২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পা দিয়ে স্বপ্ন জয়ের আশা প্রতিবন্ধী আয়েশার

আয়েশা আক্তার - সংগৃহীত

জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তবে হাল ছাড়েননি জীবনের। দু’হাত না থাকলেও পা দিয়েই সংসারের সকল কাজকর্ম অনায়াসেই করে যাচ্ছেন গাইবান্ধার সাঘাটার আয়েশা আক্তার। ১৯৯৩ সালে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পূর্ব কচুয়ায় এক গরিব পরিবারে জন্ম নেয়া প্রতিবন্ধী আয়েশা জেলার সাঘাটা উপজেলার উদয়ন মহিলা কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করার পর বর্তমানে গাইবান্ধা সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান শাখার মাস্টার্স ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী।

পা দিয়েই স্বপ্ন জয় করার চেষ্টা করতে থাকা আয়েশার আশা সরকারি চাকরি করে স্বাবলম্বী হওয়া। আয়েশারা চার বোন এক ভাই। সবাই তার ছোট, পড়ালেখা করে। আবার কেউ বাবার ক্ষুদ্র ব্যবসায় সহযোগিতা করে। বাড়ি বলতে টিনের দোচালা ঘর দুটি। একটিতে আয়েশা তার ভাই-বোনদের নিয়ে থাকেন অপরটিতে থাকেন তাদের বাবা-মা।

প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়ায় নানা প্রতিকূলতার মাঝে তাকে বড় হতে হয়। দু’হাত না থাকায় বাবা, মা ও পরিবারের সবাই আয়েশার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান। অন্যের সাহায্য ছাড়া একা চলার ভাবনা থেকেই হাতের কাজগুলো আস্তে আস্তে পা দিয়ে করার চেষ্টা করতে থাকেন আয়েশা। এখন পা দিয়েই স্বাভাবিক মানুষের মতো সব কাজ করতে পারেন তিনি।

কাঁথা সেলাই, ল্যাপটপ চালানো, মোবাইলে কথা বলা, রান্না করা, গোসল করাসহ সব কাজ করছেন অন্যের সাহায্য ছাড়া। 

ছোট বেলা থেকেই পড়ালেখার স্বপ্ন ছিল তার। ৫ম শ্রেণিতে ওঠার পরে বাবা আব্দুল লতিফ তাকে সার্কাসে দিয়ে দিতে চাইলেও যায়নি আয়েশা। সব বাধা অতিক্রম করে পা দিয়েই লেখাপড়া চালিয়ে তিনি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে প্রথম বিভাগ পেয়ে ডিগ্রি পাস করে বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করছেন আয়েশা।

পড়ালেখা শেষ করে দেখাতে চান প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় তারাও পারে সব কিছু। সেজন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চান তিনি।

এলাকাবাসীরা জানান, দু’হাত বিহীন জন্ম নেয়া আয়েশা আক্তার এখন তার এলাকার জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছেন। মানসিক ও সামাজিক বাধাকে অতিক্রম করে স্বপ্নের রাস্তায় পা দিলেও অভাব এখন তার বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভাবের কারণে পড়ালেখা, বই-খাতা কেনার খরচ চালাতে কষ্টে আছে তার পরিবার।

মেধাবী ও স্বপ্নচারী প্রতিবন্ধী আয়েশার স্বপ্ন জয়ের চেষ্টা সফল করতে তাকে একটি সরকারি চাকরি দেয়ার দাবি জানান এলাকাবাসীরা।

অদম্য আত্ববিশ্বাসী আয়েশা আক্তার বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই সমাজে অন্যদের মতো হতে চেয়েছি। তার অনেকটাই অর্জন হয়েছে। পড়ালেখা করে বাবা-মায়ের অভাবী সংসারের সহযোগিতা করার জন্য একটা সরকারি চাকরি করার স্বপ্ন দেখে এসেছি সবসময়।’

বাবা আব্দুল লতিফ ও মা ফাতেমা বেগম জানান, আয়েশা ছোট বেলা থেকেই কষ্ট করে সংসারে বড় হয়েছে। তার আশা ছিল অন্য মেয়েদের মতো স্বাভাবিকভাবে কাজ কর্ম করবে এবং সমাজে বোঝা হয়ে থাকবে না। সে তার চেষ্টায় সফল হতে চলেছে। তার চেষ্টায় মাস্টার্সে পড়াশোনা করছে।

সাঘাটা উদয়ন মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা আয়েশাকে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য সুযোগ সুবিধা দেয়ার চেষ্টা করেছি। সে এখন গাইবান্ধা কলেজে এমএ পড়ছে এটা আমাদের যেমন গর্ব তেমনি নিজেও মানুষ হিসাবে সমাজে অন্যদের মতো ভূমিকা রাখতে পারছে।’

আয়েশার এমন সাহসিকতায় অন্য প্রতিবন্ধীরাও উৎসাহিত হবেন জানিয়ে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো এমদাদুল হক প্রামাণিক শিক্ষা উপ-বৃত্তিসহ বিভিন্ন সুযোগ দিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির কথা জানান। সূত্র : ইউএনবি।


আরো সংবাদ



premium cement
আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত

সকল