২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

ক্ষমা না চাইলে বৃহত্তর আন্দোলন
বঙ্গবন্ধু পরিষদের সংবাদ সম্মেলন। - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ।

বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনটির নেতারা।

ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন-২ এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি এইচ এম তরিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফসহ আরো অনেক শিক্ষক।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, ‘ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ দায়িত্ব নেয়ার পর তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছি আমরা। এরই মধ্যে শেখ হাসিনা হল ও ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউটের ডিপিপি বহির্ভূত ভাবে নকশা পরিবর্তন ও অর্থ লেনদেনের বিষয়ে একটি সুপারিশ দিয়েছে ইউজিসি। সুপারিশ দেয়াতে তিনি উন্মাদ হয়ে গেছেন। তিনি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে আগের ভিসির ওপর দায় চাপাচ্ছেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তাহলে গত দুই বছরে তিনি কি করলেন? তার সময়েই তো নকশা পরিবর্তনসহ যত দুর্নীতি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয়দের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভরিয়ে ফেলেছেন। নিজের কাছের লোক দিয়ে সব অনিয়ম করে চলেছেন।

মশিউর রহমান বলেন, ‘ভিসি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীকে আক্রমণ করে কথা বলেছেন। স্পিকারসহ সরকারের কর্তাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। এমনকি ইউজিসি বিষয়েও বাজে মন্তব্য করেছেন। সরকারের উন্নয়নসহ সবকিছু বিষয়েই তিনি বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য করেছেন। তাই তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’

বঙ্গবন্ধু পরিষদের এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘অতিসত্তর এসব মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ‘ভিসির মদদে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছে এবং ভিসি নিজেও আইন অমান্য করে চলছেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নসহ পড়াশোনার পরিবেশ স্থবির হয়ে পড়েছে। আমরা চাই দুর্নীতিবাজ ভিসির শাস্তিসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হোক।’

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়া, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ভিসি হয়েও অনুপস্থিত থাকা, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমতো পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক প্রশাসনিক পদ দখল ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন, ভিসির অননুমোদিত ও অনিয়মতান্ত্রিক ফাউন্ডেশন ট্রেইনিং, ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে অতিরিক্ত খরচ, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, নানান অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দেয়ায় বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি ইউজিসিকে উদ্ধৃত করে প্রকাশিত ও প্রচারিত গণমাধ্যমের সংবাদকে মিথ্যা দাবি করেন এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন।


আরো সংবাদ



premium cement