১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বয়স ১৩০ পার হলেও জোটেনি বয়স্ক ভাতা

বয়স ১৩০ পার হলেও জোটেনি বয়স্ক ভাতা - ছবি : নয়া দিগন্ত

বয়স তার ১শ’ ১০ বছর। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে দেহ। এই বয়সেও ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা। ইউপি চেয়ারম্যানের ভাষ্য বয়স্ক ভাতার আওতায় আনতে ওই ব্যক্তির নাম উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে পাঠানো হয়েছে। তবে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তলিকায় নাম নেই শতবর্ষী ওই বৃদ্ধের। শতবর্ষী বৃদ্ধের নাম তফিল উদ্দিন। তার বাড়ি কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের কানিপাড়া গনাইরকুটি (চৌধুরী বাজার) গ্রামে। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার জন্ম ১৯১১ সালের ২৯ নভেম্বর। জাতীয় পরিচয় পত্র নং-৪৯১০৬৩৮৪৬৬৭৩৮। সেই হিসেবে তার বর্তমান বয়স ১১০ বছর।

তবে এলাকাবাসী ও স্বজনদের দাবী জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম সাল ভুল লেখা হয়েছে। তার প্রকৃত বয়স ১৩০ বছর। ধারণা করা হচ্ছে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বয়স্ক নাগরিক যিনি একাধারে বৃটিশ শাসন আমল ও পাকিস্তান শাসন আমল দেখেছেন।

তফিল উদ্দিনকে বাড়িতে গেলে দেখা যায় তিনি কোরআন শরীফ পড়ছেন। কোরআন শরীফ পড়তে সমস্যা হয় কিনা জানতে চাইলে ভাঙ্গাভাঙ্গা গলায় জানান, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়ায় ইদানিং কোরআন পড়তে খানিকটা সমস্যা হচ্ছে।

তফিল উদ্দিনের ছেলে আবুল হাসেম ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ‘বাবার বয়স তো কম হয়নি। তিনি আর এখন একাএকা চলাফেরা করতে পারেন না। বাবা এখন পর্যন্ত বয়স্ক ভাতা বা অন্য কোনো সরকারি সুবিধা পাননি। আর কত বয়স হলে আমার বাবা সরকারি সুবিধা পাবেন? চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বারবার বলেও কোনো লাভ হয়নি। শুধু দেখবো বলেই তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করেছেন।’

তিনি আরো জানান, ‘আমরা পাঁচ ভাই ও পাঁচ বোন। সকলের আলাদা সংসার। বাবা আমার সাথেই আছেন। তিনি বার্ধক্য জনিত নানা রোগে আক্রান্ত। ভিটে মাটি ছাড়া আমার কোন জমি নাই। বাজারে একটি ছোট দোকান আছে। দোকানের সামান্য আয় দিয়ে স্ত্রী ও তিন সন্তানের ভরণপোষণ এবং লেখা পড়ার খরচ চালিয়ে বাবার চিকিৎসা খরচ বহন করা আমার পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে হয়তো বাবার চিকিৎসা চালানো সহজ হতো।’

সোনাহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী মোল্লা বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। নতুন তালিকার জন্য তার নাম পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত তিনি ভাতা পাবেন।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, ভূরুঙ্গামারীতে এত প্রবীণ ব্যক্তি আছেন সেটা জানতাম না। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল