১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অভিযোগে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত

-

মাদক সেবন, ব্যবসা মিনি ক্যাসিনোর কারবার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য ও গালিগালাজ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ৩ মাসে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জনকে সাময়িক এবং ১ জনকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৩ জন কর্মকর্তা এবং বাকিরা কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে এ ঘটনাকে চরম নৈতিক অবক্ষয় বলছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া বাসস্ট্যান্ডের মিনি ক্যাসিনোয় জুয়ার আসর থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত পরিবহন পুলের উপ-রেজিস্ট্রার মো. তারিকুল ইসলাম এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের সহকারী রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুর রহিমকে। পরে তারা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। এ অপরাধের দায়ে এই দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে।

এছাড়াও মাদকের সাথে জড়িত থাকায় সাময়িক বহিস্কার হযেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের কর্মচারী রায়হান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে কর্মরত কর্মচারী এনায়েত এবং পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মচারি রুবেল।

এদিকে গত ২৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখায় কর্মরত কর্মকর্তা (সেকশন অফিসার গ্রেড-১) মোক্তারুল ইসলামকে দুই বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় পরদিন ২৮ জুলাই রেজিস্ট্রার আবু হেনা মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়। সেই মামলায় তিনি গ্রেফতার হয়ে এখন জামিনে। এছাড়াও মাদকের সাথে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মচারী হাবিলদার সোহেল রানাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিনষ্টের দায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চার জন কর্মচারীকে সাময়িক বহিস্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা হলেন, সিনিয়র পিএ কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. রবিউল ইসলাম, নিরাপত্তা শাখার নিরাপত্তা প্রহরী এবং কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম মিয়া ও রসায়ন বিভাগের ল্যাব এটেন্ডেন্ট মো. মালেক মিয়া। সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে সেমিনার সহকারী মাসুম খানকে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, বিভিন্ অভিযোগে ১ জন কর্মচারীকে স্থায়ীভাবে এবং ৯ জনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনাকে চরম নৈতিক অবক্ষয় বলছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সচেতন নাগরিক কমিটি সনাকের রংপুর মহানগর সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, শুরু থেকেই এই রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। এখন মাদকের বিষয়টি ওপনে সিক্রেট। বিশ্ববিদ্যালয়টির সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চরম নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। এখনই এর লাগাম টেনে ধরতে না পারলে অনেক মাশুল গুনতে হবে ভবিষ্যতে।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিন অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ জানান, বহিস্কৃতদের কাউকে এখনো কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়গুলো তদন্ত করবার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের জন্য আদালতের আদেশক্রমেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement