ্যমে নিয়ে আসেন হজরত জিবরাইল আ:। পরে তাঁর-ই নির্দেশমতো সাহাবায়ে কেরাম লওহে মাহফুজের মূল কোরআনের সাথে মিলিয়ে আমাদের সামনে প্রচলিত কোরআনের এ প্রতিলিপি প্রস্তুত করেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক জ্ঞানার্জনের তাওফিক দান করেন। আমিন।

-আল মাওদু অবলম্বনে


আরো সংবাদ



premium cement