২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঠাকুরগাঁওয়ে 'কফি' চাষের নতুন সম্ভাবনা

- ছবি- নয়া দিগন্ত

বর্তমানে কফি উন্নত পানীয় হিসেবে সারাবিশ্বেই ব্যাপক সমাদৃত। একসময় আমাদের দেশে কফির খুব একটা প্রচলন ছিল না। ধীরে ধীরে অনেকেরই পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে চায়ের পরিবর্তে কফি পান।

দেশের কফির প্রয়োজনীয় চাহিদার সবটুকুই আমদানি নির্ভর। চায়ের তুলনায় দাম একটু বেশি হলেও বাংলাদেশে কফির চাহিদা কম নয়। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলায় কফি চাষে লাভবান হয়েছে অনেকে। ঠাকুরগাঁওয়েও চা পাতার মতো বাণিজ্যিকভাবে যে কফি চাষ জমতে পারে এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

পেশায় প্রকৌশলী ও শিক্ষকতা। এমন দুই বন্ধু মিলে পেশার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি অবসর সময়ে পরীক্ষামূলকভাবে কফি চাষ করেছেন তারা।

উপজেলার রুহিয়া এলাকায় সিদ্দিকুর রহমান শানু ও প্রকৌশলী এইচ এম আসিফ রব্বানী নামের দু’বন্ধু এ কফি চাষের উদ্যোক্তা। তারা ঢোলারহাট ইউনিয়নে কফির বাগান গড়ে তুলেছেন। অনেকেই কফি বাগান দেখতে ভিড় করছেন। তারাও কফি চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। চা, লিচু ও সুপারিসহ বিভিন্ন ফল-ফসলের পাশাপাশি তারা সখের বশে গড়ে তুলেছেন কফির বাগান।

কৃষি বিভাগও বলছে, ঠাকুরগাঁওয়ে কফি চাষে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সিদ্দিকুর রহমান ও আসিফ রব্বানী পাঁচ শতাংশ জমিতে কফি গাছ চাষ করেছেন। প্রতিটি গাছের গোড়া থেকে প্রত্যেক শাখা-প্রশাখা ফলে ভরপুর। কিছু কিছু ফল পাকতেও শুরু করেছে। কফির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষাবাদ করা হয়েছে। বাগানে

দর্শনার্থীরা বলছেন, নিরাপদ ফল-ফসল উৎপাদনে এলাকার মানুষের কাছে সিদ্দিকুর রহমান ও আসিফ রব্বানী আদর্শ। অনেকেই প্রতিদিন আসেন কফি বাগান দেখতে। জীবনে প্রথম কফি গাছ ও বাগান দেখে তারা অভিভূত। অনেকেই কফি বাগান করার জন্য তাদের পরামর্শ নিচ্ছেন।

ওই কফি বাগানের শ্রমিকরা বলছেন, ছোট ছোট গোল গোল সবুজ কফিতে ভরপুর বাগান। সবুজ কফিগুলো পেকে লাল। এরপর কালো হবে।

কফি চাষি সিদ্দিকুর রহমান শানু বলেন, দু’বন্ধুর সম্মিলিত উদ্যোগে এ কফি চাষ। প্রত্যেকটি গাছে কফির ভালো ফলন হয়েছে। নভেম্বর মাসেই এ কফিগুলো পরিপক্ক হয়ে যাবে। যদি সরকারি সহায়তায় কৃষকদের কফি চাষে আগ্রহী করা যায়, তবে কফির আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে। এতে সাশ্রয় হবে বৈদেশিক মুদ্রা।

অপর কফি চাষি প্রকৌশলী এইচ এম আসিফ রব্বানী জানান, কফি চাষে চায়ের চেয়ে খরচ কম। বছরে একবার ফসল হয়। চা-গাছের মতো ছাঁটাই, সেচ লাগে না। রোগবালাই কম। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, এতে করে চা-বাগানের জমির সুষ্ঠু ব্যবহার হবে। চা-বাগানের জন্য কফি একটি সম্পূরক ফসলও হতে পারে। কফি একটি অর্থকরী ফসল বিধায় এটি চাষ করে উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলেও মনে করছেন তিনি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষ্ণ রায় বলেন, কফি চাষে কৃষি বিভাগ যতদূর সম্ভব বিভিন্ন কারিগরী পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি উদ্যোক্তাদেরকে কফি চাষে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কফির স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও বৃদ্ধি করা যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement