অপহৃত চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার রামেক আইসিইউতে, গ্রেফতার ২
- নাটোর সংবাদদাতা
- ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ২০:৩৯
নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেন ও তার দুই ভাইকে অপহরণ করে নির্যাতনের ঘটনায় গুরুতর আহত দেলোয়ার হোসেনকে সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তার ভাই মজিবুর রহমান মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভোরে ১৫ থেকে ২০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে নাটোর থানায় মামলা দায়ের করেছে। পরে পুলিশ রাতেই বাবু ও সুমন নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে। তারা জেলার সিংড়া উপজেলার শেরকোল এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব রুবেলের অনুসারী। অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব স্থানীয় এমপি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের আপন শ্যালক।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রথমে এককভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন অধ্যক্ষ লুৎফুল হাবিব রুবেল। রোববার পর্যন্ত তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি।
সোমবার সকালে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী দেলোয়ার হোসেন নাটোর শহরে এলে প্রথমে তার দুই ভাইকে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে কালো রঙের মাইক্রোবাসে কয়েকজন যুবক জোর করে তুলে নিয়ে যান। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদের গ্রামে ছেড়ে দেয়া হয়। অপরদিকে দুই ভাইয়ের খবর না পেয়ে প্রথমে দেলোয়ার হোসেন জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ঘটনাটি জানান। বিকেল ৪টার দিকে দেলোয়ার হোসেন তার আরেক সহোদর ভাইকে নিয়ে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের প্রতিলিপি জমা দিতে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের নিচ থেকে তাকে মারতে মারতে নাটোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে সেখানে রাখা কালো রঙের মাইক্রোবাসে করে তাকেও তুলে নিয়ে যান।
হামলাকারীরা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণকারীরা সেই কালো মাইক্রোবাসে ব্যাপক নির্যাতন মারপিট করে সোমবার সন্ধ্যার পর সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের সাঐল গ্রামে তার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায়।
খবর পেয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম নিজে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে নাটোর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে দায়ীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।
একজন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচ থেকে প্রকাশ্যে দিনের বেলা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।