২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাবনা-সিরাজগঞ্জের ৭৫ হাজার গরু অবিক্রিত

পাবনা-সিরাজগঞ্জের ৭৫ হাজার গরু অবিক্রিত -

পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের গো-খামারী, চাষি, মওসুমি ব্যবসায়ী ও ব্যাপারিদের মহামারি করোনাভাইরাস ও বন্যার কারণে কোরবানির ঈদে গরু বিক্রি কম হওয়ায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে। এছাড়া ক্রস হাইব্রিড ও দেশি মাঝারি জাতের প্রায় ৭৫ হাজার অবিক্রিত গরু নিয়ে তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেক ব্যাপারি খামারি ও চাষিদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করতে পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।

এ অঞ্চলের বেড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, আটঘড়িয়া, ঈশ্বরদী, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তাড়াশ. চৌহালী, কামারখন্দ উপজেলার খামারি, চাষিরা ও মওসুমি ব্যবসায়ীরা ক্রস জাতের পাবনা ব্রিড, অস্ট্রেলিয়ান-ফ্রিজিয়ান ব্রিড, ইন্ডিয়ান হরিয়ান ব্রিড, পাকিস্তানি সাহিয়াল ব্রিড ও দেশি জাতের গরু পালন করেন। সারা দেশে এ অঞ্চরের গরুর খ্যাতি ও চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এবার দেশে মহামারি করোনাভাইরাস ও বন্যার কারণে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রস হাইব্রিড ও দেশি মাঝারি জাতের গরু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকায় গরুর দরপতনে এ অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার গরুর ব্যাপারি ও খামারি মূলধন হারিয়ে পথে বসেছেন। তবে মওসুমি গরু ব্যবসায়ীরা এবার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

গবাদিপশু সমৃদ্ধ পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের খামারি ও চাষিরা জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় আড়াই লাখ কোরবানির পশু দেশের বিভিন্ন হাটে সরবরাহ করেছিলেন। গরু ব্যবসায়ীরা খামারি ও চাষিদের কাছ থেকে নগদ ও বাকিতে গরু কিনে বিক্রির জন্য সড়ক ও নৌপথে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার পশুরহাটে নিয়ে যায়। চাহিদার তুলনায় গরুর সরবরাহ বেশি থাকায় ঈদের দুই দিন আগে দেশের বিভিন্ন পশুরহাটে গরুর দাম কমে যায়। এতে অনেক ব্যবসায়ী ও খামারি বাধ্য হয়ে লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করেছেন।

এদিকে ঈদের তিনদিন আগে ঢাকার পশুরহাটগুলোতে গরুর সঙ্কট দেখা দেয়। এ খবরে ব্যাপারিরা রাতারাতি অনেক গুরু কিনে ট্রাকে সড়ক পথে ঢাকায় গরু পাঠান। জ্যামে ট্রাক আটকা পড়ায় ঈদের দিন সকালে ট্রাক ঢাকা পৌঁছায়। কিছু কিছু গরু বিক্রি হলেও অনেকেই বিক্রি করতে না পেরে গরু ফেরত নিয়ে এসেছেন।

একাধিক গরু ব্যবসায়ী ও খামারির সাথে কথা বলে জানা যায়, একদিকে মহামারি করোনাভাইরাস ও বন্যা অন্যদিকে হাটে চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেশি হওয়ায় ঈদের দেড় মাস আগে থেকেই গরুর দাম ব্যাপকভাবে কমে যায়। ট্রাক ও নৌকার ভাড়াসহ পথ খরচ উঠানোর জন্য ব্যবসায়ী ও খামারিরা লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করেছেন।

বেড়ার নতুনপাড়া গ্রামের হায়দার আলী ঢাকার গাবতলী পশুরহাটে ৭০টি গরু তুলেছিলেন। এরমধ্যে ৩৫টি গরু ১৫ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে বিক্রি করেছেন। অবিক্রিত অবশিষ্ট ৩৫টি গরু ফেরত নিয়ে এসেছেন। একই গ্রামের মন্টু ব্যাপারির ৪৩টি গরুর ২১টি বিক্রি হয়েছে, ২২টি ফেরত নিয়ে এসেছেন। তার লোকসান হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। নদী পাড়ের সোলেমান ব্যাপারির ১০৫টি গরুর মধ্যে ৫৫টি বিক্রি হয়েছে। অবিক্রিত ৫০টি গরু ফেরত নিয়ে এসেছেন। তার লোকসান হয়েছে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকা।

বেড়ার রাকশা গ্রামের কালা ব্যবসায়ী ৮টি গরু বিক্রি করে এক লাখ টাকা, হাতিগাড়া গ্রামের আকরাম ও আলতাফ ব্যবসায়ী লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করেছেন।

সাঁথিয়া উপজেলার সেলন্দা গ্রামের খামারি রজব আলী হাইব্রিড জাতের ২০টি গরু চট্রগ্রাম হালিশহর হাটে নিয়েছিলেন। তার ৮টি গরু বিক্রি হয়েছে। অবিক্রিত ১২টি অনেক কষ্ট করে ফেরত নিয়ে এসেছেন। তার লোকসান হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা।

পাবনা জেলার দুই সহস্রাধিক গরু ব্যবসায়ী ও খামারি প্রত্যেকের ৫০ হাজার থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোকসান হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

এদিকে অনেক খামারি বাকি টাকা না পাওয়ার আশঙ্কায় ব্যাপারিদের কাছ থেকে গরু ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেক ব্যাপারি খামারি ও চাষিদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
শ্যালকদের কোপে দুলাভাই খুন : গ্রেফতার ৩ তীব্র গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না এবার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে বললেন এমপি জয় পঞ্চপল্লীর ঘটনায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা দরকার দ্রুততম সময়ের মধ্যে করার নির্দেশ সরকার ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে : মির্জা ফখরুল ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া

সকল