২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টুইটারের বিকল্প হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে হাইভ

-

মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার থেকে অনেকেই বিদায় নিচ্ছেন। ইলন মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণের পর বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপ স্টোরে শীর্ষ ২০ অ্যাপে স্থান করে নিয়েছে হাইভ। ২২ বছর বয়সি ক্যাসান্ড্রা পপ ২০১৯ সালে হাইভ প্রতিষ্ঠা করেন।
সরাসরি টুইটারের ক্লোন না হয়ে জেন জি প্রজন্মের সোশ্যাল অ্যাপ হিসেবে জায়গা করে নিতে চায় হাইভ। এতে ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ও মাইস্পেসের মতো বিভিন্ন জনপ্রিয় অ্যাপের ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। হাইভের চমৎকার দিক হচ্ছে প্রোফাইলে মিউজিক যুক্ত করার ফিচার, যা পরবর্তী সময়ে অনেক সাইট অনুকরণ করেছে।
এই অ্যাপটির বিশেষত্ব হচ্ছে এটি টুইটারের মতো স্রেফ টাইমলাইনভিত্তিক নয়। মেইন ফিডের পাশাপাশি এতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গাড়ি, মিউজিক, ফ্যাশন, পোষা প্রাণী, ক্র্যাফট, বই, ভ্রমণ, গেমিং, আর্ট, ফুড ও অন্যান্য টপিকের কনটেন্ট উপভোগের সুযোগ পায় ব্যবহারকারীরা। এ ছাড়া কোনো পোস্টে লাইক, কমেন্ট ও রিপোস্ট করার পাশাপাশি হ্যাশট্যাগের সুযোগও আছে। এ ছাড়াও সহজ নেভিগেশন ফিচারের কারণে সোশ্যাল নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করা আরামদায়ক। ফেসবুকের মিউচুয়াল ফ্রেন্ডের মডেল অনুসরণ না করে টুইটারের ফলোয়ারভিত্তিক মডেল অনুসরণ করে হাইভ।
মাস্কের টুইটার অধিগ্রহণ সম্পন্নের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাইভের ব্যবহারকারী বাড়তে শুরু করে। অ্যাপ ডাটা বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্সর টাওয়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়, আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েডের মোট সাত লাখ ৩৩ হাজার ইনস্টলের দুই লাখ ১৪ হাজারই হয়েছে গত ৩০ দিনে। আরেকটি লক্ষণীয় দিক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে নতুন প্রজন্মের সোশ্যাল অ্যাপটি। সেন্সর টাওয়ার বলছে, হাইভের সাম্প্রতিক ইনস্টলের ৮৬ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের।
হাইভের সাম্প্রতিক এ উত্থান আরো স্পষ্ট অ্যাপ স্টোরে। আগে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোনের অ্যাপ স্টোরে হাইভের অবস্থান ছিল ৩৩৮। বর্তমানে অ্যাপ স্টোরে যুক্তরাজ্য ও কানাডায় অ্যাপটির অবস্থান যথাক্রমে ১৭ ও ২৪। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সোশ্যাল অ্যাপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় স্থান হাইভের।
অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কের চেয়ে হাইভ ভিন্ন আরেকটি জায়গায়। অন্যদের মতো পার্সোনালাইজেশন অ্যালগরিদম ও ক্রোনোলজিভিত্তিক ফিড কিংবা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মনিটাইজ করে না হাইভ। তার বিপরীতে প্রোফাইলে বেশ কিছু ফিচার যুক্ত করতে অর্থ ব্যয় করতে হয়। এসব ফিচার নিতে ৯৯ সেন্ট থেকে শুরু করে ১ ডলার ৯৯ সেন্ট ব্যয় হয়।
নতুন কর্মী নিয়োগ দেবে টুইটার

অধিগ্রহণের পর প্রথম তিন সপ্তাহে সাড়ে সাত হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের মাধ্যমে সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলেন ইলন মাস্ক। গত ২৭ অক্টোবর চার হাজার ৪০০ কোটি ডলারে টুইটার কেনেন ইলন মাস্ক। এর পরপরই প্রধান নির্বাহী (সিইও) পরাগ আগরওয়াল ও প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা নেড সেগালকে বরখাস্ত করে নিজেই সিইও পদ দখল করেন মাস্ক। ২০২১ সালের শেষ দিকে টুইটারে কর্মী সংখ্যা ছিল সাত হাজার। বর্তমানে তা কমে দুই হাজারে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি টুইটারের কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন ইলন মাস্ক। সেখানে তিনি বলেন, কর্মী ছাঁটাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কর্মীদের কাজে উৎসাহিত করতে ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিক্রয় বিভাগে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। যারা সফটওয়্যার তৈরি ও ব্যবহারে অভিজ্ঞ ভবিষ্যতে তারাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবেন।
কিন্তু টুইটারে কী ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং বা বিক্রয়ে ভূমিকা রাখতে নতুন কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে সে বিষয়ে মাস্ক বিস্তারিত কিছু জানাননি। মাস্ক বলেন, টেসলার মতো টুইটারের সদর দফতর টেক্সাসে সরিয়ে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। যদি সদর দফতর টেক্সাসে স্থানান্তর করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় গ্রাহক বা টুইটার ব্যবহারকারীদের কাছে ভুল ধারণা উপস্থাপন হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement