ধর্ষণ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাথে ছেলের সামনে ভুক্তভোগীর বিয়ে
- রাজশাহী ব্যুরো
- ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:৫৭, আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ২১:১৭
রাজশাহীতে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামির সাথে ভুক্তভোগী নারীর বিয়ে হয়েছে। শনিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার ধর্ষণ মামলার ওই আসামি দিলীপ খালকোর সাথে ভুক্তভোগীর বিয়ে সম্পন্ন হয়।
এই বিয়েতে উপস্থিত ছিল ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া ভুক্তভোগী নারীর আট বছরের ছেলেও। বর্তমানে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ালেখা করে ছেলেটি।
এরআগে হাইকোর্ট ধর্ষণ মামলার আসামি ও ভুক্তভোগীর মধ্যে বিয়ের আয়োজন করতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপারের (তত্ত্বাবধায়ক) প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন।
গত ২২ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিয়ের পর ওই বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। আদালত উভয় পক্ষের সম্মতিতে এ আদেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার সুব্রত কুমার বালা এই বিয়ের আয়োজন করেন। বেলা ১১টার দিকে কনেপক্ষকে কারাফটকে আসার কথা বলা হয়। একটি নসিমনে চড়ে কারাগারের সামনে আসেন তারা। নির্ধারিত সময়ের একটু পরে কনেসহ দুই পক্ষের ১৪ জন কারাফটকে উপস্থিত হন। তাদের সাথে ছিল ধর্ষণের ফলে জন্ম নেয়া ভুক্তভোগী নারীর আট বছরের ছেলেও। উভয় পক্ষকে কারা তত্ত্বাবধায়কের নির্দেশে তার কার্যালয়ে বসানো হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার পর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
বিয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বর জানান, ভালো লাগছে, আমাদের বিয়ে হয়ে। আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন সারা জীবন সুখে-শান্তিতে থাকতে পারি। আর কনে তার প্রতিক্রিয়ায় শুধু ‘ভালো লাগছে’ বলে জানান।
দিলীপ খালকো এবং ভুক্তভোগী নারী সম্পর্কে আত্মীয়। তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের একপর্যায়ে ২০১১ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ওই নারী। এরপর থেকে দিলীপ আর বিয়ে করতে রাজি হননি। বিষয়টি নিয়ে সালিশ করার কথা বলে সময়ক্ষেপণ করা হয়। শেষ পর্যন্ত সালিশ বৈঠক না হওয়ায় ভিকটিম ওই বছরের ২৫ অক্টোবর গোদাগাড়ী থানায় দিলীপের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন।
এ মামলার জেরে দিলীপের যাবজ্জীবন সাজা হয়। আট বছর জেল খাটা হয়ে গেছে তার। এখন দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। কনের সম্মতিতেই আদালত তাদের বিয়ের আদেশ দেন। এখন বিয়ের কাগজপত্র উচ্চ আদালতে গেলে জামিন পেতে পারেন দিলীপ খালকো, বলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সিনিয়র জেলসুপার সুব্রত কুমার বালা সাংবাদিকদের জানান, আমার ধারণা, এই কারাগারে এটিই প্রথম বিয়ে। ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবেই এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অতিথি ও কর্মচারীদের মিষ্টিমুখ করানোর ব্যবস্থা করা হয়। বিয়ের প্রতিবেদন দ্রুত আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা