২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মারকাযুদ দিরাসায় ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে পরীক্ষা, সর্বমহলে প্রশংসিত

মারকাযুদ দিরাসায় ব্যতিক্রমী পদ্ধতিতে পরীক্ষা, সর্বমহলে প্রশংসিত - ছবি : সংগৃহীত

সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থায় পদ্ধতিটির প্রচলন থাকলেও বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলোতে এটি বেশ অপরিচিত। এবার সেই অপরিচিতি দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজধানীর প্রসিদ্ধ ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দিরাসাহ আল ইসলামিয়্যাহ ঢাকা। প্রতিষ্ঠানটির দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় ওই পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হচ্ছে। তা হলো- এখানে প্রতিটি পরীক্ষার মাঝে অন্তত একদিন করে বিরতি দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রস্তুতিমূলকভাবে এই পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠানটির পরীক্ষা শুরু হয়। এই পদ্ধতি অনুসৃত হয় ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দে। তবে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোতে তা বেশ অপরিচিত।

সাধারণত কওমি মাদরাসাগুলোতে উল্লেখযোগ্য কোনো বিরতি ছাড়াই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দেখা যায়- পুরো এক সপ্তাহ যাবত পরীক্ষা হয় এবং এর আগের সপ্তাহ থাকে পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক পড়াশোর জন্য অবকাশ, যেটাকে ‘খেয়ার’ আখ্যা দেয়া হয়। অর্থাৎ দুই সপ্তাহ কিংবা আরেকটু বেশি সময় পরীক্ষার জন্য মাদরাসাগুলোর ক্লাস বন্ধ রাখা হয়।

মারকাযুদ দিরাসায়ও পরীক্ষাকালীন অবকাশ দুই সপ্তাহের মতোই। তবে অন্য মাদরাসাগুলোতে যেমন পরীক্ষার আগে টানা এক সপ্তাহ খেয়ার থাকে এবং একই নিয়মে টানা এক সপ্তাহ পরীক্ষা চলে। এখানে সেটা না করে প্রথম দু’দিন খেয়ারের পরই প্রথম পরীক্ষা শুরু হয়েছে। পরে পুরো দুই সপ্তাহজুড়ে বিরতি দিয়ে দিয়ে পরীক্ষাগুলো শেষ হবে।

এই পদ্ধতির সুবিধা কী- জানতে চেয়েছিলাম সেখানকার মুহতামিম মুফতী মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমীর কাছে। নয়া দিগন্তকে তিনি বললেন, আসলে কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে আমরা পদ্ধতিটি চালু করেছি। প্রথমত, বিরতিহীন টানা পরীক্ষা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। বেশি পড়াশোনার কারণে এটা হয়। কিন্তু পরীক্ষার মাঝে যদি বিরতি থাকে, তাহলে তারা বিশ্রাম নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারে- এতে তাদের দু’টি সুবিধা; তারা সুস্থ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে এবং বিষয়ভিত্তিক কিতাবগুলোর পড়াটা আরো জোরালো হয়।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি বলেন, লাগাতার খেয়ারে সাধরণত ছাত্ররা মনে করে- সামনে অনেক সময়। এই চিন্তা করতে করতেই বেশ সময় নষ্ট করে ফেলে। এছাড়া বার্ষিক বা কেন্দ্রীয় পরীক্ষার আগে দীর্ঘ সময় খেয়ার থাকলে খেয়ারের শুরুর দিকের পড়াগুলো পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত অনেক কিছু ভুলে যায়।

মুফতী মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমী বলেন, সর্বোপরি লাগাতার বিরতির পরে প্রতিদিন পরীক্ষার পরিবর্তে দুই পরীক্ষার মাঝে বিরতি দিয়ে দিয়ে পরীক্ষা নিলে আশা করি ছাত্রদের প্রস্তুতি, পড়াশোনা, শারিরীক সুস্থতা ছাড়াও ইতিবাচক আরো অনেক ভালো ফলাফল বয়ে আনবে ইনশাআল্লাহ। এজন্য সবার দোয়া কামনা করছি।

এদিকে ব্যতিক্রমী পদ্ধতিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করার পরপরই অনলাইনে সক্রিয়রা বিষয়টির প্রশংসা করেন। অনেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে এই পদ্ধতি চালু করার কথাও জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement