১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পীরগাছায় ৪.৩৪ পেয়েছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা

পীরগাছায় ৪.৩৪ পেয়েছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা - নয়া দিগন্ত

রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পীরগাছা হাজী সফর উদ্দিন সিনিয়র মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে শ্রুতি লেখকের সহযোগিতায় এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে মুনিরা ৪.৩৪ জিপিএ পেয়েছেন।
মুনিরা একই মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়েছিলেন। পরীক্ষার সময় পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরার পরীক্ষা দেখতে এসেছিলেন।

তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা বলেন, ‘আমি যেন সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারি। সবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। আমি সামাজিক কাজ করতে চাই। আমি শিক্ষিত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আমি এমন একটি চাকরি করতে চাই, যেখানে পর্দায় থেকে চাকরি করতে পারবো। সকলে যেন আমাকে অবহেলা না করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সকল শিক্ষক আমাকে সহযোগিতা করছেন।’ মুনিরার বাবা জাহাঙ্গির আলম ও মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘জন্ম থেকে আমার মেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, মাস্টার যা বলেন আমার মেয়ে তা মুখে শুনে মুখস্থ করে। একবার শুনলে ওর মুখস্ত হয়ে যায়। আমার মেয়েকে সবাই যেন ভালো চোখে দেখেন, সবাই যেন সহযোগিতা করেন। ও যতদূর লেখাপড়া করতে চায় আমরা করাবো।’

তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা বলেন, ‘আমি যেন অনেক পড়াশুনা করতে পারি, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।’

শিক্ষক আবু তালেব বলেন, ‘সে জন্ম থেকে অন্ধ। সে পরীক্ষায় খুবই সুন্দরভাবে অংশগ্রহণ করছে। তার শ্রবণ শক্তি এত প্রখর একবার শুনলে তার মুখস্থ হয়ে যায়। তার মা-বাবা গৃহ শিক্ষক রেখে পাঠদান করাচ্ছেন।’

তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরা বলেন, ‘আমার অনুরোধ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে যেন সহযোগিতা করেন। আমি কোনো উপবৃত্তি পাই না। সরকার থেকে আমি কোনো উপহার পাই নাই। আমি উপহার চাই। আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে চাই।’

একই মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোছা: নাহমিদা আক্তার মাদরাসা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে তাহমিনা তাবাচ্ছুম মুনিরার পক্ষে এবার পরীক্ষা দিয়েছেন। মুনিরা বলেন, আমি যদি নিজে লেখতে পাইতাম তাহলে আমি জিপিএ-৫ পাইতাম।

পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, মুনিরা আবেদন করলে আমরা উপবৃত্তির ব্যবস্থা করে দেব।


আরো সংবাদ



premium cement