১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বালিয়াডাঙ্গীতে ভ্যানচালক জামাল উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার ২ আসামির

জামাল উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে দুই আসামি। - ছবি : সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে ভ্যানচালক জামাল উদ্দিনকে (৩৯) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে স্বীকার করেছেন এ ঘটনায় গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম (২৬) ও সাইফুল ইসলাম (৪৪)।

জামাল উদ্দিনকে হত্যার পর উপজেলার সর্বমঙ্গলা গ্রামের পাঁচপীর নামক বাঁশঝাড়ে জনৈক আবুল কালাম আজাদের আমন ধান ক্ষেতে তার লাশ ফেলে রাখা হয়।

নিহত জামাল উদ্দীনের ব্যবহৃত মুঠোফোন ও ভ্যান উদ্ধারের জন্য পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে রাণীসংকৈল উপজেলার বুলিদ্বারা বাজার মালদিয়া নাচী টাওয়ার পাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও পার্শ্ববর্তী বলিদ্বারা বাসান বস্তী গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে মাইক্রোচালক সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, জামাল উদ্দীনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর তার মৃত্যু নিশ্চিত করে তার লাশ পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।

পরে আটক আসামিদের দেখানো মতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ভিকটিম ভ্যানচালক জামাল উদ্দিনের ব্যাটারিচালিত ভ্যানের মোটর, মিটার, কন্ট্রোলার, তিনটি চাকা, কাঠের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, হরিপুর উপজেলার পাহাড়গাঁও গ্রামের মুনসুর আলীর ছেলে ভ্যানচালক জামাল উদ্দিন গত ৬ সেপ্টেম্বর সকালে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে চৌরঙ্গী বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। কিন্তু তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী হাওয়া নুর থানায় সাধারণ ডায়রি করতে যাওয়ার পথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামানের সাথে দেখা হয়। এ সময় চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান তাকে জানান, তার স্বামী জামাল উদ্দিনের লাশ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সর্বমঙ্গলা গ্রামের জনৈক আবুল কালাম আজাদের ধান ক্ষেতে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে মর্মে থানা পুলিশ তাকে সংবাদ জানিয়েছে।

এলাকাবাসী ধান ক্ষেতে অজ্ঞাত যুবকের গলিত লাশ দেখতে পায়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়। স্থানীয় থানা পুলিশ ও ঠাকুরগাঁও থেকে সিআইডি ও পিবিআইসহ তিনটি টিম লাশের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তার ভোটার আইডি কার্ডের পরিচয়পত্র উদ্ধার করে। জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডি অনুযায়ী লাশটি হলেন- পার্শ্ববর্তী হরিপুর উপজেলার পাহাড়গাঁও গ্রামের মুনসুর আলীর ছেলে ভ্যানচালক জামাল উদ্দিনের। পরে ভিকটিম জামাল উদ্দিনের স্ত্রী হাওয়া নুর অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বালিয়াডাঙ্গী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

বালিয়াডাঙ্গী থানার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আব্দুস সোবহান ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। বিকেলে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

অপর দিকে মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ঘটনাটি মৃতের পরিবারকে জানালে সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে তার লাশ শনাক্ত করেন।

গত বৃহস্পতিবার পুলিশ আটক আসামিদের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ (বালিয়াডাঙ্গী) এ হাজির করা হলে তারা আদালতে জামালের হত্যার ঘটনাটি খুলে বলেন।

মামলার তদন্তকালী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আব্দুস সোবহান জানিয়েছেন, আসামিদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement