২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
স্মরণ

ফুটবল জাদুকর সামাদ

-

আজ কিংবদন্তি খেলোয়াড় ফুটবল জাদুকর সামাদের ৫১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৪ সালের এ দিনে তিনি ৬৯ বছর বয়সে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরের বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। তার পুরো নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। জন্ম বিহারের পূর্ণিয়া জেলায়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান সামাদের শৈশব থেকেই প্রবল আগ্রহ ছিল ফুটবলের প্রতি। মাত্র ১১ বছর বয়সেই ফুটবলে তার অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। ১৭ বছর বয়সে কলকাতার একটি ক্লাবের পক্ষে ফুটবল খেলতে শুরু করেন। রংপুরের তাজহাটের রাজা গোপাল রায় (তিনি ছিলেন প্রখ্যাত ফুটবলারও) ১৯১৫ সালে তাজহাট টিম গঠন করেন যার অন্যতম খেলোয়াড় ছিলেন সামাদ। ১৯১৮ সালে তিনি কলকাতায় এরিয়ান্স ক্লাবে খেলা শুরু করেন। ১৯২১ থেকে ৩২ সাল পর্যন্ত ছিলেন রেলওয়ে টিমে। ১৯২৪ সালে তদানীন্তন ভারতের জাতীয় টিমে নির্বাচিত হয়ে মিয়ানমার, চীন, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রিটেন সফর করেন। অবিভক্ত ভারতের জাতীয় ফুটবল টিমের ওটাই প্রথম বিদেশ যাত্রা। ১৯৩২-এ সামাদ ভারতীয় ফুটবল সমিতির (আইএফএ) পক্ষ থেকে খেলতে গিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কায়। পরের বছর বিখ্যাত মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দেন। অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শন করায় সে বছর আইএফএ তাকে ‘হিরো অব দ্য গেমস’ উপাধিতে ভূষিত করে। সামাদের ক্রীড়াজীবনে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা ঘটেছিল ইংল্যান্ডে। তখন লন্ডনে এক ফুটবল প্রতিযোগিতায় তার শট করা বল গোলবারের ওপরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সাথে সাথে তিনি তীব্র আপত্তি জানিয়ে বলেন, আসলে গোল হয়েছে। রেফারিকে নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘গোলবারের উচ্চতা কম। আমার শট কখনো ভুল হয় না।’ অনেক বাগি¦তণ্ডার পরে মেপে দেখা যায়, সামাদের অভিযোগ সত্য। গোলবার নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে দেড় ইঞ্চি নিচু। অতএব সামাদ গোল করেছেন বলে মেনে নিতে হলো। বিশ্বে এমন ঘটনার কথা আর জানা যায় না। ওই ঘটনার পর সামাদ পরিচিতি পেলেন ‘ফুটবল জাদুকর’ হিসেবে। খেলার সময়ে তিনি মাঠে পায়চারি করতেন। সুযোগ মতো বল পেলেই হাওয়ার বেগে প্রতিপক্ষের গোলমুখে ছুটে যেতেন। ১৯৪৫ সালে দিনাজপুর শহরের বড় মাঠে সামাদ জীবনের শেষ খেলা খেলেছেন।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর আবদুস সামাদ সপরিবারে পার্বতীপুর চলে আসেন। রেলওয়ের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মজীবন শেষ করে সেখানেই অবসর নিয়েছিলেন। এরপর কিছুদিন ঢাকায় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অধীনে কোচের দায়িত্ব পালন করেন। তার শৈশব জীবনের মতো অবসর জীবন সম্পর্কেও তেমন জানা যায় না। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাসভবন লুট হয়ে যায়। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এই অবিস্মরণীয় প্রতিভার প্রতি সম্মান দেখিয়ে মৃত্যুর তিন দশক পরে ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম প্রকাশ করেছে। সে দিনটি ছিল ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩। অনেকেই মনে করেন, সামাদ অবাঙালি না হলে এ দেশে তার যথার্থ মূল্যায়ন হতো। তার স্মৃতিচিহ্নগুলো যথাসম্ভব সংগ্রহ করে পার্বতীপুরের বাসভবনে একটি জাদুঘর স্থাপন করা উচিত।
মো: জোবায়ের আলী জুয়েল


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল