২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শিবগঞ্জের সামিউলের অর্থাভাবে মেডিক্যালে ভর্তি অনিশ্চিত

শিবগঞ্জের সামিউলের অর্থাভাবে মেডিক্যালে ভর্তি অনিশ্চিত - ছবি- সংগৃহীত

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেডিক্যালে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গাংগইট গ্রামের সামিউল ইসলাম। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধা তালিকায় তার অবস্থান ২৭০০তম। তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু দরিদ্র কৃষক সছানোয়ার হোসেনের ছেলে সামিউলের ডাক্তারি পড়া অনিশ্চিত। কারণ মেডিক্যালে ভর্তি ও ডাক্তারি পড়ার জন্য এত টাকা জোগার করার সামর্থ্য নেই সামিউলের কৃষক বাবার। ফলে আশা আর হতাশার দোলাচলে দুলছে সামিউলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন।

সামিউল মেলেনিয়াম স্কলাস্টিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থেকে মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন ৭০.৫ নম্বর। শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে পরিবারের আর্থিক অনটন সামিউল ইসলামের নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু জাতীয় কবি কাজী নজরুলের মতো আবারো আর্থিক সঙ্কটই দুশ্চিন্তায় ফেলেছে তাকে। তাই তো স্বপ্ন ছোঁয়ার অদম্য প্রত্যয়ে নিঃসঙ্কোচে যে কারো সহযোগিতা গ্রহণে প্রস্তুত সামিউল।

সামিউল ইসলামের বাবা দরিদ্র কৃষক ছানোয়ার হোসেন। মা মোছা: নাজিরা বিবি গৃহিনী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার বাবা। কৃষিকাজের মাধ্যমে বাবা যা আয় করেন তা দিয়ে টেনেটুনে সংসার চলে। তাকে মেডিক্যালে ভর্তি ও ডাক্তারি পড়ার খরচ জোগানোর সামর্থ্য নেই তার বাবার। বাড়িতে একটি ছোট টিনের ঘর। ওই ঘরে থাকেন পরিবারের সবাই।

সামিউলের বাবা ছানোয়ার বলেন, সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে ছেলেকে মেডিক্যালে পড়ার খরচ চালানো আমার কাছে দুঃস্বপ্ন। তবে স্বপ্ন দেখি আমার ছেলে ডাক্তার হবে। কিন্তু টাকার অভাবে ছেলেকে ভর্তি করাতে পারবো কিনা জানি না।

সামিউল ইসলাম ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। গ্রামের স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণী উত্তীর্ণ হওয়ার পর কিচক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও বগুড়া সরকারি শাহসুলতান কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। ছোট থেকেই তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। স্বপ্ন পূরণে তিনি লেখাপড়ায় বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন। স্বপ্ন পূরণের এতো কাছে এসেও টাকার অভাবে স্বপ্ন ভেঙে যাবে তা মেনে নিতে পারছেন না সামিউল ইসলাম।

সামিউল বলেন, স্কুল ও কলেজে পড়াশুনার সময় অর্থের অভাবে একসাথে প্রয়োজনীয় সব বই কেনা সম্ভব হতো না। একটা ভালো পোশাক কিনে পরা হয়নি। আমার জন্ম গরিবের ঘরে।

তিনি আরো বলেন, মেডিক্যালে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পর এখন খুব চিন্তা হচ্ছে। ভর্তিতে অনেক টাকা। বইয়ের অনেক দাম। বগুড়া মেডিক্যালে পড়াশুনা করতে গিয়ে থাকা-খাওয়াসহ অনেক খরচ। এত টাকা আমার হতদরিদ্র বাবা কোথায় পাবেন? কিভাবে পড়ালেখার খরচ চালাব বুঝতে পারছি না। তবে ডাক্তার হয়ে এলাকার অসহায় মানুষের পাশাপাশি দেশের মানুষের সেবা করার স্বপ্ন তার।


আরো সংবাদ



premium cement