২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রংপুরের আলোচিত সোনা মিয়া হত্যার প্রধান আসামী আব্দুর রাজ্জাক এখন কারাগারে

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে স্লোগানের ভাষা নিয়ে বিরোধের জেরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সোনা মিয়া (৫৫) খুন হয়েছেন। এ মামলার প্রধান আসামী রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের জামিন আবেদন নাকোচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশে দিয়েছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম।

সোমবার (৫ জুন) বিকেলে রংপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতের বিচারক এই আদেশ দেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় ৭৬ এজহার নামীয় আসামির মধ্যে নয়জন কারাগারে গেলেন।

রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রীয় পক্ষের আইনজীবী আব্দুল মালেক জানান, সোনামিয়া হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাউনিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার জন্য হাইকোর্টের আদেশে ৪ সপ্তাহের অন্তবর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। সময় শেষ হওয়ায় তিনি সোমবার বিকেলে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। জেলা ও দায়রা জজ শহিদুল ইসলাম তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যায় পুলিশ।

কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ জানান, এর আগে ২৯ এপ্রিল কারমাইকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমল হক লেবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়াও এই মামলায় আরো এজহার নামীয় ব্যক্তি হারাগাছ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোজাম্মেল হক, ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মকবুল সালাম, উপজেলা আওয়মী লীগের বহিস্কৃত সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, খানসামা হাটের বিকাশ দোকানদার মাইদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ কর্মী আব্দুল গাফফার, আব্দুল জলিল ও আব্দুল খালেককে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২৪ এপ্রিল বিকেল ৪টায় খানসামা হাট এলাকায় স্থানীয় এমপি ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির ঈদ শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে স্লোগানের ভাষা নিয়ে কাউনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া এবং উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় খানসামা হাটে দ্বিতীয় দফার সংঘর্ষে স্থানীয় ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখলেছুর রহমান মুকুলের চাচাতো ভাই ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ সোনা মিয়াকে (৫৫) চাপাতি ও চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে রাজ্জাক-রাজু গ্রুপের মধ্যে। সোনা মিয়া মেয়ের বাড়ি থেকে ঈদের দাওয়াত খেয়ে ওই বাজারে তার নাতনি আরশি মনিকে নিয়ে চা খেয়ে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

এ ঘটনায় সোনা মিয়ার ছেলে আখতারুজ্জামান সোহেল বাদি হয়ে আব্দুর রাজ্জাককে ১ নম্বর এবং তার ভাই রাজু আহমেদকে ২ নম্বরসহ ৭৬ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামাদের নামে হত্যা মামলা করেন।

এ ঘটনার পর থেকে আসামি গ্রেফতারে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ এনে প্রতি দিনই ওই এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও মানববন্ধন করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এছাড়াও এ ঘটনায় আসামি পক্ষ মামলা তুলে নেয়াসহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকির ঘটনায় পরিবার এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের পক্ষ থেকে থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গঠিত আওয়ামী লীগের তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পরিচয়ে বাড়িতে প্রবেশ, প্রকৃত খুনিদের আড়াল এবং সোনা মিয়াকে বিএনপি কর্মী বানানোর অপচেষ্টা অভিযোগ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিবারের পক্ষ থেকে। এ ঘটনা নিয়ে সেখানে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement