২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রবের সান্নিধ্য লাভের উপায় হজ-কোরবানি

রবের সান্নিধ্য লাভের উপায় হজ-কোরবানি - ছবি : সংগৃহীত

হিজরি জিলহজ মাসের আজ পঞ্চম দিন। বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতিতে সীমিত পরিসরে সৌদি আরবে অবস্থানরত দেশ-বিদেশের নির্ধারিত সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলিম এ বছরের হজ পালনের সৌভাগ্য লাভ করছেন।

মহান আল্লাহর সান্নিধ্য ও সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম মাধ্যম পবিত্র হজ ও কোরবানি। মহান আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য ও করুণা লাভের তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে হজ পালনের জন্য, কাবার সান্নিধ্য লাভের অভিপ্রায়ে সারা বিশ্ব থেকে ছুটে যান মুসলমানরা। তবে করোনা মহামারীর কারণে বিগত দু’বছর সেটি আর সম্ভব হচ্ছে না।

হজ ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের একটি। মুসলমানদের কেন্দ্রবিন্দু মক্কায় বায়তুল্লাহ জিয়ারত, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানসহ আনুষঙ্গিক আরো কিছু কাজের মধ্য দিয়ে হজ পালিত হয়। বিত্তবান ও শারীরিক সামর্থ্যবান মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ এবং প্রতি বছর কোরবানি দেয়া ওয়াজিব। হজের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- ‘আল্লাহর উদ্দেশে বায়তুল্লাহর হজ করা ফরজ ওই সব লোকের ওপর, যাদের সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।’ মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের দিনকে হজের দিন বলা হয়। যদিও এর আগে ও পরে কাবাঘর তাওয়াফসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কিছু কাজও রয়েছে। ১০ জিলহজ মিনায় কঙ্কর নিক্ষেপ ও কোরবানি করেন হজ পালনকারীরা।

হজ কার ওপর ফরজ : নেসাব পরিমাণ মালের অধিকারীর ওপর যেমন জাকাত ফরজ, তেমনি হজে যাওয়ার আর্থিক ও শারীরিক ক্ষমতা রাখেন এমন প্রাপ্তবয়স্ক স্বাধীন মুসলমানের ওপর একবার হজ করা ফরজ। নামাজ, রোজার মতো সবার ওপর হজ ফরজ নয়।

ইসলামী বিশেষজ্ঞরা হজ ফরজ হওয়ার ৮টি শর্তের উল্লেখ করেছেন :

১. মুসলমান হতে হবে। যেহেতু এটি ইসলামের একটি মৌলিক ইবাদত।

২. স্বাধীন হতে হবে। তাই দাস-দাসীর ওপর হজ ফরজ নয়। এ ব্যাপারে রাসূল সা:-এর হাদিস রয়েছে। তিনি বলেছেন, কোনো দাস-দাসী যদি হজ করে এবং সেটি যদি সে ১০ বারও করে তার পর সে যখন মুক্তি পায় তাকে আবার হজ করতে হবে। তবে আমাদের দেশের প্রচলিত কর্মচারী কিংবা চাকররা দাসের পর্যায়ে পড়বেন না বলে আলেমদের অভিমত।

৩. ব্যক্তি শরিয়তের বিধান প্রয়োগযোগ্য বা প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। বালক-বালিকার ওপর হজ ফরজ নয়। এ ব্যাপারেও হাদিস রয়েছে। ইবনে আব্বাস রা:-এর বর্ণনায় এসেছে কোনো বালক-বালিকা হজ পালন করার পর প্রাপ্তবয়স্ক হলে তাকে আবার হজ করতে হবে।

৪. সুস্থ হতে হবে। রুগ্ণ ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ নয়।

৫. সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন হতে হবে। যেমন হাদিসে এসেছে তিন ধরনের লোকের ওপর শরিয়তের বিধান প্রযোজ্য হবে না; বালক যতক্ষণ না প্রাপ্তবয়স্ক হয়, অসুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন যতক্ষণ না সে সুস্থ জ্ঞানে ফিরে এবং ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়।

৬. সামর্থ্যবান হওয়া। হজ করে ফেরা পর্যন্ত পরিবারের ভরণ-পোষণের ব্যয় নির্বাহ করার মতো অতিরিক্ত টাকা থাকলে এবং সে টাকায় হজের ব্যয় বহন করা গেলে তবেই হজ ফরজ হবে। কারণ পবিত্র কুরআনে পরিষ্কারভাবে সামর্থ্য থাকার কথা বলা হয়েছে।

৭. হজে যাওয়ার রাস্তা নিরাপদ হওয়া। যাত্রাপথে বিপদ হতে পারে এমন ব্যক্তির ওপর হজ ফরজ নয়।

৮. নারীর সাথে তার স্বামী বা মুহরিম (যাদের সাথে বিবাহ বৈধ নয়) থাকা। যদি তার ওপর মুসাফিরের হুকুম প্রযোজ্য হয় অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা তার বেশি দূরে হয়। সম্মিলিতভাবে এসব শর্ত পাওয়া গেলেই হজ ফরজ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement