বাংলাদেশ-পাকিস্তান আন্তঃযোগাযোগ সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক
- ইকতেদার আহমেদ
- ২৫ জুন ২০২৪, ০০:০৫, আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১৩:৪৯
১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় বাংলাদেশ পূর্ব বাংলা হিসেবে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৫৬ সালে নামকরণ হয় পূর্ব পাকিস্তান। পূর্ব-পাকিস্তান পাকিস্তানের পাঁচটি প্রদেশের পূর্ব অঞ্চলের বাংলা ভাষাভাষী মুসলিম জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি প্রদেশ ছিল। পূর্ব-পাকিস্তান চারটি প্রদেশ সমন্বয়ে গঠিত পশ্চিম-পাকিস্তান হতে ভারতের ভূখণ্ড দ্বারা বিছিন্ন ছিল। পশ্চিম-পাকিস্তানের চারটি প্রদেশ যথা- সিন্ধু, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ যা বর্তমানে ‘খাইবার পাকতুনখোয়া’ নামে অভিহিত একটি অপরটির সংলগ্ন। পশ্চিম-পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের প্রতিটির আলাদা ভাষা রয়েছে। যেমন- সিন্ধুর ক্ষেত্রে সিন্ধি, পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে পাঞ্জাবি, বেলুচিস্তানের ক্ষেত্রে বেলুচ এবং ‘খাইবার পাকতুনখোয়া’ এর ক্ষেত্রে পশতু। উর্দু পাকিস্তানের কোনো প্রদেশের প্রধান ভাষা নয়।
১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ ব্রিটিশ ভারতের বাংলার দুবারের মুখ্যমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের উত্থাপিত লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রটির আত্মপ্রকাশ। ব্রিটিশ ভারতের বাংলার অন্তর্ভুক্ত পূর্ব-বাংলা পশ্চিম-বাংলা হতে অনগ্রসর বিবেচনায় ইংরেজ শাসকরা পূর্ব-বাংলা ও আসাম সমন্বয়ে ঢাকাকে রাজধানী করে ১৯০৫ সালে একটি পৃথক প্রদেশ গঠন করেন। বাংলা বিভাজন পশ্চিম-বাংলার নেতৃস্থানীয় হিন্দুদের স্বার্থে হানিকর এই যুক্তিতে তারা এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিভাজন রুখতে আন্দোলনে লিপ্ত হয়। তাদের আন্দোলন বেগবান হলে ১৯১১ সালে বিভাজন রহিত করা হয়।
ব্রিটিশ ভারত স্বাধীনতা পূর্ববর্তী কেবিনেট মিশন প্ল্যানে যে প্রস্তাব দেয়া হয় তাতে উল্লেখ ছিল- মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ সমন্বয়ে মুসলিম রাষ্ট্র এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ সমন্বয়ে হিন্দু রাষ্ট্র গঠিত হবে। এর বাইরে যেসব করদমিত্র রাজ্য রয়েছে সেগুলোর শাসককে তাদের ইচ্ছামাফিক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বা হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রে যোগ দেয়ার অধিকার দেয়া হয়। ভারত বিভাজনকালীন বাংলা ও পাঞ্জাব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ ছিল বিধায় উভয় প্রদেশ কেবিনেট মিশন প্রস্তাব অনুযায়ী পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হবে এটি বাস্তবসম্মত ছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাদ সাধেন কংগ্রেস নেতারা। কংগ্রেস নেতাদের পক্ষ থেকে দাবি উঠে বাংলা ও পাঞ্জাব বিভাজন করা না হলে তারা ভারত বিভাজন মেনে নেবেন না। ভারত বিভাজন-উত্তর বাংলা ও পাঞ্জাবে হিন্দু-মুসলিম যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয় এর ক্ষত উভয় ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য বিভীষিকাময়। বাংলা বিভাজনের ক্ষেত্রে হিন্দু নেতাদের অবস্থান তাদের বঙ্গভঙ্গের অবস্থানের সাথে স্ববিরোধী।
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশের সড়ক, রেল এবং ক্ষেত্রবিশেষে নৌ-যোগাযোগ ছিল। ভারতবর্ষ বিভাজনের পর পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এবং একমাত্র বিমান ও সমুদ্রপথে যোগাযোগ চালু থাকে। পূর্ব-পাকিস্তানের সাথে পশ্চিম-পাকিস্তানের সড়ক পথে ব্যবধান এক হাজার মাইলের বেশি ছিল বিধায় বিমান যোগাযোগ ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ ছিল।
বর্তমানে পাকিস্তানের জনসংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি হলেও ১৯৭০ সালে পূর্ব-পাকিস্তানের জনসংখ্যা পশ্চিম-পাকিস্তানের চেয়ে বেশি ছিল। আর এ কারণে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে পূর্ব-পাকিস্তানের আসন সংখ্যা পশ্চিম-পাকিস্তান হতে বেশি ছিল। এ নির্বাচনে পূর্ব-পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগ পশ্চিম-পাকিস্তানে কোনো আসনপ্রাপ্ত হয়নি। অপর দিকে পশ্চিম-পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি পূর্ব-পাকিস্তানে কোনো আসনপ্রাপ্ত হয়নি। নির্বাচন পরবর্তী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পাকিস্তানের শাসনক্ষমতাপ্রাপ্তিতে বঞ্চিত হওয়ায় রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হয় এবং অতঃপর ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে উভয় দেশ দূত বিনিময় করে ও উভয় দেশের রাজধানীতে দূতাবাস খোলা হয়।
১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের রাজধানী থেকে একযোগে প্রকাশিত তিনটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যথাক্রমে আজিজ আহমেদ, স্মরণ সিং ও ড. কামাল হোসেন স্বাক্ষরিত চুক্তিটি ছিল সমঝোতামূলক। ওই চুক্তিতে উল্লেখ ছিল- পাকিস্তান সরকার কর্তৃক যেকোনো অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকলে তার জন্য তারা নিন্দা জানান এবং অনুশোচনা প্রকাশ করেন। চুক্তিটিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর বরাতে উল্লেখ ছিল- বাংলাদেশের জনগণ অতীতের ভুল ক্ষমা করে এবং ভুলে গিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে অবদান রাখবে। অনুরূপ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের বরাতে উল্লেখ ছিল- তিনি চান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংসতা ও ধ্বংসের বিষয়ে জনগণ অতীত ভুলে যাক এবং আবার নতুন করে শুরু করুক। এ চুক্তির মূল উপপাদ্য বিবেচনায় নিয়ে দু’টি ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশ নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড় করে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত প্রশস্ত করবে পাকিস্তানের জনমানুষের পক্ষ থেকে এমন ধারণা ব্যক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক সমন্বয়ে গঠিত ১৯টি প্রতিনিধিদল এ যাবৎকাল পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশস্থ পাকিস্তান দূতাবাস ও দেশটির পিআইডি (প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট) ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পাকিস্তান সফর করে। সর্বশেষ গত ৫ থেকে ১২ মে পর্যন্ত আট সদস্যবিশিষ্ট যে প্রতিনিধিদল পাকিস্তান সফর করে; সফরের প্রথম পর্যায়ে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক নগরী লাহোর এবং অতঃপর রাজধানী ইসলামাবাদ ও পর্যটন নগরী মারি সফর করে। সফরটির মূল উদ্দেশ্য ছিল উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, পর্যটন, বাণিজ্যসহ সম্ভাব্য সব ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ।
দেশটিতে সফর শুরুর প্রাক্কালে ২ মে ২০২৪ পাকিস্তান হাইকমিশন, ঢাকায় সফরের সামগ্রিক বিষয়াদি নিয়ে হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ ও প্রেস কাউন্সিলর ফসিউল্লাহ খান বিস্তারিত আলোকপাত করেন। আট সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল হজরত শাহজালাল রহ: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা থেকে ফ্লাই দুবাই এয়ারলাইন্সে ৪ মে ২০২৪ রাত ১০টায় দুবাই হয়ে লাহোরের উদ্দেশে যাত্রা করে। প্রতিনিধিদল পরের দিন ৫ মে ২০২৪ সকাল ১০টায় লাহোর বিমানবন্দরে পৌঁছলে তথায় প্রতিনিধিদলকে লাহোর পিআইডি কর্মকর্তারা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে প্রতিনিধিদল আবাসনের জন্য নির্ধারিত লাক্সাস গ্র্যান্ড হোটেলের উদ্দেশে যাত্রা করে। হোটেলে পিআইডি লাহোরের উদ্যোগে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজ শেষে বিশ্রামের পর প্রতিনিধিদল লাহোর পিআইডির সহকারী পরিচালক মিস আলিসবা ও প্রটোকল অফিসার সাবিরসহ আততারি-ওয়াগাহ সীমান্তে ভারতের বিএসএফ ও পাকিস্তান রেঞ্জার্সের উদ্যোগে প্রতিদিন অপরাহ্ন থেকে সন্ধ্যা অবধি অনুষ্ঠিত উভয় দেশের পতাকা অবনমন অনুষ্ঠান অবলোকন করে। সীমান্তটি লাহোর থেকে ২৪ কিলোমিটার এবং ভারতের অমৃতসর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের একটি মার্র্চিং অনুষ্ঠান যা ‘সিলি ওয়াক অনুষ্ঠান’ নামে অভিহিত। প্রতিদিন অনুষ্ঠানটি অবলোকনের জন্য উভয় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অগণিত দর্শকের সমাগম ঘটে। উভয় দেশের সীমান্ত থেকে দর্শনার্থীদের অনুষ্ঠান অবলোকনের সুবিধার্থে সুবিশাল গ্যালারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সীমান্তরক্ষীদের বিভিন্ন কসরত প্রদর্শনের সময় উভয় দেশের দর্শনার্থীরা বিপুল হর্ষধ্বনির মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের সীমান্তরক্ষীদের উজ্জীবিত করেন। দর্শনার্থীদের নির্দিষ্ট অঙ্কের অর্থ দেয়ার মাধ্যমে টিকিট কেটে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে হয়। প্রতিদিন উভয় দেশের অধিবাসীদের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক বিদেশী পর্যটক অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করে থাকেন। এটি উভয় দেশের পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় এর মাধ্যমে উভয় দেশ দেশী ও বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এ ধরনের অনুষ্ঠান সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ বাংলাদেশ-ভারতের বেনাপোল-বনগাঁ সীমান্তে আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে; তবে অপরাপর দেশের অনুষ্ঠান ভারত ও পাকিস্তানের আততারি-ওয়াগাহর মতো আকর্ষণীয় নয়।
ওয়াগাহ সীমান্ত থেকে প্রতিনিধিদলটি প্রত্যাবর্তনের পর পাকিস্তান মুসলিম লীগ যুব শাখার সভাপতি কামরান সাঈদ উসমানির বাসভবনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও নৈশভোজে যোগদান করে। কামরান সাঈদ উসমানি পাঞ্জাব বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্টের সহসভাপতি। তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ কটন টেক্সটাইল শিল্প খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, পাকিস্তানে উন্নতমানের তুলা ও সুতি কাপড় প্রস্তুত হয়। বাংলাদেশ এ দু’টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে পাকিস্তান থেকে আমদানি করতে পারে। তা ছাড়া মানবদেহে উপকারী পিঙ্ক সল্ট একমাত্র পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলে খনি থেকে আহরণ করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পিঙ্ক সল্টের চাহিদা রয়েছে। ভারত পাকিস্তান থেকে পিঙ্ক সল্ট আমদানি করে বিভিন্ন দেশে রফতানি করে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর পাকিস্তান ভারতে পিঙ্ক সল্ট রফতানি বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ পিঙ্ক সল্ট আমদানিতে আগ্রহী হলে পাকিস্তান যুক্তিসঙ্গত মূল্যে সরবরাহে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, পাকিস্তানে উৎপাদিত অলিভ অত্যন্ত উন্নতমানের। পৃথিবীর যেসব দেশ অতীতে স্পেন থেকে অলিভ আমদানি করত এর বেশ কিছু দেশ বর্তমানে পাকিস্তান থেকে অলিভ আমদানি করে থাকে। বাংলাদেশ অলিভসহ বাদামজাতীয় ফল-মূল আমদানিতে আগ্রহী হলে পাকিস্তান প্রতিযোগিতা মূল্যে সরবরাহে সচেষ্ট থাকবে। তিনি প্রতিনিধিদলকে জানান, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে সুতা, গম, কেমিক্যাল, প্লাস্টিক উপকরণ, ফল, চামড়া, মূলধনী যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক পাখা, চাল, মসলা, মাছ, পেট্রোলিয়াম পণ্য, পোশাক, আসবাব, কাটলারি, অস্ত্রোপচার সরঞ্জাম প্রভৃতি আমদানি বাড়াতে পারে।
কামরানের বক্তব্যের জবাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের প্রধান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ চায় পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্যবৈষম্য দূর করে আরো বেশি পণ্য রফতানির সুযোগ বৃদ্ধি, যাতে বাণিজ্যবৈষম্য সহনীয় হয়। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে চা, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য, তৈরী পোশাক, সিরামিক পণ্য, জুতা, চামড়াজাত পণ্য ও পাটজাত পণ্য রফতানি হয়। এসব পণ্যের পাকিস্তানে ব্যাপক চাহিদা থাকায় রফতানি বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয় বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত ইলেকট্রনিক্স পণ্য যথা- টিভি, ফ্রিজ, এয়ারকুলার, মাইক্রোওভেন, ওয়াশিং মেশিন প্রভৃতি আফ্রিকার বিভিন্ন দেশসহ ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। পাকিস্তান বাংলাদেশ থেকে ইলেকট্রনিক্স পণ্য আমদানি করে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে যাতে উভয় দেশের বর্তমান বাণিজ্যে এক বিলিয়ন ডলার ও ১০ মিলিয়ন ডলারের বিপুল ব্যবধানের হ্রাস ঘটে।
উভয়ের আলোচনার সময় কামরান আক্ষেপের সাথে উল্লেখ করেন, পাকিস্তানে পর্যটনের দিক থেকে আকর্ষণীয় অনেক স্থান রয়েছে, যেমন- লাহোর দুর্গ, ফয়সাল মসজিদ, করাচি সৈকত, বাদশাহী মসজিদ, খাইবার পাস, মহেঞ্জোদারো, তক্ষশীলা, নীলম ভ্যালি, হুনজা ভ্যালি, কঙ্গন ভ্যালি, ওয়াজির খান মসজিদ, মুরি পাহাড়, জিয়ারাত, শাহজাহান মসজিদ, শান্দুর পাস, মেহেরগড়, হরপ্পা প্রভৃতি। এসব স্থানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পর্যটকের আগমন ঘটলেও সে তুলনায় বাংলাদেশের পর্যটক অত্যন্ত নগণ্য। এর কারণ হিসেবে তিনি ভিসা জটিলতা ও সরাসরি বিমান যোগাযোগের অনুপস্থিতির বিষয় উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়- বাংলাদেশেও ভ্রমণে অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থানসহ পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সোনারগাঁয়ের পানামনগর, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, সুন্দরবন, কক্সবাজার, সিলেটের চা-বাগান, বিছনাকান্দি, লালা খাল, হাকালুকি হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, রাতারগুল, জাফলং, শ্রীমঙ্গল, সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটা, মনপুরা দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি প্রভৃতি। পাকিস্তানের ভ্রমণপিপাসুর সংখ্যা স্বল্প হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল কামরানের মতো একই কারণের কথা ব্যক্ত করে। (চলবে....)
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক
E-mail: [email protected]
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা