২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মায়ের অসুস্থতার দোহাই দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স-নাটক

-

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ড্রাইভার নিরব হোসেনের বিরুদ্ধে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে নাটক করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি মায়ের অসুস্থতার দোহাই দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়ি যায়। ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্সটি দুর্ঘটনার কবলে পড়লে নাটক সামনে চলে আসে।

জানা যায়, সম্প্রতি নিরবের মা মরিয়ম বেগম (৬০) তাড়াশে ছেলের কাছে বেড়াতে আসেন। হঠাৎ অসুস্থ্ হলে তাকে দ্রুত তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার আরো অবনতি হওয়ায় ২২ মে তাকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়। এরপর ড্রাইভার নিরব হাসপাতালের অন্য অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মোহাম্মদ মোমিনকে সাথে নিয়ে বগুড়ার উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু এই অসুস্থতার ঘটনাকে তাদের সাজানো নাটক বলা হচ্ছে।

জানা যায়, তারা অ্যাম্বুলেন্স যোগে বগুড়ায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে না গিয়ে রংপুর সদরে নিরবের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রংপুরে পৌঁছে মায়ের সাথে নিরব নেমে যায়। এরপর রংপুর থেকে ড্রাইভার মোমিন অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে তাড়াশে ফিরছিলেন। পথে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানা সদরে আইল্যান্ডের সাথে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সটির সামনের অংশ ভেঙে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশ অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মোমিনকে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বুকে ও মাথায় গুরুতর আঘাত পান মোমিন।

গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি আমাদের হেফাজতে আছে। কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে তাদের অনুকূলে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

এদিকে এ বিষয়ে তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করেছে। তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জামাল মিয়ার নেতৃত্বে ওই তদন্ত কমিটি শনিবার দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রওনা হয়েছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স বাণিজ্য এই নতুন নয়। মাঝে মধ্যেই ড্রাইভাররা রোগী অন্য হাসপাতালে নেয়ার নামে ভাড়া বাণিজ্য করে থাকে।

হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে নতুনটি এক বছর যাবত অচল। তারপরেও ড্রাইভার নিরব হোসেনকে আউট সোর্সিংয়ে নিয়মিত বেতন দেয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অ্যাম্বুলেন্স মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকা বিল দেখানো হলেও প্রায় প্রায়ই অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল থাকে।

তাড়াশ পৌর সদরের বাসিন্দা লূৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তাড়াশ হাসপাতালের একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স কোনো মতে সচল থাকলেও ড্রাইভারদের খামখেয়ালিতে সেটিও এখন অচল হয়ে গেলো। করোনা দুর্যোগের এই সময়ে রোগী স্থানান্তরে আর কোনো গাড়ি অবশিষ্ট রইলো না।

ড্রাইভার মোমিন চিকিৎসারত অবস্থায় মুঠোফোনে বলেন, সহকর্মীর অনুরোধে তাকে রংপুরে নিয়ে গেলে এ দুর্ঘটনার শিকার হই। আমি ভুল করেছি, ক্ষমা চাই।

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জামাল মিয়ার বলেন, অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনার বিষয়ে আমরা ইতোমধ্যেই গোবিন্দগঞ্জের উদ্দ্যেশে রওনা হয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement