২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মোহাম্মদ নামের শ্রেষ্ঠত্ব

মোহাম্মদ নামের শ্রেষ্ঠত্ব - ছবি : সংগৃহীত

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মোহাম্মদ সা:। তিনি শুধু ইসলাম মুসলিমদের কাছেই নয়; বরং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তার ‘মোহাম্মদ’ নামের বিশেষ শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। তাঁর এই নাম পৃথিবীর অনাদি অনন্তকাল ধরে উজ্জীবিত থাকবে, সেটাই বাস্তব সত্য।

‘মোহাম্মদ’ নামটি মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশ ও এর আশপাশ অঞ্চলের মানুষের নামের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। এমনকি ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশেও এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যেও মোহাম্মদ নাম সবচেয়ে জনপ্রিয়, অথচ সেটি মুসলিম রাষ্ট্র নয়।

প্যারেন্টিং ও প্রেগনেন্সি ওয়েবসাইট বেবি সেন্টার এক জরিপে দাবি করেছে যে যুক্তরাজ্যে ছেলেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম হচ্ছে ‘মোহাম্মদ'। - (দ্য গার্ডিয়ানের সূত্রে ঢাকা টাইমস, ৩-১২-১৪ ইং) ইসলাম ধর্মেও এ মহিমান্বিত নামের বিশেষ গুরুত্বের কথা বলা হয়েছে।

আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার গর্ভবতী স্ত্রীর গর্ভের সন্তানের নাম ‘মোহাম্মদ' রাখার সিদ্ধান্ত নেবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে পুত্র সন্তান দান করবেন। আর যে ঘরে ‘মোহাম্মদ' নামের কোনো ব্যক্তি থাকবে, আল্লাহ তায়ালা সব সময় সে ঘরে বরকত অব্যাহত রাখবেন।’ (ফাজায়েলুত্তাসমিয়া বি-আহমদ ওয়া মোহাম্মদ)

মহানবী সা: আরো বলেন, ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের নাম ‘মোহাম্মদ' রেখে তাকে গালি দিও না।’ (হাকেম, হা. ৭৭৯৫)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘রাসূল সা: ইরশাদ করেন, প্রত্যেক জান্নাতীকে তার নামেই ডাকা হবে। তবে হজরত আদম আ:-কে আবু মোহাম্মদ বলে ডাকা হবে।’ (সিফাতুল জান্নাহ, আবু নুআঈম)

হজরত ইবনে ওয়াহাব বলেন, ‘আমি নিজের সাতটি সন্তানের নাম গর্ভাবস্থায়ই মোহাম্মদ রাখার নিয়ত করেছি, এর বরকতে সব সন্তানই ছেলে হয়েছে।’ (কাশফুল গুম্মাহ ১/২৮৩)

ইমাম মালেক রহ: বলেন, ‘যে ঘরেই মোহাম্মদ নামের কোনো ব্যক্তি থাকবে তাতে বরকত ছড়াতে থাকবে।’ (ফয়জুল ক্বদীর-৫/৪৫৩)

হজরত আবদুর রহমান ইবনে আবী লায়লা রহ: বর্ণনা করেন, আমিরুল মু'মিনীন হজরত ওমর রা: আবু আবদুল হামীদের দিকে তাকালেন, যার নাম মোহাম্মদ ছিল। এমতাবস্থায় অন্য এক ব্যক্তি মোহাম্মদকে গালাগাল করছিল। তখন আমিরুল মুমিনীন বললেন, হে ইবনে যায়েদ, এদিকে আসো! এবং বললেন, আমি দেখছি যে, তোমার নাম মোহাম্মদ হওয়ায় আমাদের সরদার হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে গালি দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালার কসম! যতদিন আমি জীবিত আছি, আজ থেকে যেন তোমাকে আর মোহাম্মদ নামে না ডাকা হয়। অতঃপর তার নাম আব্দুর রহমান রাখলেন। এরপর তালহার সন্তানদের ডেকে পাঠালেন, তাদের সংখ্যা তখন সাতজন ছিল। যাদের বড়জনের নাম মোহাম্মদ ছিল- এ উদ্দেশে যে তারা যেন তাদের মোহাম্মদ নাম পরিবর্তন করে নেয়। মোহাম্মদ ইবনে তালহা তখন বললেন, আল্লাহর শপথ! আপনি এ কী করছেন? স্বয়ং নবী করিম সা: আমার নাম মোহাম্মদ রেখেছেন। এতে হজরত ওমর রা: বললেন, যখন রাসূল সা: নিজেই এ নাম রেখেছেন, তাহলে তো আমার কোনো পথ নেই। (মুসনাদে আহমাদ ৪/২১৬)

সুতরাং আলোচ্য ঘটনায় এ কথাই প্রমাণিত হয় যে, মোহাম্মদ নামের কাউকে গালি দেয়া সাহাবায়ে কেরামও অত্যন্ত অপছন্দ করতেন, এই নামের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শ্রদ্ধা করার অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তায়ালা এই নামকে তাঁর পবিত্র নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছেন, যেমন আমরা আজান, কালেমায়ে তাইয়েবা ইত্যাদিতে দেখতে পাই। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি আপনার আলোচনাকে সমুন্নত করেছি।’ (সূরা ইনশিরাহ, আয়াত ৪)


আরো সংবাদ



premium cement