২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনাদের বেআইনি হত্যার তদন্ত শুরু

আফগান গ্রামবাসীর সাথে কথা বলছেন ব্রিটিশ সামরিক কর্মকর্তারা। (ফাইল ফটো) - ছবি : বিবিসি

আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনা সদস্যদের হাতে কথিত বেআইনি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ব্রিটেনে এক তদন্ত শুরু হয়েছে। এই তদন্ত কমিটির প্রধান বলেছেন, ‘সামরিক বাহিনী এবং দেশের সুনাম রক্ষার জন্য এই তদন্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

বুধবার (২২ মার্চ) থেকে এই তদন্তের কাজ শুরু হয় এবং লর্ড জাস্টিস হ্যাডন-কেভ এ ব্যাপারে প্রাসঙ্গিক তথ্যসহ এগিয়ে আসার জন্য জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

লর্ড জাস্টিস হ্যাডন-কেভ ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলোকে ‘অত্যন্ত গুরুতর’ বলে বর্ণনা করেন।

২০১০ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে আফগানিস্তানে মোতায়েন ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সেস (কমান্ডো) বাহিনীর পরিচালিত রাতের বেলার অভিযানগুলোর ব্যাপারে এই তদন্তে অনুসন্ধান চালানো হবে।

আইন বহির্ভূত হত্যা এবং সেগুলোকে পরবর্তীকালে ধামাচাপা দেয়া – দু’টি অভিযোগই এই তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে।

তিনি বলেন, ‘এটি স্পষ্টতই গুরুত্বপূর্ণ যে আইন ভঙ্গ করেছে যে তাকে তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। একইভাবে, যারা কোনো দোষ করেননি তাদের মাথার ওপর থেকেও সন্দেহের কালো মেঘ দূর করতে হবে।’

বিবিসির তৈরি প্রতিবেদন

এই বিচারক গত বছর বিবিসির তৈরি কিছু ‘প্রতিবেদন উল্লেখযোগ্য’ বলে বর্ণনা করার পর এই তদন্তটি শুরু হলো। বিবিসির প্রতিবেদনগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে যে আফগানিস্তানে ছয় মাস দায়িত্ব পালনকালে ব্রিটিশ কমান্ডো বাহিনীর একটি স্কোয়াড্রনের হাতে সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে কমপক্ষে ৫৪ জন আফগান নিহত হয়েছেন।

কমান্ডো বাহিনীর বিশেষভাবে ডেলিবারেট ডিটেনশন অপারেশন বা ডিডিও নামে পরিচিত নৈশ অভিযানের দিকে এই তদন্ত কমিটি নজর দেবে। লর্ড জাস্টিস হ্যাডন-কেভ জানান, তদন্তের অনেক শুনানির প্রকৃতি ‘অত্যন্ত সংবেদনশীল’ হওয়ার কারণে শুনানির গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে। ডিডিও-তে ব্রিটিশ বাহিনীর হাতে নিহত দুই পরিবারের আইনি চ্যালেঞ্জও তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে।

হত্যার ন্যায়বিচার চায় পরিবার

আফগান কৃষক আব্দুল আজিজ উজবাকজাই, যার ছেলে এবং পুত্রবধূকে ২০১২ সালে এক নৈশ অভিযানে ব্রিটিশ স্পেশাল ফোর্সেসের সদস্যরা হত্যা করেছিল। যার নাতি ইমরান এবং বিলাল ওই অপারেশনে গুরুতরভাবে আহত হয়েছিল।

তিনি বিবিসিকে বলেছেন, এই তদন্ত ‘আমার ছেলে ও পুত্রবধূ এবং ইমরান ও বিলালের বাবা-মাকে তাদের কাছে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।’

উজবাকজাই বলেন ‘কিন্তু ১১ বছর পর আমি এখনো চাই যে ব্রিটিশ সৈন্য এবং অন্য কর্মকর্তারা এগিয়ে এসে সত্য প্রকাশ করুক। আমরা এখনো জানি না কেন আমাদের টার্গেট করা হয়েছিল এবং আমরা এটা জানতে চাই।’

ডিডিওতে নিহতদের পরিবারের কিছু সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করেছে একটি আইনি প্রতিষ্ঠান লেই ডে। এর একজন পার্টনার টেসা গ্রেগরি বলছেন, তার ক্লায়েন্টরা এই তদন্তের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

গ্রেগরি বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে গোপনীয়তা এবং ধামাচাপার মধ্য দিয়ে আমাদের ক্লায়েন্টরা তাদের প্রিয়জনের হত্যার ন্যায়বিচারের জন্য অক্লান্ত লড়াই করেছে এবং তারা আশা করে যে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ বাহিনীর কাজকর্ম এবং তার কমান্ডের ওপর একটি উজ্জ্বল আলোকপাত হবে।’

অপারেশন নর্থমুর

দু’হাজার চৌদ্দ সালে রয়্যাল মিলিটারি পুলিশ ‘অপারেশন নর্থমুর’ শুরু করেছিল, যার লক্ষ্য ছিল বেআইনি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগগুলো তদন্ত করা। কিন্তু কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই ২০১৯ সালে ওই তদন্তকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়।

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা বিভাগ সে সময়ে বলেছিল, অপারেশন নর্থমুরের পরিধিতে ৬০০ টিরও বেশি কথিত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

রয়্যাল মিলিটারি পুলিশের তদন্তকারীরা গত বছর বিবিসিকে বলেছিলেন, অপারেশন নর্থমুরের সময় প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তাদের প্রচেষ্টা ব্রিটিশ সামরিক বাহিনী বাধাগ্রস্ত করেছিল। অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিরক্ষা বিভাগের বিবৃতিকে তারা বিতর্কিত বলে বর্ণনা করেছিল।

বেআইনি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ছাড়াও তদন্তকারীরা ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপ এবং রয়্যাল মিলিটারি পুলিশের তদন্ত পর্যাপ্ত ছিল কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
ময়মনসিংহে বাসচাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত রমজানের প্রথমার্ধে ওমরাহ পালন করলেন ৮০ লাখ মুসল্লি পোরশায় বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী যুবক লাশ ফেরত গণতন্ত্রের আন্দোলন ন্যায়সঙ্গত, এতে আমরা বিজয়ী হবো : মির্জা ফখরুল নিঝুমদ্বীপে পুকুরে পাওয়া গেল ১০ কেজি ইলিশ ঈদে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় চলবে ১৫ ফেরি ও ২০ লঞ্চ দি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের রক্তদাতাদের সংবর্ধনা প্রদান কক্সবাজারে ওরিয়ন হোম অ্যাপ্লায়েন্সেসের ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত সৈয়দপুরে ফেসবুক লাইভে থেকে যুবকের আত্মহত্যা! মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হুন্ডির মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা পাচার, গ্রেফতার ৫ ১৫ বছর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

সকল