২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ঠাকুরগাঁওয়ে নদী পুনঃখননে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা

ঠাকুরগাঁওয়ে নদী পুনঃখননে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা - ছবি- সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ে শুক ও টাঙ্গন নদী পুনঃখনন ও খননের মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখছেন এলাকার কৃষকরা। এর আগে প্রায় তিন দশক ধরে নদী ভরাট হয়ে যাওয়া ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ না থাকায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে রোপা আমন ঘরে তুলতে পারেনি এলাকার কৃষকরা। সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যেত এসব ফসলের মাঠ। এতে কষ্টে দিন কাটতো কৃষকদের।

জানা গেছে, কৃষকের এসব কষ্ট লাঘবে এলাকার দু’টি নদী পুনঃখনন ও খননের মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরই মধ্যে নদী পুনঃখনন ও বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বাড়তি ফসল উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে খুশি এলাকার কৃষকরা।

ঠাকুরগাঁও সদরসহ রুহিয়া থানার বিস্তির্ণ মাঠ চিরে বয়ে গেছে টাঙ্গন ও শুক নদী। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি অপসারণ ও খরা মৌসুমে নদীর পানি ব্যবহার করে ফসল চাষের জন্য ১৯৫২ সালে বুড়ির বাঁধ ও ব্যারেজ নির্মাণ, ১৯৯০ সালে টাঙ্গন ব্যারেজ নির্মাণসহ ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ তৈরি হয়। একইসাথে নদীর পানি ফসল উৎপাদনের জন্য বাঁধের উভয় তীরে নির্মাণ করা হয় চারটি সুইসগেট। কিন্তু নদী ভরাট হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ঠাকুরগাঁও সদরের আসাননগর, দক্ষিণ বঠিনা, বড়দেশ্বরী, উত্তর বঠিনা, সন্যাসীপাড়া, খরিবাড়ি ও খালপাড়া এলাকার মাঠঘাট সব পানিতে ডুবে থাকে। পানি অপসারণ না হওয়ায় দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে এসব পানি মাঠে থাকায় রোপা আমন ধান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। এ কারণে দীর্ঘ দিন থেকে এলাকার কৃষকরা দাবি করে আসছিল নদী পুনঃখনন ও বাঁধ সংস্কারের।

প্রায় তিন দশক পর টাঙ্গন নদীর ৩৫ ও শুক নদীর ২৪ কিলোমিটার পুনঃখনন ও নদীর তীরের বাঁধ সংস্কারকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। ছয় কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে শুক নদী পুনঃখনন প্রকল্প ও ২৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে টাঙ্গন নদীর খননকাজ চলছে। চলতি বছর বর্ষার আগেই নদী খনন ও বাঁধ সংস্কার প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আসাননগর গ্রামের কৃষক সাদ্দাম বলেন, ‘নদীর পাশেই আমাদের গ্রাম। আর গ্রামের পর মাঠ। যে মাঠে ফসল উৎপাদন করে আমাদের জীবিকা নির্বাহ হয়। নদী ভরাট হওয়ার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই নদীর পাড় উছলে আমাদের বাড়িঘর ও ফসলর ক্ষেত ডুবে যেত কয়েক বছর ধরে। নদী খনন করায় আমরা উপকৃত হবো।

উপজেলার বড়দেশ্বরী গ্রামের কৃষক মহির উদ্দিন বলেন, ‘নদীর পূবপাড়ে আমাদের গ্রামের কৃষকের জমি। আমরা এসব জমি থেকে কোনো দিন রোপা আমন ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। কারণ বর্ষার সময় নদীর পানিতে আমাদের ফসল ডুবে যায়। প্রায় ৩০ বছর ধরে এ অবস্থা। কিন্তু এবার নদী খনন ও বাঁধ সংস্কারের একসাথে করায় ফসল ছাড়াও ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দূর হয়েছে। আশা করছি এবার রোপা আমন ফসল আমাদের ঘরে উঠবে। এমন আশার কথা জানিয়েছেন ওই এলাকার শত শত কৃষক।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল হোসেন বলেন, নদী খননের আগে ফসলহানি হতো প্রতিবছর। খননের ফলে কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রবিউল ইসলাম জানান, টাঙ্গন ও শুক নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণের কাজ প্রায় ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ে অবশিষ্ট কাজও শেষ হবে। প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতি অনেক সমৃদ্ধ হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন

সকল