১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহী গণসমাবেশস্থলে উপচে পড়া জনস্রোত

রাজশাহী গণসমাবেশস্থলে উপচে পড়া জনস্রোত। - ছবি : নয়া দিগন্ত

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা। এরই মধ্যে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে (হাজী মুহম্মদ মুহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ) লোকে লোকারণ্য। কারণ ঐতিহাসিক এই মাঠেই আয়োজন করা হয় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে লোক সমাগমও বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার মধ্যেই মাদরাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উপচে পড়ে জনস্রোতে। মাঠে ঠাঁই না পেয়ে আশপাশের এলাকায় জনস্রোত ছড়িয়ে পড়ে। গণসমাবেশস্থল থেকে পশ্চিমে সিঅ্যান্ডবি মোড়, পূর্বে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, সাহেববাজার, সোনাদিঘী মোড়, দক্ষিণে পদ্মা নদীর পাড় ও উত্তরে ঘোষপাড়া মোড়সহ আশপাশের এলাকায় জনস্রোতে ছড়িয়ে পড়ে।

সরকারের পদত্যাগ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা, জ্বালানি তেল-গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে নানা ধরণের শ্লোগান দিতে থাকেন নেতাকর্মীরা। গায়ে গেঞ্জি, হাতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে গণসমাবেশে যোগ দেন নেতাকর্মীরা।

৪৬ বছর আগে ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহীর এই ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠ থেকেই মরণ বাঁধ ফারাক্কা অভিমুখে লাখো জনতার লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই দিন মাদরাসা মাঠ থেকে লংমার্চ শুরু হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে গিয়ে শেষ হয়। সকাল ১০টায় রাজশাহী থেকে শুরু হয় জনতার পদযাত্রা। হাতে ব্যানার আর ফেস্টুন নিয়ে অসংখ্য প্রতিবাদী মানুষের ঢল নামে রাজশাহীর রাজপথে। সেদিন ভারতবিরোধী নানা শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে গোটা এলাকা।

দেশব্যাপী ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠেয় গণসমাবেশের আগে সর্বশেষ গণসমাবেশ ছিল রাজশাহীতে। বিএনপি নেতারা আগেই জানিয়েছিলেন, রাজশাহীর গণসমাবেশ হবে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ। এতে ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানো হবে। আটটি শর্তে রাজশাহীতে বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে গণসমাবেশে বক্তব্য রাখেন।

গণসমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম ঠেকাতে গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয় বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেন। তাই গত বুধবার সকাল থেকেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা রাজশাহীতে আসতে শুরু করেন। তারা রাজশাহীতে আবাসিক হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টারে থাকার সুযোগ না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করেন। যারা যেভাবে পেরেছেন, নিজেদের মত করে অবস্থান নিয়ে থেকেছেন। পথে পথে পুলিশি বাধার কারণে অন্তত ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে গণসমাবেশে আসেন নেতাকর্মীরা। কিন্তু তারপরও তাদের মধ্যে যেনো কোনো ক্ষোভ বা আক্ষেপ নেই। একে তো পরিবহন ধর্মঘট, তার ওপর নিজস্ব ও ভাড়া করা পরিবহনে বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিনে ও রাতে রাজশাহী আসার পথে বিভিন্ন স্থানে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। এতে তারা বিরাট ভোগান্তিতে পড়েন।

বিভিন্ন দূরবর্তী এলাকা থেকে বহু কষ্টে নেতাকর্মীরা রাজশাহী পৌঁছার পর শাহমখদুম ঈদগাহ মাঠ, পদ্মা নদীর ধারে ও নগরীর অন্যান্য ফাঁকা জায়গায় খোলা আকাশের নিচে রাত কাটান। এরই মধ্যে লাখ লাখ মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন বলে নেতারা দাবি করেছেন। কেউ কেউ না ঘুমিয়েই রাত পার করেছেন। চিড়া, মুড়ি খেয়ে অনেকে সকালের নাস্তা সেরেছেন।

পথচারী ও উৎসুক মানুষের মন্তব্য ছিল- দল ও দলের নেতাকে কতটা ভালোবাসলে পুলিশি বাধা, ধর্মঘট ও নানা ভোগান্তি সত্ত্বেও গণসমাবেশে জনস্রোত হয়, তা সহজেই অনুমেয়। আগামীতে ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে রাজশাহীতে বিএনপির এই গণসমাবেশ।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল!

সকল