২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৈয়দপুরে বাঁশঝাড় থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী-শাশুরি আটক

- ছবি : সংগৃহীত

নীলফামারী সৈয়দপুরে চার দিন আগে নিখোঁজ এক গৃহবধূর লাশ বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও শাশুরিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিক সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার সকাল ৭টায় উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া (খরখরিয়াপাড়া) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, নিহত লাভলী বেগম (২৪) দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মন্মথপুর ইউনিয়নের দাগলাগঞ্জ দলবাড়ীপাড়ার বাবলু মন্ডলের মেয়ে। ১২ বছর আগে মেয়ের নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পশ্চিম পাড়া (খরখরিয়াপাড়া) গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে দিনমজুর রেজাউল করিমের সাথে বিয়ে হয়েছে লাভলীর। ইতোমধ্যে তাদের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান হয়েছে।

লাভলী বেগমের মা মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই রেজাউল তেমন কাজ করতো না। সংসারটা আমার মেয়েই অনেক কষ্ট করে চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি জামাই তার ভাউজের (ছোট ভাইয়ের বউ) সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছে।

মাঝে মেয়েকে পুরো পরিবার মিলে শারীরিক নির্যাতন করে। এরই মধ্যে গত বুধবার জানতে পারি সোমবার থেকে লাভলী নিখোঁজ। আর আজ(শুক্রবার) তার লাশ পাওয়া গেলো বাঁশঝাড় থেকে।

আমার মেয়েকে ওরা আগেই পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এখন আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে লাশ বাঁশঝাড়ে রেখে এসেছে। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

তিনি আরো বলেন, ছোট নাতনীটা বলেছে, তার মাকে বাবা, দাদা ও দাদীরা পিটিয়ে মেরে লাশ কয়েক দিন থেকে ঘরের ছাদে (সিলিং) রেখে নিখোঁজ হয়েছে বলে প্রচার করে। পরে দুর্গন্ধ বের হওয়ায় শুক্রবার ভোরে বাঁশঝাড়ে নেয়া হয়েছে। একথা বলার কারণে এখন মেয়ের ছেলে মেয়েকে (নাতি ও নাতনি) আমাদের কাছে আসতে দিচ্ছে না। পাশের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, চার দিন থেকে লাভলী বেগমকে পাওয়া যাচ্ছিল না। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ওঝা এনে গণনা করা হয়। তাতেও কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় সকালে বাঁশঝাড়ে প্রাকৃতিক কাজ সারতে গিয়ে এক মহিলা লাশ দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী উপস্থিত হয়। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি লাশ ঘন বাঁশঝাড়ের মধ্যে পড়ে আছে। অনেক কষ্টে বাঁশ কেটে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। জড়িত সন্দেহে স্বামী ও শাশুরিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement