২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওজু করে ঘোমাতে যাওয়া শিশুদের গল্প

ওজু করে ঘোমাতে যাওয়া শিশুদের গল্প - প্রতীকী ছবি

কিতাব খুঁজতে মাদরাসার মাকতাবায় গিয়েছিলাম। নাজেরার তালিবে ইলমরা পাশে শুয়ে ঘোমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। নাজেরার জিম্মাদার উস্তাদ হেঁটে হেঁটে বলছিলেন, ‘এই, সবাই ওজু করেছো তো?’
সবাই বললো, জী!
হুজুর বললেন, ‘সবসময় ওজু করে শুবে। ঘুমের দোয়া, দরুদ শরীফ পড়তে পড়তে ঘুমাবা। তাহলে একদিন আল্লাহর রাসূল সা:-কে স্বপ্নে দেখতে পারবা ইনশাআল্লাহ!’
একজনকে দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘তোমার জামা ময়লা হয়ে আছে। কাল নতুন জামা পরবে, কেমন? পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ।’

আল্লাহু আকবার! কী সুন্দর তরবিয়ত!
আরেকদিন দেখি খাবারের সময় উনি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খাবার বণ্টন তদারকি করছেন। খাবারের আদব শিখিয়ে দেন। খাবারের দোয়া পড়তে হবে, খাবারকে সম্মান করতে হবে, ঝুটা নির্দিষ্ট পাত্রে ফেলতে হবে- একেবারে হাতে ধরিয়ে ধরিয়ে শেখাচ্ছেন।

আমরাও এমন তারবিয়ত পেয়েছি মকতব-হিফজখানায়। আসরের পর হুজুররা আমাদের সাথে খেলতেন। হুযুর বল করতেন, আমরা ব্যাটিং নিয়ে কাড়াকাড়ি করতাম। খেলা শেষে সবাইকে হাত-পা ধোয়ার তদারকি করতেন। একদিন মাগরিবের আজান হয়ে গেছে, বড় হাফেজ সাহেব হুজুর খেয়াল করলেন আমার পায়ে এখনো ময়লা লেগে আছে। হুজুর আমাকেও বকলেন, আমার বড় ভাইও তখন হিফজ পড়তো, তাকেও বকলেন, বললেন, ‘ছোট ভাইয়ের দিকে খেয়াল রাখো না!’

আমার মকতব-হিফজখানার উস্তাদদের শফকতের (স্নেহের) বিবরণ দিতে গেলে একটা ছোট বই লিখে ফেলতে পারবো- এই পরিমাণ রসদ আছে! আমার পরিচিত-অপরিচিত ফেসবুকের হাফেজ বন্ধুদেরও এমন অনেক মধুর স্মৃতি আছে। অথচ কেউ কেউ আমাদের হিফজের এই কোমলসুন্দর বাগানকে জনসম্মুখে পরিকল্পিতভাবে কলুষিত করার পায়তারা করছে। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।

লেখক : শিক্ষক-জামিয়া আরাবিয়া বাইতুস সালাম, উত্তরা, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement