১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

চিরিরবন্দরের যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

চিরিরবন্দরের যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ - ছবি : নয়া দিগন্ত

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর, হত্যার হুমকি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে কয়েকজন ভুক্তভোগী। তার এসব কর্মকাণ্ডে নিরাপত্তাহীনতার দিনাতিপাত করছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন চিরিরবন্দর উপজেলার পূর্ব সাইতারা গ্রামের আফতাবুজ্জামানের স্ত্রী লাভলী আরা।

এ সময় ভুক্তভোগী শাহজাহান আলম, সোহেল মাহমুদসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে লাভলী আরা বলেন, ‘আমার স্বামী আফতাবুজ্জামান চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে রানীরবন্দর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপ-সহকারী কমিউনিটি কর্মকর্তা। গত ১৮ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে চিরিরবন্দর আমেনা বাকী স্কুল গেটের সামনে যুবলীগ নেতা সুমন দাস, আক্কাস আলী, শাকিল ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান লাল, দবিরুল ইসলাম, রতন বর্মণসহ আরো সাত থেকে আটজন তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। পরে তার ওপর হামলা চালিয়ে মাহবুবের চায়ের দোকানে পিছনে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে কিলঘুষি মেরে আহত করে। এক পর্যায়ে সুমন দাস আমার স্বামীর গলায় ধারালো ছুরি ধরে ও অন্যরা লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করেন। এ সময় তার পকেট থেকে পাঁচ হাজার টাকা বের করে নেয়ার অভিযোগ করেন তিনি।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, মারধরের পর বাকি চার লাখ ৯৫ হাজার টাকা এক দিনের মধ্যে দেয়ার হুমকি দেয় তারা। বিষয়টি টের পেয়ে কেউ একজন পুলিশকে জানালে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

ওই ঘটনায় ২০ জুলাই আফতাবুজ্জামান আদালতে মামলা করেন। মামলার পর ২২ জুলাই সুমন দাসের লোকজন ঘুঘুরাতলী কাঁচাবাজার এলাকায় তাকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দেয়। পরদিন এ ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করলে আবারো ২৪ জুলাই সুমন দাস ও তার লোকজন তাকে আবারো মারধর করার সময় এলাকাবাসী উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওই দিনই আদালতে আরেকটি মামলা করেন তিনি।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, শুধু একটি ঘটনাই নয়, সুমন দাস ও তার লোকজন ‘শিশির ক্যাবল নেটওয়ার্ক’ ডিস লাইন ব্যবসায়ী মোসা: সেলিনা পারভীনের কাছ থেকে দু’লাখ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছে। এছাড়া তার কাছে প্রতি মাসে এক লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় গত ২০ জুন রাতে তার এক কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে আহত করে সুমন দাস ও দার লোকজন। এ ব্যাপারে ১২ জুলাই সেলিনা পারভীন চিরিরবন্দর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে জমি দখলের অভিযোগ করেন ইউসুফ আলী। তিনি বলেন, সুমন দাস তার ক্রয় করা জমি দখলে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি মামলাও দায়ের করেন।

চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন ব্যাংক কর্মকর্তা দক্ষিণ সুকদেবপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে মাহির উদ্দিন। তিনি বলেন, তার ক্রয় করা জমিতে বাউন্ডারি করার সময় ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে যুবলীগ নেতা সুমন দাস। এ অভিযোগে তিনিও মামলা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সুমন দাসের হাত রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে সুমন দাসের মোবাইলে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদ পারভেজ বলেন, ভুক্তভোগীরা আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। দল থেকে থেকে তাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছি। কেন্দ্রের কাছে কাগজপত্র পাঠানো হয়। এখন কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নিবে।


আরো সংবাদ



premium cement