আ’লীগকে ভোট চোর বলতে যেন আমাদের বাধ্য না করা হয় : জিয়া উদ্দিন বাবলু
- সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা
- ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ২১:৫৮
‘এরশাদের আমলে এদেশে কোনো সন্ত্রাস ছিল না। আমরা সন্ত্রাস করি না, কাউকে করতেও দিবো না। সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে সৈয়দপুরের শান্ত পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে ভোট কারচুপির চেষ্টা করবেন না। তাহলে বিএনপির মতো ভোট চোর বলতে বাধ্য হবো এবং সন্ত্রাসের উচিত জবাব দেয়া হবে।’
সরকারের বিরুদ্ধে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু। তিনি নীলফামারীর সৈয়দপুরে জাপার মেয়রপ্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল করিম ভূঁইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ টি ইউ তাজ রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ তনজিল আহমেদ, ছাত্র বিষয়ক সহ-সম্পাদক ফয়সাল দিদার দিপু, কেন্দ্রীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ, নীলফামারী জেলা যুবসংহতির সভাপতি রওশন মাহানামা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান ভুট্টু, সৈয়দপুর উপজেলা জাপা আহ্বায়ক ও সৈয়দপুর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক, উপজেলা জাপা'র সদস্য সচিব জি এম কবির মিঠু, জাপার আহ্বায়ক ঠিকাদার জয়নাল আবেদীন, কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের সদস্য রক্সি খান প্রমুখ।
বক্তব্যে জিয়া উদ্দিন বাবলু বলেন, ‘ভোটে কোনো রকম অনিয়ম করা হলে সৈয়দপুরের পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। জাতীয় পার্টির ঘাটি সৈয়দপুর থেকেই এ সরকারের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে এরশাদের সৈনিকরা। ভোটারদের যদি ভোট দিতে বাধা দেয়া হয় তাহলে বিএনপি যেমন অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ ভোট চোর তা সত্য প্রমাণিত হবে। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে সমর্থন ত্যাগ করে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হবে আমাদের।’
তিনি আরো বলেন, ‘সৈয়দপুর তথা রংপুর অঞ্চল এরশাদের এলাকা। জাতীয় পার্টির আমলে দেশব্যাপী যে উন্নয়ন হয়েছে তা আর কেউ করতে পারেনি। সে সময় জাপা নেতা ইজাহার আহমেদ সৈয়দপুর পৌর চেয়ারম্যান ছিলেন। তার সময় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলেই সৈয়দপুর আজ এত উন্নত। এরপর যারাই পৌর পরিষদে এসেছে তারা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত ছিল। তাই ৩০ বছরে সেই সৈয়দপুরই রয়ে গেছে। এবার আমাদের প্রার্থীকে নির্বাচিত করেন। উন্নয়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সৈয়দপুরের ইতিহাসে নাম লেখানো হবে।’
মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী একজন শিল্পপতি এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তিনি নিজের উপার্জিত বৈধ অর্থায়নে একাধিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন। তারপর রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। তাই মেয়র হয়ে তাকে আয় করতে হবে না। তিনি ব্যক্তিগতভাবে যে সাহায্য সহযোগিতা করেন তার সাথে সরকারি সুযোগ-সুবিধাগুলোর মাধ্যমে জনগণের চাহিদা পূরণ করতে পারবেন। পাশাপাশি যেহেতু এখানে জাতীয় পার্টির এমপি রয়েছেন। তার সহযোগিতায় বেশি বেশি করে উন্নয়ন কাজ করার মধ্য দিয়ে সৈয়দপুরকে একটি অত্যাধুনিক ও সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত করতে পারবেন।’
কেন্দ্রীয় অন্য নেতারা বলেন, গত দু’দিন থেকে সৈয়দপুরে অবস্থান করছি। দেখতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ পায়ে পা দিয়ে নির্বাচনে সহিংসতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। যেখানেই লাঙলের পথসভা হচ্ছে সেখানেই তারা নৌকার মিছিল নিয়ে গিয়ে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ পর্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছেন।
এ সময় নেতারা বলেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট না দিলে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটারদের হুমকি দিচ্ছেন। এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি নিজেরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করে দুটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়েছে, ২৫টি ভাংচুর করে ৪০ থেকে ৫০ জন জাপা নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। অথচ উল্টা বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে আমাদের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গভীর রাতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। তারপরও আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছি। তারা মূলত লাঙলের জয় নিশ্চিত জেনে গুণ্ডামি করে জনগণকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাঙলে ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখতে অপতৎপরতায় লিপ্ত। কিন্তু আপনারা ভয় করবেন না। ভোটের সকালেই গিয়ে নিজ নিজ ভোট দিবেন এবং গোপন কক্ষে কারো কথায় কান দেবেন না বা কেউ বাধা দিলে বা ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে ইভিএমের বোতাম টিপে দেয়ার চেষ্টা করলে প্রতিহত করবেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা নেবেন। কারণ তারা বিভিন্নভাবে কারচুপির অপচেষ্টা করবে। আমরা ঢাকা ও রংপুর থেকে যারা এসেছি, তারা ভোটের মাঠে আপনাদের সাথে থাকবো এবং সিদ্দিকুল আলমকে জয়ের মালা পরিয়েই ফিরবো ইনশাআল্লাহ। সকল ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে জনগণের বিজয় হবেই হবে।’