২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজশাহীতে আইএসের নামে মসজিদ কমিটিকে হুমকি!

রাজশাহীতে আইএসের নামে মসজিদ কমিটিকে হুমকি! - নয়া দিগন্ত

রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া জামে মসজিদের কমিটি পরিবর্তনের কথা বলে কথিত আইএসের (ইসলামিক স্টেট) নামে তিনটি চিরকুটে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে টিকাপাড়া মসজিদ কমিটির সদস্য ও নামাজ পড়তে আসা সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

প্রথম চিরকুটে বাংলায় লেখা রয়েছে, ‘টিকাপাড়া মসজিদের কমিটি পরিবর্তন করুন।’ এরপর ইংরেজিতে লেখা রয়েছে ‘আইএস’, পরে লেখা আছে- ‘হুমকি’। ১২ নভেম্বর দ্বিতীয় চিরকুট দেয়া হয়। তাতে লেখা রয়েছে, ‘চোর কমিটি পরিবর্তন করুন।আইএস।’ লেখা রয়েছে।
সর্বশেষ ১৯ নভেম্বর প্রাপ্ত তৃতীয় চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘মসজিদ কমিটি পরিবর্তন করুন। ছোট হুমকি বড় পরিণিতি (পরিণতি) হয়।’ এই চিরকুটেও ‘আইএস’ লিখে পাশে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে এবং নিচে একটি আরবি হরফের মতো পেঁচানো স্বাক্ষর রয়েছে।
এ বিষয়ে টিকাপাড়া মসজিদের সদস্য ও নিয়মিত মুসল্লি সেলিম কচি গণমাধ্যমকে বলেন, তিনটি চিরকুট পেয়েছে মসজিদ কমিটি। এনিয়ে আমরা বেশ আতঙ্কেই রয়েছি। তিনি বলেন, উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে থেকেই মসজিদে নামাজ পড়তে হচ্ছে।
মসজিদের আরেক মুসল্লি নাসিমুল হক বলেন, কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বারবার বলার পরেও তারা বিষয়টি আমলেই নিচ্ছেন না। বিষয়টি ছোটভাবে দেখে ভালো করে তদন্ত করা দরকার। কোনো ঘটনা ঘটে গেলে এর দায় কি তারা এড়াতে পারবেন?
মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল বারী গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫, ১২ ও ১৯ নভেম্বর পর্যায়ক্রমে তিনটি চিরকুট প্রদান করা হয়েছে। চিরকুটগুলো টাকার মধ্যে মুড়ানো অবস্থায় দানবাক্সে পাওয়া গেছে। প্রতি জুমআ’র নামাজের পর দানবাক্সের টাকা গণনার সময় এই চিরকুটগুলো পাওয়া গেছে। তবে গত শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) এ ধরনের আর কোনো চিরকুট আসেনি।
তিনি জানান, তিনটি চিরকুট কমিটির অর্থ সম্পাদক আব্দুল মোমিনের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এমন ঘটনায় বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মমিন বলেন, চিরকুটগুলো পরপর তিনটি জুমআ’র নামাজের পর টাকার মধ্যে পাওয়া গেছে। কারা এর পেছনে আছে তা জানা নেই। তবে মসজিদের অনেকেই আছেন যারা বর্তমান কমিটিকে পছন্দ করেন না। মসজিদে সিসি ক্যামেরা নেই। এছাড়া শত শত মানুষ আসে এ মসজিদে নামাজ পড়তে। সবমিলিয়ে বোঝা মুশকিল।
তিনি আরো জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বারবার এ বিষয়ে তাগাদা দেওয়া হয়েছে। তবুও তারা বিষয়টি হাল্কাভাবে নিয়েছেন। এমন ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া কোনোভাবেই সমীচীন হবে না বলে জানান তিনি।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আইনাল হক পিটার গণমাধ্যমকে বলেন, সভাপতি সাহেবের সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। বুধবারই মসজিদ কমিটির এক জরুরি সভা করার কথা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এটি হয়তো এলাকার কোনো ছোট ছেলেরা ফাইজলামি করে টাকার মধ্যে চিরকুট লিখে পাঠিয়েছে। কিন্তু পরপর তিনটি চিরকুট আসায় আমরা বিষয়টি সিরিয়াসলি নিয়েছি।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা অবশ্যই পুলিশকে জানানো উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement