২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবন ও হতাশা

জীবন ও হতাশা - সালমা বিনতে শামছ - ফাইল ছবি

একবিংশ শতাব্দীতে এসে আজকের দিনে বহুল প্রচলিত শব্দ হলো হতাশা। যাকে আমরা আপডেট ভার্সনে বলি ‘ডিপ্রেশন’। জীবন প্রবহমান একটি যাত্রা, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের দুনিয়াতে পাঠানোর পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সময়টুকু গতিশীল করে দিয়েছেন। শিশু থেকে আমরা বৃদ্ধতে পরিণত হই এবং একটা সময় আমাদের গতিশীল এই জীবনের যবনিকা ঘটে।

ক্ষণস্থায়ী এই সময়টুকুতে আমাদের জীবনে যোগ হয় পাওয়া-না পাওয়া, হারানো-হেরে যাওয়া। সর্বসাকুল্যে ব্যর্থতার বহিরূপ ‘হতাশা’। অথচ একজন মুমিনের জীবনে ‘হতাশা’ নামক কোনো শব্দ নেই। এটি নিতান্ত ভীরু এবং দুর্বল চিত্তের মানুষের অনুভূতি। একজন সাহসী, ধৈর্যবান মুমিনকে হতাশা কখনো গ্রাস করতে পারে না। কারণ সফলতা সবচেয়ে বড় বাধার নাম ‘হতাশা’।

হতাশাগ্রস্ত মানুষ আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়, হতাশ না হয়ে যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে, সে সর্বদা ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়। আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা বলেছেন, ‘বলুন, হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর জুুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সূরা জুুমার, আয়াত-৫৩)। আমরা অনেক সময় হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভাবি ‘আল্লাহ আমার ওপর এত বড় বিপদ কেন দিলো? আমি কী পাপ করেছি? এত দুঃখ-কষ্ট কেন আমার?’

মূলত আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দাদের দুঃখ-কষ্টের মাধ্যমে পরীক্ষা নেন। আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব সামান্য ভয় ও ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফসলের কিছুটা ক্ষতি দিয়ে; আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও যাদের ওপর কোনো মুসিবত এলে বলে, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর আর অবশ্যই আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাবো। (সূরা বাকারা (২) : ১৫৫-১৫৬)।

আর মহান আল্লাহ এটাও সরাসরি বলে দিয়েছেন, ‘নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে’ (সূরা আলাম নাশরাহ, আয়াত-৬)। এরপরও আমরা যদি হতাশা নামক বোঝাকে স্বেচ্ছায় বহন করে বেড়াই, তবে দুর্দশা বৈকি সফলতা আসবে না।

আর তাই নির্র্দ্বিধায় বলা যায়, হতাশাগ্রস্তদের জন্য রয়েছে দুর্ভোগ। আল্লাহ তার বান্দাদের সাধ্যাতীত কোনো কিছু চাপিয়ে দেন না। যে যতটুকু বহন করার ক্ষমতা রাখে ঠিক ততটুকুই আল্লাহ তার ওপর তা অর্পণ করেন। সেটা সুখ-দুঃখ, সাফল্য, অর্থ-সম্পদ যেকোনো কিছুই হতে পারে।

‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোনো কাজের ভার দেন না’ (সূরা বাকারা, আয়াত-২৮৬)। ‘হতাশা’ একজন মুমিন বান্দাকে আল্লাহবিমুখ করে দেয়। আল্লাহকে স্মরণ, ইবাদত এসব কিছুকে থমকে দেয় হতাশা নামক অর্থহীন অনুভূতি।

মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী, ছোট্ট এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে বিপদ-আপদ, মুসিবত থাকবে, এটা চিরন্তন সত্য। একটা মানুষ কখনোই পরিপূর্ণ সুখ ও শান্তিতে জীবন কাটায় না। দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অনটন, ব্যর্থতা এসব থাকবেই।
এরপরও একজন আল্লাহর প্রকৃত বান্দার উচিত সর্বদা ধৈর্য ধারণ করা, হতাশাকে প্রশ্রয় না দেয়া। মহান আল্লাহর দরবারে বারবার ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং সাহায্য চাওয়া। আমরা মানুষ কোনো কিছুতে ব্যর্থ হয়ে হতাশাকে স্বাগত জানাই। তারপর সেই হতাশা কাটাতে জনে জনের দ্বারস্থ হই ; সাহায্য বা মোটিভেট পাওয়ার জন্য। অথচ দুনিয়ার বাদশা মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে সাহায্য চাইতে বেমালুম ভুলে যাই।

‘যে আল্লাহ আমার অন্তরে হতাশার জন্ম দিয়েছেন। সেই আল্লাহর কাছে দয়া এবং রহমত কামনা করে হতাশা দূরীভূত করি’ এটাই একজন আল্লাহর বান্দার বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত।
আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুক। আমীন

লেখিকা : শিক্ষার্থী


আরো সংবাদ



premium cement
গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ছেলে হারা মা সাথিয়ার কান্না যেন থামছেই না বৃষ্টির জন্য নারায়ণগঞ্জে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় প্রবাসী স্ত্রী থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায়, ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটারের তালিকা চান হাইকোর্ট আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরো ৪৬ বিজিপি সদস্য উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কক্সবাজারে ট্রেন লাইনচ্যুত, যোগাযোগ বন্ধ

সকল