১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপ, ২ দিন পর পরিবারের কাছে ভাই-বোনের লাশ

বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ঝাঁপ : ২ দিন পর পরিবারের কাছে ভাই-বোনের লাশ। - ফাইল ছবি।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে যাওয়া ভাই-বোনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধারের দু’দিন পর পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছে বিএসএফ।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হয়। উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তের ৯৪২ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারের আট নম্বর সাব পিলারের পাশে এ বৈঠক হয়।

লালমনিহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার ফরিদ উদ্দিন পরিবারের কাছে শিশু দুটির লাশ হস্তান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিশু দুটির নাম পারভীন (৮) ও সাকিবুর (৪)। তারা কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম সুখাতি গ্রামের রহিচ উদ্দিন (৩৮) ও সামিনা বেগম (৩৫) দম্পতির সন্তান।

এর আগে রোববার দুপুর দেড়টায় ভারতের ৫০ গজ ভেতরে নীল কমল নদীতে ভাইবোনের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে ১৯২ ব্যাটালিয়ন সেওটি-১- ক্যাম্পের বিএসএফ ও সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ।

উল্লেখ্য, ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের সুলতানপুর এলাকার হাসিহেসা ইট ভাটায় কাজ করতেন রহিচ উদ্দিন। কাজ শেষে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য দালালের সাহায্য নেন তিনি। দেশে প্রবেশের জন্য শুক্রবার রাতে স্ত্রী ও দু’সন্তানসহ কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার সেউটি সীমান্ত এলাকায় আসেন তিনি।

পাচারকারী দালালরা কাঁটাতারের বেড়া কেটে তাদেরকে নীল কমল নদীর পাড়ে নোম্যান্স ল্যান্ডে এনে দাঁড় করায় এবং নদী সাঁতরে বাংলাদেশে আসতে বলে। এ সময় শব্দ শুনে ভারতীয় সেউটি ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। অবস্থা বেগতিক দেখে দু’সন্তানকে নিয়ে নদী সাঁতরাতে শুরু করেন সামিনা বেগম। কিন্তু তীব্র স্রোতে হাতের বাঁধন খুলে ডুবে যায় দু‘শিশু। ডুবে যাওয়ার দু’দিন পর রোববার সকালে তাদের লাশ ভেসে ওঠে।

পরে মৃত সন্তানের লাশ ফেরত চেয়ে লালমনিহাট-১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন কাশিপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের কাছে একটি আবেদন করেন বাবা রহিচ উদ্দিন। আবেদনের পর জনৈক নারায়ণ চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠোনে বিএসএফ-বিজিবি বৈঠক শেষে শিশু দু’টির লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বিএসএফ। মঙ্গলবার রাতেই শিশু দুটির লাশ দাফন করা হবে বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।

এ সময় ভারতীয় বিএসএফের পক্ষে-১৯২ ব্যাটালিয়নের সেওটি-১, সেউটি-২ ক্যাম্পের বিএসএফ, সাহেবগঞ্জ থানা পুলিশ ও বিজিবির পক্ষে লালমনিহাট-১৫ ব্যাটালিয়নের অধীন কাশিপুর কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার ফরিদ, অনন্তপুর ক্যাম্প ইনচার্জ আরফিন, পুলিশের পক্ষে এএসপি সার্কেল সুমন রেজা, ফুলবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান, ওসি (তদন্ত) সারওয়ার পারভেজ, নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়ন ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল ও মেছের আলী।


আরো সংবাদ



premium cement