২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শেষ বিকেলে ঘরমুখী মানুষদের ক্লান্তি দূর করে পাখির কলতান

একটি জিগা গাছের ডাল-পালায় বসে শতশত পাখি কিচিরমিচির সুরে চারপাশ মুখরিত করে তোলে - ছবি : নয়া দিগন্ত

পড়ন্ত বিকেলে পশ্চিম আকাশ যখন আবির রাঙ্গা আল্পনায় ছেঁয়ে থাকে, অস্তমিত সূর্যকে আড়াল করে পৃথিবীকে আঁধারে ঢেকে দিতে সন্ধ্যা যখন সমাগত, পথচারীদের ঘরে ফেরার ব্যস্ততা যখন বেড়ে যায়, ভোঁ ভোঁ শব্দে ভেঁপু বাজিয়ে যানগুলো যখন শাঁই-শাঁই করে গন্তব্যের দিকে ছুটে চলে, তখন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী বাসষ্ট্যান্ডের একটি গাছ থেকে ভেসে আসে ক্ষুদ্রাকার এক প্রজাতির পাখির কলতান। যা ক্ষণিকের জন্য হলেও পথচারীদের ক্লান্তি দূর করে মনে ভালো লাগার আবেশ ছড়ায়।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার ঠিক আগে আগে বাসষ্ট্যান্ডের দক্ষিণ দিকের ১২/১৩ ফুট উচ্চতার একটি জিগা গাছের ডাল-পালায় বসে শতশত পাখি কিচিরমিচির সুরে চারপাশ মুখরিত করে তোলে। অনেক সময় গাছের ডালপালায় জায়গা না পেয়ে পাখিগুলো পাশে ঝুলে থাকা বৈদ্যুতিক লাইনের তারে সারিবদ্ধভাবে বসে আপন মনে সন্ধ্যার আগমনী গান শোনায়। পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাখিগুলোকে বিরক্ত না করায় মানুষ ও পাখির মধ্যে এক ধরনের সহবস্থান গড়ে উঠেছে। প্রায় এক মাস যাবত পাখিগুলো এখানে অবস্থান করছে। ক্ষুদ্রাকার পাখিগুলো দেখতে কিছুটা বাবুই পাখির মতো।

সকালে পাখিগুলো খাবারের সন্ধানে চারদিকে উড়ে যায়। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে ঝাঁক বেঁধে ফিরে আসে জিগা গাছটিতে। তখন তাদের ডাকাডাকিতে মুখরিত হয় ওই এলাকা। রাতের আধাঁর বাড়তে থাকলে একসময় পাখিদের ডাকাডাকি থেমে যায়। আলাপচারিতায় এমনটাই জানান পাখিদের বর্তমান আবাসস্থাল জিগা গাছের নিচে পান-সিগারেট বিক্রেতা আমিনুর রহমান।

দৈনন্দিন জীবনে কাঠের চাহিদা পূরণ আর ফসলি জমির পরিমাণ বাড়াতে নির্বিচারে গাছপালা কেটে ফেলাতে পাখিদের আবাসস্থাল সঙ্কট দেখা দিয়েছে- এ কথা সত্য। তবে বাসষ্ট্যান্ডের মতো ব্যস্ততম এলাকার ছোট্ট জিগা গাছটিকে কেন পাখিগুলো তাদের আবাসস্থাল হিসেবে বেছে নিয়েছে তা নিয়ে পথচারী ও স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত।

খাদ্য ও বাসস্থানের অভাব, অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশ এবং প্রজনন ক্ষেত্রে সমস্যার কারণে অনেক সময় পাখিরা একস্থান থেকে অন্যস্থানে চলে যেতে পারে, বাসষ্ট্যান্ডের গাছে আশ্রয় নেয়া পাখিদের ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকতে পারে মনে করেন ভূরুঙ্গামারী মহিলা কলেজের প্রাণি বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক শহিদুল ইসলাম।


আরো সংবাদ



premium cement