রংপুর মেডিক্যাল থেকে ৫০০ অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা
- রংপুর অফিস
- ২৩ জুলাই ২০২১, ২১:০০
অল্পের জন্য রক্ষা হলো রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভান্ডারের প্রায় ৫০০ খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার। একটি সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া চালান দেখিয়ে তিনটি ট্রাকে করে এসব অক্সিজেন সিলিন্ডার নিতে এসেছিলেন। টের পেয়ে চক্রের ছয়জনকে গ্রেফতার এবং ট্রাক তিনটি জব্দ করেছে পুলিশ।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভান্ডারের ইনচার্জ আবু সাঈদ খাঁন বাবু জানান, ‘জুমআর নামাজের পর তিনটি ট্রাক কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ভান্ডারের সামনে আসে। সেখান থেকে নেমে গাড়িচালক ও হেলপাররা তিনটি চালান কপি দিয়ে আমাকে বলে, আমরা দিনাজপুর থেকে এসেছি। ডাক্তার রেজাউল ইসলাম (০১৭২৩-৪৬২০৪৩) আমাদের পাঠিয়েছেন। এরপর তারা আমাকে তিনটি চালান কপি দিয়ে বলেন, স্টোরে যত খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে সব ঢাকায় ডেডিকেডেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাবু আরো জানান, ট্রাকড্রাইভারদের কথাবার্তা এবং চালানের বিষয়ে আমার সন্দেহ হলে বিষয়টি আমি হাসপাতালের পরিচালককে জানাই। এ সময় তিনি আমাকে নিশ্চিত করেন যে, এ ধরনের কোনো চালান হয়নি এবং ঢাকায় অক্সিজেন সিলিন্ডার যাওয়ার কথা নয়।
বাবু বলেন, পরে পরিচালক বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ এসে ট্র্রাক তিনটি জব্দ করেন। এবং ছয়জন চালক ও হেলপারকে থানায় নিয়ে যান।
বাবু আরো জানান, এরা সংঘবদ্ধ। কারণ তাদের কাছে গেটের চাবিও ছিল। তিনি বলেন, ঘটনার সময় অক্সিজেন স্টোরে ১০০টি ছোট এবং ৬২টি বড় খালি অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিল। একটি করে বড় সিলিন্ডার ছয়টি করে ছোট সিলিন্ডারের সমান। সে হিসেবে ৪৭২টি খালি সিলিন্ডার ধান্দাবাজি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল তারা।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, পরিচালকের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা তিনটি ট্রাক জব্দ করে থানায় নিয়ে এসেছি।
জব্দকৃত ট্রাকগুলো হলো, ঢাকা মেট্রো ট-১৫- ৬৭৮১, ঢাকা মেট্রো ট-২২-৩১৩৬ ও ঢাকা মেট্রো ট ১৫-৭৬৮৩ নম্বও রেজিষ্ট্রেশনধারি। আর গ্রেফতারকৃতরা হলেন চালক দিনাজপুরের কোতয়ালী থানার বরইল রংপুরিয়া পাড়া গ্রামের মো: আবুল কাশেমের ছেলে মো: জহিরুল ইসলাম (৪৩), তার হেলপার একই উপজেলার বরইল বনকালী গ্রামের দুলু রায় রামের ছেলে আশিক রায়; চালক একই গ্রামের হাসান আলীর ছেলে হাবিল (২৯) ও তার হেলপার একই উপজেলার পশ্চিম শিবরামপুর গ্রামের মো: সুরুজ্জামানের ছেলে মো: সাঈদ হাসান (২৯) এবং চালক একই উপজেলার বরইল হঠাৎপাড়া গ্রামের মো: আইনুল হকের ছেলে মো: সুমন হোসেন (২৯) ও চালক একই উপজেলার বরইল বনকালী গ্রামের মূত আব্দুল গফুরের ছেলে মো: সাইফুল ইসলাম (৩৪)।
ওসি জানান, তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কথিত দিনাজপুরের ডাক্টার রেজাউল ইসলামের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, এটি একটি বড় সিন্ডিকেট। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এর সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতে চাই। গ্রেফতার কৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান ওসি।
এদিকে এ ঘটনায় হতবাক হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালের পরিচালক ডা: রেজাউল করিম জানান, দিনের বেলা এভাবে ভুয়া চালান তৈরি করে ভুয়া রেফারেন্স তৈরি করে করোনাকালীন সময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার ধান্দাবাজি করে মেরে দেয়ার চেষ্টার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এর সাথে যারা জড়িত তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা