২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সৈয়দপুরের একটি সংবাদের প্রতিবাদ

নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন জোৎস্না বেগম। - ছবি : নয়া দিগন্ত

গত ৭ জুন সোমবার দৈনিক নয়া দিগন্তের অনলাইন ভার্সনে ‘জমি দখলের পর হামলা ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত নীলফামারীর সৈয়দপুরের একটি সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্ ও তার পরিবারের অপর সদস্য এবং বাবুল হোসেন।

দৈনিক নয়া দিগন্তে পাঠানো এক বিবৃতিতে হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্, পপি, বাবুল হোসেন জানিয়েছেন, সংবাদটি সম্পূর্ণরূপে ভিত্তিহীন। তারা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, যে জমির সূত্র ধরে সংবাদ সম্মেলনের নামে অভিযোগকারী জুলফিকার আলী, আ: রহমান এবং জোৎস্না বেগমের বরাতে যেসব বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে উল্লেখিত সংবাদের পুরোটা জুড়ে কোথাও কোনো প্রকার সত্য তথ্য পরিবেশিত হয়নি এবং আমাদের কারো সাথেই সেসব বক্তব্যের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততাও নেই। উক্ত জমিটি ২০১৬ সালে জমির দুই মূল মালিকের কাছ থেকে উপর্যুক্ত মূল্য দিয়ে ক্রয় করা হয়। সৈয়দপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যার দলিল নং ১৭৮৭/১৬।

জাল দলিলের কথা উল্লেখ করা হলেও জুলফিকার আলীর আপন বড়ভাই খলিলুর রহমান ওই দলিলে শনাক্তকারী সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন। এবং খলিলুর রহমান জুলফিকারসহ অপর দুই ভাই আ: জলিল এবং আনোয়ারুলের (আনারুল) কথায় সায় না দেয়ায় তারা তাকেও হত্যাচেষ্টার উদ্দেশ্যে মারধর ও জখম করে। এ ব্যাপারে দলিলের শনাক্তকারী সাক্ষী খলিলুর রহমান সৈয়দপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নং ৯৫৬। তারিখ ১৮/৫/২১।

সংবাদে মহিবুল্লাহ্-কে ভুয়া সাংবাদিক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে অথচ মহিবুল্লাহ্ সৈয়দপুর থেকে দীর্ঘ ২৫ বছর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘জনসমস্যা’-যার রেজি নং রাজঃ ১৬৮ এ ২০১৩ সাল থেকে বার্তা সম্পাদক এবং জাতীয় অনলাইন নিউজপোর্টাল- যার তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধন নং ৭২ এর নিজস্ব প্রতিবেদক।

সংবাদের একটি অংশে বলা হয়, মহিবুল্লাহ্ ভুয়া সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রতারণা করে আসছে অথচ সেসবের কোনো প্রমাণ সংবাদে উল্লেখ করা হয়নি।

এছাড়া হাবিবুর রহমান হাবিবকে জড়িয়ে হাতুড়ে কবিরাজ সংবাদে প্রকাশ করা হয় অথচ তিনি বাংলাদেশ বোর্ড অব ইউনানী অ্যান্ড আয়ুর্বেদিক সিস্টেম অব মেডিসিনের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক এবং তার রেজি নং ১৩৯৫-বি।

সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্ এবং তার বাবার বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের কথা ওই সংবাদে বলা হলেও হাবিবুর রহমানের নামে ক্রয়সূত্রে উপরেল্লিখিত ১৭৮৭/১৬ দলিলমূলে ১১ শতাংশ জায়গা ছাড়া আর কোনো স্থাবর জমি নেই এবং সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্‌র নামেও কোনো জমি নেই। সুতরাং অভিযোগকারীদের বরাতে জমি দখলের যে কথাগুলো লেখা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত।

এছাড়া কামারপুকুরের প্রাচীনতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গাউছিয়া রাহমানিয়া মাইজভাণ্ডারীয়া দরবার শরীফকে জড়িয়ে যেসব তথ্য লেখা হয়েছে তা স্পষ্টত মাজার বিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছুই নয়।

ওই সংবাদের একটি অংশ রয়েছে যেখানে লেখা হয়েছে, ‘১০ শতক জমির অর্ধেক অংশে গত এপ্রিল মাসে করোনা মহামারীর ভয়াবহতার মাঝেই তারা হঠাৎ করে এসে বাড়ি নির্মাণ করার চেষ্টা করে। এসময় বাধা দিলে হাবিবুর ও মুহিবুল্লাহসহ হাবিবুরের ভায়রা বাবুল, মেয়ে পপি আমার বৃদ্ধা মা ও বৃদ্ধ চাচাকে নোংরা গালিগালাজ করাসহ বেধড়ক মারপিট করে এবং মায়ের শাড়ি-ব্লাউজ ছিড়ে ফেলে শ্লীলতাহানির অপচেষ্টা চালায়।’ অথচ এরকম কোনো ঘটনা সেখানে স্বপ্নেও ঘটেনি। বরং বাড়ি নির্মাণের সময় সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্ সৈয়দপুরের বাইরে অবস্থান করছিলেন এবং পপি দরবার শরীফস্থ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এবং হাবিবুর রহমান ও বাবুল হোসেনকে স্থানীয় এলাকাবাসী বাড়ির কাজে সহযোগিতা করেন। জমির বিষয়ে এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। বরং অভিযোগকারীরা এলাকাবাসীর ভর্ৎসনায় মুখ লুকিয়ে বাড়ির বাইরে আত্মগোপনে চলে যায় এবং নারী নির্যাতনের নামে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে আস্ফালন করতে থাকে। এসব খবরে স্থানীয় এলাকাবাসী এই কুচক্রী পরিবারের প্রতি ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে।

এলাকাবাসীর সমর্থন হারালে তারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে ওঠে এবং গত ৫ জুন ওই জমিতে হামলা চালিয়ে ৫০টি আম গাছ জুলফিকার সবার সামনে দুমড়ে-মুচড়ে তুলে ফেলে। পরে এলাকাবাসী খবর দিলে সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্ জমিতে আসে এবং তার পত্রিকার ফেসবুক পেজে এ ঘটনার লাইভ ভিডিও সম্প্রচার করে যে ভিডিওটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ ইতোমধ্যে দেখেছেন। এবং বৃক্ষসন্ত্রাসী জুলফিকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

উপরন্তু এই ঘটনার পর সাংবাদিক মহিবুল্লাহর বাবা আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হাবিবুর রহমান থানায় অভিযোগ দিলে জুলফিকার গং স্থানীয় চারজন সাংবাদিককে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে গভীর রাতে বাড়িতে ডেকে নেয় এবং পরে সংবাদ সম্মেলনের নাম দিয়ে চক্ররূপে একীভূত হয়ে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে এসমস্ত মিথ্যা, মানহানিকর বক্তব্য প্রচার করে। এবং সাংবাদিকতার নিয়ম অনুযায়ী আমাদের সাথে তথ্যসংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ করা বাঞ্ছনীয় হলেও এক্ষেত্রে তা অনুসরণ করা হয়নি।

প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, হাবিবুর রহমান, সাংবাদিক মহিবুল্লাহ্, পপি, বাবুল হোসেনের নামে প্রকাশিত সংবাদটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বৃক্ষসন্ত্রাসী জুলফিকার, আ: রহমান এবং জোৎস্না বেগম গংরা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য এহেন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। তাদের চারিত্রিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। সংবাদে পরিবেশিত সকল তথ্য যে মিথ্যা এ বিষয়ে তারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ দিতে রাজি আছেন।

তারা বলেন, তারা সুপরিচিত ও সম্মানীয় ব্যক্তি হিসেবে সমাজে বসবাস করেন। কোনো ধরনের অন্যায় বা অপ্রীতিকর ঘটনার সাথে জড়িত তো দূরের কথা এসব তারা সমর্থনও করতে পারেন না।

নয়া দিগন্ত অনলাইন বিভাগের ভাষ্য :
এটি আমাদের নিজস্ব কোনো প্রতিবেদন নয়। এটি একটি সংবাদ সম্মেলনের খবর। সংবাদ সম্মেলনে যা অভিযোগ করা হয়েছে, তাই প্রকাশ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement