১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
অতিরিক্ত হাসিল আাদায়

রংপুরের বেতগাড়ি হাটের ইজারাদারকে কালো তালিকাভূক্ত

রংপুরের বেতগাড়ি হাটের ইজারাদারকে কালো তালিকাভূক্ত, ১ লাখ টাকা জরিমানা - ছবি : নয়া দিগন্ত

গরুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায় করায় রংপুরের গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি হাটের ইজারাদার স্বপনকে কালোতালিকাভূক্ত এবং ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় ওই হাটে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা ও কালো তালিকার সিদ্ধান্ত জানান ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধা।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৃধা জানান, বেতগাড়ি হাটে প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইজারাদার স্বপন সিন্ডিকেট প্রতি গরুতে ক্রেতার কাছ থেকে ৫০০ টাকার বদলে ১ হাজার টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে টাকা নেয়ার নিয়ম না থাকলেও ৫০০ টাকা জোড় করে আদায় করছিলেন। কিন্তু এর বিপরীতে কোনো রশিদ দিচ্ছিলেন না। এছাড়াও প্রতি ছাগলে ক্রেতার কাছ থেকে ১৫০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা এবং বিক্রেতার কাছ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করছিলেন। কিন্ত রশিদ দিচ্ছিলেন না। বিষয়টি আমরা হাতেনাতে ধরে ফেলি। এছাড়াও হাটের কোথাও হাসিলের মূল্য তালিকা টানাননি তিনি। মাইকিংয়েরও ব্যবস্থা করেননি। অর্থাৎ এমনভাবে জিম্মি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে আদায় করছিলেন তার নিযুক্ত প্রতিনিধিরা। যা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর আইন-২০০৯ এর ৩৯ এবং ৪০ এর ধারায় অপরাধ।

পরে ইজারাদার স্বপনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ১ লাখ টাকা জরিমানা দেয়ায় সাজা মওকুফ করা হয়েছে। ইজারাদারের পক্ষে তার অংশিদার এনামুল হক আর এ ধরনের কাজে যুক্ত হবেন না মর্মে মুচলেকাও দেন। এ সময় সেখানে বেতগাড়ি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাইমিনুল ইসলাম মারুফ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।

ম্যাজিষ্ট্রেট মৃধা জানান, ওই ইজারাদারকে কালো তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন ইজারা না পান সেটি দেখবে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও বুড়িরহাটের ইজারাদেরর বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, গরুর হাটগুলোতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। যেখানেই হাসিল বেশি নেয়ার প্রমাণ পাওয়া যাবে সেখানেই জরিমানাসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইজারাদার স্বপন হাটে থাকলেও ভ্রাম্যমান আদালতের কাছে আসেননি। তার প্রতিনিধি এনামুল হক জানিয়েছেন, আমরা মুচলেকা দিয়েছি। এ ধরনের কোনো কাজ আর করবো না।

কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচার কার্যক্রম চললেও হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায় অব্যাহত ছিল। ভ্রাম্যমান আদালতের বিষয়টি হাটের প্রচারই হয়নি।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের দফতর সূত্রে জানা গেছে, বিভাগের ৮ জেলার ১ হাজার ৩০৩ টি স্থায়ী এবং তিন শতাধিক গরুর হাট বসেছে।

হাটের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইজারাদার সিন্ডিকেট সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত হাসিল আদায় করছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ কেতা ও বিক্রেতারা। প্রশাসনের চোখের সামনে এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলেও ব্যবস্থা নেয়ার খুব একটা নজির দেখা যায় না।


আরো সংবাদ



premium cement