১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রংপুরে এমপি’র বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার অভিযোগ

রংপুরে এমপি’র বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণার অভিযোগ - ছবি : সংগৃহীত

রংপুরেরর গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাচনে স্থাণীয় এমপির বিরুদ্ধে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণার অংশ নেয়ার অভিযোগ এনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী। এমপির ভোট প্রার্থনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দেয়া ঘোড়া প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী (বিএনপি থেকে সাময়িক বহিষ্কৃত) মোকাররম হোসেন সুজন অভিযোগ করেন, স্থানীয় এমপি আসাদুজ্জামান বাবলু চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাপ পিরিচ প্রতিকের রুহুল আমিনের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণায় অংশ নিয়ে নির্বাচিত করার আহবান জানাচ্ছেন। এতে ভীতির পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোটদানে অনাগ্রহ ও ভোট থেকে বিরত থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

লিখিত অভিযোগে এ বিষয়ে ওই এমপি, তার প্রতিনিধি ও সমর্থকদের নির্বাচনে সম্পৃক্ততা ও অনৈতিক প্রভাববিস্তার থেকে বিরত রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে স্থানীয় এমপি আসাদুজ্জামান বাবলু জানান, ‘আমি কারো পক্ষেই নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেইনি। যিনি অভিযোগ করছেন তিনি বিএনপি জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তিনি এ ধরণের অভিযোগ তুলেছেন। এটা আদৌ সত্য নয়। ভোটের দিনই এরা আবার বলবে ভোট সুষ্ঠু হয়নি, এই বলে নির্বাচন বয়কট করবে। এটা বিএনপি-জামায়াতের চরিত্র। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভোট প্রভাবমুক্ত ও সুষ্ঠু হবে তাতে কোনো সন্দেহ নাই। ওই প্রার্থী ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্ন করার জন্য এ ধরণের অভিযোগ তুলেছেন। ‘

এ ব্যপারে অভিযোগকারী প্রার্থী মোকাররম হোসেন সুজন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মানছেন না তার দলের লোকজন এবং এমপি। এটা দুঃখজনক। আমি স্থাণীয় পর্যায়ে বারবার বলার পরেও কাজ না হওয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের স্মরণাপন্ন হয়েছি। আমি চাই এমপি ও তার লোকজনের প্রভাবমুক্ত ভোট। বিএনপি-জামায়াত বলে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। সেটা প্রভাবমুক্ত ভোট হলে এমপি সাহের টের পাবেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্নান জানান, প্রার্থী সুজন অভিযোগটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দিয়ে আমাদের অনুলিপি দিয়েছেন। এমপিরা এলাকায় থাকলে একটা প্রভাব দেয়া যায়। আমরা বিষয়টি মাননীয় এমপিকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। এছাড়া বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ডিসি স্যারকেও জানানো হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকেও ওনাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে আচরণবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবেন।

রুহুল আমীনের পক্ষে ভোট চাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছ। তাতে দেখা যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কাপপিরিচ প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে নোহালী ইউনিয়নের আনোয়ারমারী কলেজে একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্থাণীয় এমপি আসাদুজ্জামান বাবলু।

এ সময় এমপি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের সম্মানিত সভাপতি আমাদের গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমীন চাচা। এই মাসের আমি ৭ তারিখে গেছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি আমাকে বলেছেন তোমার নোহালীবাসী লোকজন কেমন আছেন। বিস্তারিত কথা বলার পরে পরেশ দাদার কথা বললাম। তিনি অসুস্থ। নেত্রী ওনাকে হেল্প করতে হবে। তারপর আমি বললাম। আমার উপজেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে যাচ্ছে। ওনি একটু আপনার সাথে দেখা করতে চায়। তখন নেত্রী বললেন ঠিক আছে। সাথে সাথে চাচাকে ফোন দিলাম, বললাম আসেন, নেত্রীর সাথে দেখা করেন। পরের দিন আমরা দেখা করলাম। নেত্রী ভালো করেই চেনেন নোহালীর মানুষকে। তিনি একাধিকবার এসেছিলেন গঙ্গাচড়ায়।‘

এরপর এমপি বাবলু বলেন, ‘উনি (রুহুল আমীন) একাধিকবার উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার জন্মের আগেও উনি (রুহুল আমীন) উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। এবার আমি এমপি হয়েছি। উনি উপজেলা চেয়ারম্যান। এর আগে আমার সাথে উনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছিলেন, ২০১৪ সালে। আমরা চাচা-ভাতিজা। আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম। উনি নির্বাচিত হতে পারেন নাই। পরের বার (২০১৮) আমি নির্বাচন করি নাই। উনি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারো নির্বাচন করছেন। সবারই একটা পজেটিভি থাকা উচিৎ। আমি আশা করি সবাই ওনাকে সহযোগিতা করবেন। পাশে থাকবেন।‘

আগামী ২৯ মে তৃতীয় দফায় এই উপজেলার ভোট গ্রহণ হবে। এরইমধ্যে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের কাছে। জমে উঠেছে প্রচারণা। চলছে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ।


আরো সংবাদ



premium cement