২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বাগানে আম ছিদ্রকারী মাছির আক্রমণ : হতাশায় চাষীরা

বাগানে আম ছিদ্রকারী মাছির আক্রমণ - ছবি : নয়া দিগন্ত

রাজশাহীর পুঠিয়ায় এ বছর অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করায় বাগানগুলোতে ব্যাপক আম হয়েছে। একমাত্র ঘূর্ণিঝড় আমফান ছাড়া এ বছর প্রকৃতিক দূর্যোগও অনেক কম হয়েছে। তবে শেষ মুহূর্তে বাগানগুলোতে ব্যাপক হারে আম ছিদ্রকারী মাছির আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে করে অনেক চাষী পরিপক্ক আমগুলো রক্ষা করতে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন।

এলাকার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, ল্যাংড়া, ফজলি ও আশ্বিনা আমে মাছির আক্রমণ বেশি দেখা যাচ্ছে। অনেক বাগানের মধ্যে কিছু আমের গঠন দু’ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি আমের উপরের অংশ স্বাভাবিক থাকলেও নিচের অংশ কুচকে এবং বিবর্ণ কালো রঙ ধারন করছে। কিছু আম ফেটে যাচ্ছে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই নিচের অংশ থেকে আস্তে আস্তে পচন শুরু হয়। এর ৭/৮ দিনের মধ্যে পুরো আম পচে ঝড়ে পড়ছে। এদিকে গত ১৫ মে থেকে গুটি জাতীয় আম দিয়ে পাড়া শুরু হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক গোপালভোগ, রানী প্রসাদ, লক্ষণ ভোগ, হিমসাগর বা খিরসাপাত আম পাড়ছেন চাষীরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়া উপজেলায় নতুন ও পুরাতন মিলে প্রায় সাড়ে আট শ’ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ হেক্টরের বেশি। বৈরি আবহাওয়ার কারণে গত মৌসুমে এই এলাকায় আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল সাড়ে চার হাজার মে. টন। এবং উৎপাদন হয়েছে প্রায় চার হাজার মে. টন আম। তবে এ বছর বেশির ভাগ বাগানগুলোতে ব্যাপক আম ধরেছে। অনুকুল আবহাওয়া বিরাজ করলে প্রায় সাত হাজার মে. টন আম উৎপাদন আশা করা হচ্ছে। তবে শেষ মুহূর্তে বাগানগুলোতে আম ছিদ্রকারী মাছি দমন করতে ব্যর্থ হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।

আম চাষী আমির আলী বলেন, আমার প্রায় দু’একর আম বাগান লিজ নেয়া রয়েছে। বিগত দিনে ওই বাগানগুলোতে কোনো প্রকার রোগবালাই ছিল না। গত তিন বছর যাবত বিভিন্ন প্রকার রোগের পাশাপাশি আম ছিদ্রকারী মাছির আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কৃষি অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক সঠিক পরিচর্যা এবং দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ৫/৬ দফা ব্যবহার করেও কোনো প্রকার সুফল পাইনি। যার কারণে এবার সেক্স ফেরামিনট্যাব ব্যবহার শুরু করেছি।

শহিদুল ইসলাম নামে অপর একজন আম বাগান মালিক বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার একটু দেরিতে আম পাকছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময়ে গুটিসহ গোপালভোগ, রানী প্রসাদ, লক্ষণ ভোগ, হিমসাগর বা খিরসাপাত আম প্রায় শেষ হয়ে যেত। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে ঈদের পর থেকে আমের বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। অনেক আম এখনো পরিপক্কই হয়নি। যার করণে এবার মাছির আক্রমণ একটু বেশি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূইয়া বলেন, প্রথমমত আম বাগানগুলো অপরিস্কারের কারণে সেখানে মাছিরা অবস্থান করে। এর মধ্যে সবচেয়ে সঠিক ও পরিবেশ সম্মত পদ্ধতি হচ্ছে সেক্স ফেরামিনট্যাব ব্যবহার করা। এছাড়া এবামেকটিন জাতীয় কীটনাশক সঠিকমাত্রায় স্প্রে করলে মাছির আক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।


আরো সংবাদ



premium cement