১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নাটোরে পৃথক ঘটনায় ৩ লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ১

নাটোরে পৃথক ঘটনায় ৩ লাশ উদ্ধার, গ্রেফতার ১। - প্রতীকী ছবি

নাটোরের পৃথক ঘটনায় তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, আরেকজনের লাশ মহাসড়কের পাশে পাওয়া গেছে এবং অপরজনের মৃত্যু হয়েছে রাইচমিলের ফিতায় পেঁচিয়ে। কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার উধনপাড়ায় বোমা কালাম খ্যাত আবুল কালামকে (৫০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষায় রাইচমিলের ফিতায় পেঁচিয়ে মৃত্যু হয়েছে রাইচমিলের চালক রমজান আলীর (৪৫) এবং একই উপজেলার কাছিকাটা এলাকার মহাসড়কের পাশ থেকে আবু সাঈদের (৪৫) লাশ উদ্ধার করেছে।

কালাম হত্যার ঘটনায় তার সৎ ছেলে আল আমিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাটোরের লালপুর উপজেলার বোমা কালাম খ্যাত আবুল কালাম প্রথম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ায় ১০ বছর আগে একই উপজেলার বড় বাদকয়া গ্রামের জহিম উদ্দিনের মেয়ে মোছা: আরজিনা খাতুনকে (৩৫) বিয়ে করে ঘর জামাই ছিলেন। তাদের সংসারে আবির নামে নয় বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশীদের থেকে কালামকে হত্যার খবর পায় তার ছোট ভাই সহিদুজ্জামান সালাম ও চাচাত ভাই মাসুদ রানা। খবর পেয়ে বাাড়ির পেছনে রক্ত, কালামের ব্যবহারের শীতের টুপি ও স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখলেও কালামকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সহিদুজ্জামান সালাম লালপুর থানায় নিহতের স্ত্রী আরজিনা, আরজিনার পিতা জহিম উদ্দিন (৬০), মাতা মোছা: জালেমা (৫৫) ও আরজিনার আগের পক্ষের ছেলে আল আমিনকে (১৬) অভিযুক্ত করে মামলা করেন।

পুলিশ তাৎক্ষণিক আল আমিনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি স্বীকার করেন যে তার মায়ের সাথে সৎ বাবার পারিবারিক কলহের কারণে তিনি সৎ বাবাকে হত্যা করেন। পরে আল আমিনের কথা অনুযায়ী রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মজনু কল্লার পুকুর পাড় থেকে কালামের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এলাকাবাসী জানায়, বহুবছর আগে কালামের বাড়িতে বড় ধরনের বোমা বিস্ফোরণের পর থেকে তিনি এলাকায় বোমা কালাম নামে পরিচিত।

লালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোনোয়ারুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবুল কালাম সমাজে বোমা কালাম নামে পরিচিত। তাকে হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

অন্য দিকে শনিবার সকাল আনুমানিক ১১টার দিকে গুরুদাসপুরেন ধারাবারিষা ইউনিয়নের হাজি বাজারে রাইচমিলের ফিতায় আঠা লাগাতে গিয়ে রমজান আলীর হাত জড়িয়ে যায় ফিতায়। পরে তার পুরো শরীর ফিতাতে আটকে গেলে শরীরের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয়রা মিলের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।

গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আব্দুল মতিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

অপরদিকে একই উপজেলার কাছিকাটা মোড় এলাকায় বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশ থেকে আবু সাঈদ নামের এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন জানান, এলাকাবাসী একটা লাশ বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের পাশে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের তৎপরতায় তাৎক্ষণিক লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

সিআইডি ছাড়াও পিবিআই ও পুলিশের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।

তিনি আরো জানান, আবু সাঈদ বগুড়া জেলার কাহালু উপজেলার আলোকছত্র গ্রামের আবু জাফরের ছেলে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে লাশ পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement