২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রংপুর মেডিক্যালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে মারধর, ক্ষোভ

রংপুর মেডিক্যালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে মারধর, ক্ষোভ - ছবি- নয়া দিগন্ত

রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কিডনিজনিত গুরুতর অসুস্থ্য মাকে ভর্তি করানোর সময় অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় জাতীয় ছাত্রসমাজ বিক্ষোভ করেছে। এ ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে।

জানা গেছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রেজওয়ানুল করিম রিয়াদ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাকে মাকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রিয়াদ বলেন, আমার মা কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। মার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমার ভাই রাশেদসহ মাকে নিয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাই। এ সময় ভর্তির জন্য নির্ধারিত ৩০ টাকার পরিবর্তে দায়িত্বরতা ১০০ টাকা দাবি করেন। আমি ও আমার ভাই তা দিতে অস্বীকার করলে তাদের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জরুরি বিভাগে ওই সময় কর্তব্যরত ১৫-১৬ জন স্টাফ এগিয়ে এসে আমি ও আমার ভাইকে ব্যাপক মারধর করেন। তখন আমি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে তারা আমাদের গুম করার হুমকি দেন।

এ ব্যাপারে মেডিক্যালে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আপেল জানান, ঘটনা শোনার পরপরই পুলিশের সহযোগিতায় ওই শিক্ষার্থীর মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টি থানার বড় অফিসারকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখবেন।

এ ব্যপারে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী জানান, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

এ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার ছবি প্রকাশ হলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয় নগরজুড়ে।

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি লেখক ড. তুহিন ওয়াদুদ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলামকে প্রচুর মারা হয়েছে। তাকে এতটাই মারা হয়েছে যে তারই এখন জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। মায়ের জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে গেলে ভর্তিতে ৫০ টাকার বদলে ১০০ টাকা নিয়েছে। শিক্ষার্থী ১০০ টাকার রশিদ চেয়েছিলেন। এটাই তার অপরাধ।’ তিনি আরো বলেন, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জরুরি সেবা বিভাগে বাড়তি টাকা ছাড়া একজনও সেবা পায় কি না, সন্দেহ। ন্যায্য কথার কারণে শিক্ষার্থী মার খেয়েছে। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কথা বললেই এই অবস্থা।

ফেসবুক পোস্টে এই শিক্ষক নেতা আরো বলেন, ‘ফোন করলাম রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: রেজাউল করিমকে। তিনি জানালেন, রাতেই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছেন। অপরাধীদের শনিবারের মধ্যে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন। জরুরি বিভাগের এই দুর্বৃত্বদের কথা কে না জানে? তারপরও কেন প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে না? অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। জরুরি সেবা বিভাগের দুর্বৃত্তদের সিন্ডিকেট সমূলে উৎপাটন করতে হবে।’

শনিবার দুপুরে এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ডা: মো: রেজাউল করিম বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement