১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গুড় কারিগরদের প্রতারণায় শীতে ৬ গুন চিনির চাহিদা বাড়ে

গুড় কারিগরদের প্রতারণায় শীতে ৬ গুন চিনির চাহিদা বাড়ে - নয়া দিগন্ত

রাজশাহীর পুঠিয়ায় কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন মাস অন্য সময়ের চেয়ে চিনি বিক্রি বৃদ্ধি পায় ৬ গুণ। শীত মৌসুমে চিনির চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী ডিলারের পাশাপাশি এক ডজন সাব ডিলারের আর্বিভাব ঘটে কারণ অস্বাভাবিক হারে চিনির চাহিদা বেড়ে যায়। কিছু অসাধু গুড় তৈরির কারিগররা বেশি লাভের আশায় খেজুরের রসে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে তা বাজারজাত করায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, দেশে বেসরকারি একাধিক চিনি আমদানি ও প্রস্তুতকারকদের পরিবেশক হিসাবে পুঠিয়াতে রয়েছে তিনজন ডিলার। তাদের সাব ডিলার হিসাবে রয়েছে তিনজন ব্যবসায়ী। অপরদিকে প্রতি শীত মৌসুমের শুধুমাত্র তিন মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে নতুন করে আরো চারজন চিনির ডিলার ও ১০ জন সাব ডিলার তাদের ব্যবসা শুরু করেন। বছরের ৯ মাস ওই উপজেলা জুড়ে দৈনিক প্রায় ১৬ টন চিনির চাহিদা থাকে। আর শীত মৌসুমের তিন মাস সেই চাহিদা বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় দৈনিক প্রায় ৮০ টনে।

কমল সরকার নামে একজন ডিলার বলেন, ওই অঞ্চলে শীত মৌসুমে চিনির চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। যার কারণে দেশের অনেক চিনি তৈরির কারখানার মালিকরা চুক্তি মোতাবেক অস্থায়ী ডিলার দেন। আমরা স্থায়ীভাবে তিনজন চিনির ডিলার আছি। আর আমার চিনিগুলো কয়েকজন সাব ডিলারের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকি। শীত মৌসুমে কেনো এতো চিনির চাহিদা বাড়ে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিনির মৌসুমী সাব ডিলার বলেন, এখন চিনির চেয়ে খেজুর গুড়ের দাম দ্বিগুন হওয়ায় ওই এলাকার প্রতিটি খেজুর গুড় তৈরির কারিগররা নিয়মিত চিনি কিনেন। এদের মধ্যে বেশীর ভাগ গুড় তৈরির কারিগররা খেজুরের রসে গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৫০ কেজি চিনি ব্যবহার করেন।

ঝলমলিয়া বাজারে খেজুরের গুড় বিক্রি করতে আসা আলী হোসেন নামের একজন বলেন, এবার শীত শুরুর আগে বেশি লাভের আশায় অনেক গাছিরা খেজুরের গাছের রস আহরণের পুরো প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেছেন। তবে মেঘলা আকাশের কারণে শীত না পড়ায় এখনো তেমন রস আসছে না। তাই গাছিরা এই সামান্য রসের সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি মিশিয়ে খেজুরের গুড় তৈরি করা শুরু করেছে। আবার অনেকে গত বছরের পুরোনো ‘র’ বা লালি রং আর চিনির মিশ্রণে পাটালি গুড় তৈরি করছেন। তিনি আরো বলেন, গুড়ের রং ভালো হলে বাইরে থেকে আসা পাইকাররা বেশি দামে কিনতে আগ্রহী হয়। তাই গুড়ের রং তৈরি করতে একটিু বেশি পরিমাণে সোডা ও হাইড্রোজ দিতে হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ খেজুরের গুড়ে চিনি মেশানো বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান।


আরো সংবাদ



premium cement