২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি : নিহতদের পরিবারকে জামায়াতের অর্থসহায়তা

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি : নিহতদের পরিবারকে জামায়াতের অর্থসহায়তা - ছবি : নয়া দিগন্ত

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে আর্থিক সহয়ায়তা প্রদান করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বুধবার (২৮ সেপ্টম্বর) পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকার নিহতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের স্বজনদের হাতে অর্থসহায়তা দিয়েছেন দলটির আমির ডা. মুহম্মদ শফিকুর রহমান। ৭১টি পরিবারে মাঝে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ২১ লাখ ৩০ হাজার টাকার এই অর্থসহায়তা প্রদান করা হয়। এ সময় জামায়াত আমির নিহতদের শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানান।

ডা. শফীকুর রহমান বলেন, দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো সামাজিক দায়িত্ব। তাছাড়া দুঃখের সময় পাশে দাঁড়ানো এক প্রকার সৌভাগ্যও। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সবসময় অসহায় মানেুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।

জামায়াত ইসলামী একটি জনকল্যাণমূলক দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, নৌকাডুবির ঘটনাটি একটি বড় মানবিক বিপর্যয়। নৌকাডুবে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু দেশের ইতিহাসে বিরল। আমরা নৌকাডুবির পর থেকেই পুরো বিষয়টি আমাদের নজরে রেখেছিলাম। নিহতরা সকলেই হিন্দু ধর্মের হলেও আমরা বিষয়টি সেভাবে দেখছি না, আমরা দেখছি মানুষ। আর মানুষ বিপদে পড়েছে, আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি।

তিনি আরো বলেন, এই সহযোগিতা আমাদের অনুগ্রহ নয়; বরং দায়িত্ব ছিলো। আমরা দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি মাত্র। আমরা আশা করবো সকলেই এই দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসবে।

পরিবারগুলোর সাথে সাক্ষাতৎ শেষে করতোয়া নদীর আউলিয়া ঘাট পরিদর্শন করেন ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, দলটির সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল আলীম, পঞ্চগড় জেলা আমির ইকবাল হোসেন, সাবেক জেলা আমির মাওলানা আব্দুল খালেক, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলাম প্রমুখ।

এদিকে একই দিন বিকেলে মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন নিহতদের স্বজনদের হাতে ৫ হাজার টাকা করে তুলে দেন। এর আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ২০ হাজার ধর্ম মন্ত্রণালয় হতে ২৫ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান আরো একলাখ টাকা করে দেবেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) শারদীয় দুর্গোৎসবের মহালয়া উপলক্ষে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া আউলিয়া ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় করে বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিলেন। ঘাট থেকে নৌকাটি কিছু দূর যাওয়ার পর দুলতে শুরু করে। একপর্যায়ে নৌকাটি ডুবে যায়। পরে উদ্ধার অভিযান শুরু করে প্রশাসন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৬৯ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন।

স্থানীয়রা জানায়, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতার নৌকাটিতে দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। এদিকে, ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায়কে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপঙ্কর রায় বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান, লাশ উদ্ধার এবং পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা প্রদানে সক্রিয় থাকায় তদন্ত প্রতিবেদনের সময় তিনদিন বাড়ানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement