২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
সমকালীন প্রসঙ্গ

শেখ হাসিনার জন্য পেট পোড়ে

-

শেখ হাসিনার জন্য কেন আমার পেট পোড়ে তা ভালোভাবে বলার জন্য আপনাদের কাছে কিছু ঐতিহাসিক গুপ্তকাহিনী বলা আবশ্যক। ঘটনাগুলোর আমি চাক্ষুষ সাক্ষী এবং ২০০৯-১০ সালে আমি সেসব ঘটনার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বুঝেছিলাম। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল এই কারণে যে, আওয়ামী লীগের বর্তমান দুরবস্থার শুরুটা দেখার পর আমি সিনিয়র-জুনিয়র অনেক নেতার সাথে কথা বলেছি। কিন্তু কারোর মেধা-মননশীলতা-শিক্ষা-দীক্ষা অথবা সৃজনশীলতা এমন পর্যায়ে ছিল না যার ফলে তারা দল-দেশ-জাতির পক্ষে দাঁড়িয়ে চক্রান্তকারীদের রুখে দেবেন। অথবা দলীয় প্রধানের নজরে এনে তার ক্ষমতা প্রয়োগ করে পরিস্থিতি সামাল দেবেন।
২০০৯ সালে আমার বয়স ও দলে আমার অবস্থান এমন পর্যায়ে ছিল না যা দিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি যেতে পারি অথবা অনায়াসে তার কাছে সব কথা বলতে পারি। দ্বিতীয়ত, আমার মনে এমন ভয়ও ছিল যে, আমার কথায় প্রধানমন্ত্রী অপমানিত অথবা বিরক্তি বোধ করতে পারেন। কারণ, জ্ঞান হলো এমন এক ভয়াবহ হাতিয়ার যা ঊর্ধ্বতনের কাছে প্রকাশিত হয়ে গেলে সমূহ বিপত্তি ঘটাতে পারে। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিপদে পড়ে জ্ঞানের অšে¦ষণ করলেই কেবল জ্ঞান বিতরণ অর্থবহ ও নিরাপদ। অন্যথায়, এমন ঘটনাও ঘটেছে যেখানে কেবল জ্ঞানী হওয়ার কারণে শাসকের নির্দেশে কবরে যেতে হয়েছে। পাগলা স¤্রাট নিরোর নির্দেশে মহাজ্ঞানী সেনেকার আত্মহত্যা এবং সক্রেটিসের বিষপানের কাহিনী আমি খুব ভালো করে জানতাম। এই কারণে সীমা অতিক্রম করে সব কথা আগবাড়িয়ে বলতে যাইনি কখনো।
উল্লিখিত অবস্থায় আমার মধ্যে এক ধরনের বিষক্রিয়া পয়দা হয়ে গিয়েছিল যা কিনা হীরক রাজার দেশে চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় চমৎকার একটি বাক্য প্রকাশ করেছেন। রাজা বলেন- ‘যত বেশি জানে- তত কম মানে’। সিনেমার সেই ঐতিহাসিক আপ্তবাক্যের প্রভাবে হয়তো আমার অভিব্যক্তিত্বে এক ধরনের অবাধ্যতা বা অযোগ্যতাকে তাচ্ছিল্য করার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠত যা আমি নিজে টের না পেলেও অনেকে টের পেতেন এবং তারা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নালিশ করতেন যে, রনি একটি বিশ্ব বেয়াদব, কাউকে সালাম দেয় না, যার তার সমালোচনা করে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে নিয়ে যখন উল্লিখিত অভিযোগ করলেন তখন আমি খুবই হতাশ হয়ে পড়লাম। কারণ কোনো মন্ত্রীর রুমে আমি তখন পর্যন্ত ঢুকিনি-এমনকি তাদের কারো সাথে কথাটি পর্যন্ত বলিনি। দূর থেকে যা দেখতাম তাতে মনে হতো মতিয়া চৌধুরী উপযুক্ত মন্ত্রী। কিন্তু অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমনি কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনকে আমার কোনো দিনই যোগ্য মনে হয়নি। ফলে সরকারের অনেক ব্যর্থতার জন্য আমি আমার লেখালেখি ও টকশোর আলোচনায় অযোগ্য মন্ত্রী-আমলাদের নাম উল্লেখ না করে সমালোচনা করতাম।

দলের প্রতি প্রবল ভালোবাসা শেখ হাসিনার প্রতি উঁচুমার্গের শ্রদ্ধাবোধ ও দেশপ্রেমের মোহে আমি আমার নিজের অবস্থান, স্থান-কাল-পাত্র প্রায়ই ভুলে যেতাম এবং হুটহাট এটা-ওটা বলে কিংবা লিখে প্রায়ই বড় বড় ঝক্কি ঝামেলার মধ্যে পড়ে যেতাম। কয়েকটি ছোট উদাহরণ দিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। আপনি যদি আওয়ামী লীগের বড় নেতাদের জিজ্ঞাসা করেন যে, বর্তমানের সবচেয়ে বড় তিনটি সমস্যার কথা বলুন যা কিনা আওয়ামী লীগের পতন অনিবার্য করে তুলেছে। আমি নিশ্চিত ১০০ জনকে প্রশ্ন করলে ১০০ রকম উত্তর পাবেন। অর্থাৎ কোনো সমস্যার বিষয়ে দলটির মধ্যে ঐকমত্য নেই অথবা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তাদের সম্মিলিত উদ্যোগ না থাকার কারণে তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ওয়াকিবহাল নন। ফলে রোম যখন পুড়ছে তারা তখন শিশুর মতো হাসছেন অথবা নাচন-কুর্দনে সময় ব্যয় করছেন। দ্বিতীয়ত, আপনি যদি নিজ থেকে তিনটি প্রধান সমস্যার কথা বলেন এবং সেই সমস্যা কবে ও কোথা থেকে শুরু হয়েছে তা জিজ্ঞাসা করেন তবে আমি নিশ্চিত যে, আপনার কপালে শতভাগ হতাশা ছাড়া আর কিছুই জুটবে না।
আমার মতে, আওয়ামী লীগের প্রথম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আইন মন্ত্রণালয় দিয়ে। তারপর ধর্ম মন্ত্রণালয়। তৃতীয়ত, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বনাম সংস্থাপন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতবিরোধ। আমি যদি এই তিনটি সমস্যা নিয়ে ২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বলি তবে আপনারা খুব সহজেই বুঝবেন- কেন শেখ হাসিনার জন্য আমার পেট পোড়ে।
আলোচনার শুরুতেই আইন মন্ত্রণালয়ের কথা বলি। আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল সাহেবের কাছে একদিন গেলাম একটি ফাইলের বিষয়ে জানতে। গলাচিপা উপজেলায় এক সময়ে সিভিল আদালত ছিল তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তদবিরে গিয়েছিলাম। তা ছাড়া জেলার সরকারি উকিল নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার নির্বাচনী এলাকার উকিলদের যেন অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে ব্যাপারেও প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছিলাম। তিনি এক কথায় জবাব দিলেন, দুলালের কাছে যাও- ওসব করে। আমি মন্ত্রীর রুম থেকে বের হয়ে দুলালের খোঁজ করলাম। জানতে পারলাম, তিনি একজন উপসচিব। আমি তার কামরায় গিয়ে দেখলাম, রীতিমতো বাজার বসেছে। এমপি, সচিব, যুগ্মসচিব অনেকেই আসা-যাওয়া করছেন। টেলিভিশনের কল্যাণে আমার মুখচ্ছবি পরিচিত ছিল। কাজেই দুলাল সাহেব দাঁড়িয়ে আমাকে অভ্যর্থনা জানালেন এবং স্যার সম্বোধন করলেন।
আমি যখন দুলাল সাহেবের কামরায় বসলাম তখন রাজশাহীর তানোড়-গোদাগাড়ি এলাকার এমপি ওমর ফারুখ এলেন। দুলাল সাহেব তাকে তুমি বলে সম্বোধন করলেন। আমি একটু আশ্চর্য হলাম দেখে ফারুখ সাহেব বললেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে দুলাল ভাই আমার সিনিয়র ছিলেন। তিনি দুলাল সাহেবকে লক্ষ করে বললেন, রনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে মাস্টার্স করেছে। সুতরাং তাকেও তুমি বলতে পারেন। দুলাল সাহেব দয়া করে আমাকে তুমি বললেন না বটে- তবে স্যার বলা বন্ধ করলেন এবং সেদিন থেকে আমাদের মধ্যে ভারী ভাব হয়ে গেল। একদিন কথা প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গ্রেফতার সম্পর্কে এমন তথ্য দিলেন যা শুনে আমার ভিরমি খাওয়ার উপক্রম হলো।
দুলাল সাহেব অতিমাত্রায় আওয়ামীপ্রেমিক ছিলেন। কিন্তু মেধাবী ছিলেন না। ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক লেনদেনে সৎ ছিলেন; কিন্তু কাজকর্মে ও চিন্তায় সৎ এবং ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন না। আমাদের আদালত প্রাঙ্গণের আজকের দুরবস্থা, সংবিধানের কয়েকটি সংশোধনী, উচ্চ আদালত বিশেষত প্রধান বিচারপতি সিনহার সাথে আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রীর টানাপড়েন, অবিশ্বাস, অনাস্থা এবং বিচারক নিয়োগ-বদলি নিয়ে যা কিছু হয়েছে তার সব কিছুর নেতৃত্বে একজন নিন্মমানের মেধাসম্পন্ন ও ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যম পদবির কর্মকর্তার কারণে এতবড় একটি মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী লীগের জন্য যে জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে তা কিয়ামতের আগে পরিষ্কার হবে বলে মনে হয় না।

আইনের পর ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কে কিছু বলব। আজকের ইসলামী ব্যাংক কেলেঙ্কারি, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের দুরবস্থা, ইবনে সিনার মরণাপন্ন অবস্থা, জাকাত বোর্ডের সর্বনাশ, আলেম-ওলামাদের মধ্যে বিভক্তি, ধর্মপ্রাণ ইসলামপন্থীদের সাথে আওয়ামী লীগের দূরত্ব ও শত্রুতা, জামায়াতের সাথে সরকারের অহিনকুল সম্পর্ক ইত্যাদি হাজারও সমস্যার মূলে যে লোকটি একক কর্তৃত্ব নিয়ে সব কিছু করেছেন তার সাথে সেই ২০০৯ সালেই আমার ঘনিষ্ঠতা হয় বহুবিধ কারণে। তিনিও আইন মন্ত্রণালয়ের দুলাল সাহেবের মতো জুডিশিয়ারি ক্যাডারের লোক ছিলেন এবং স্বভাব ছিল আধাপাগলা প্রকৃতির। যেদিন তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন সেদিন সন্ধ্যায় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়ার চেম্বারে তার সাথে আমার পরিচয় হলো। প্রথম সাক্ষাতে তার সাথে আমার খাতির হয়ে গেল। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ও ঢাকা কলেজে আমার সিনিয়র ছিলেন। তথাপি সর্বদা আমার সাথে সরকারি প্রটোকল বজায় রাখতেন এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি শামীম মোহাম্মদ আফজল প্রথম সাক্ষাতে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি হওয়া যায়। আমি বললাম, আপনি শেখর, গোলাপ মিয়া ও মাহবুবউল আলম হানিফ ভাইয়ের সাথে সবার আগে সম্পর্ক করুন। তারপর নিয়মিত গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান এবং দেখবেন কাক্সিক্ষত মাকামে পৌঁছে গেছেন। আমি তাকে আরো বললাম, একজন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আপনার সখ্য হলে তা আপনার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে এবং আপনাকে দিয়ে দেশ জাতির অনেক ক্ষতি হবে। সবশেষে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ হতে চান। জবাবে তিনি জামায়াত, ইসলামী ব্যাংক, জাকাত বোর্ড ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন সম্পর্কে যা বললেন ঠিক সেটিই আজ ২০২২ সালে অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়িত হয়েছে।

আলোচনার এই পর্যায়ে আমি অতি সংক্ষেপে অর্থ মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সম্পর্কে কিছু বলে আজকের শিরোনামের চৌম্বক অংশ বর্ণনা করব। ২০০৯ সালে সংস্থাপন সচিব হিসেবে নিয়োগ পেলেন এ এস এম আলী কবির যিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, চৌকস ও পুরো সিভিল সার্ভিসের মধ্যে জনপ্রিয়তম ব্যক্তিত্ব। কিন্তু জনাব এইচ টি ইমামের কারণে তাকে ওএসডি করা হলো। ইকবাল মাহমুদ নতুন সংস্থাপন সচিব হলেন বটে; কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কিছু প্রভাবশালী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কারণে তিনিও ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করতে পারলেন না। এলেন নতুন সচিব সোবাহান সাহেব, যিনি ব্যক্তিগতভাবে ভালো মানুষ; কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তদবির ও এইচ টি ইমামের হুকুম এড়িয়ে চলার সামর্থ্য ছিল না। ফলে পুরো সিভিল সার্ভিসে নেমে এলো সীমাহীন অরাজকতা। অনিয়ম দানা বাঁধলো ও একের পর এক বিপর্যয় শুরু হলো। একইভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও পরিকল্পনা কমিশন সেই ২০০৯ সাল থেকে কিভাবে পরস্পরবিরোধী কাজ করে শেখ হাসিনার জন্য বর্তমান পরিণতি ডেকে এনেছে তা বলতে গেলে বিরাট এক মহাভারত রচনা করতে হবে।
আমরা আজকের আলোচনার একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এখন বলব কেন আমার শেখ হাসিনার জন্য পেট পোড়ে। কারণ, আমি তাকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত যেভাবে দেখেছি তাতে মনে হয়েছে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি ছিলেন অনন্য। তার বিচারবোধ ছিল প্রখর। বিবেচনাবোধও ছিল প্রশংসনীয় এবং গণতান্ত্রিক মন-মানসিকতা ও সহিষ্ণুতা ছিল উল্লেখ করার মতো। কৃতজ্ঞতাবোধ, বিনয়-ভদ্রতা ও আবহমান বাংলার মাতৃত্বের রূপ তার মধ্যে ছিল প্রশংসনীয় পর্যায়ে। শাসনকর্মে দক্ষতা ও ব্যক্তিগত লোভ-লালসার নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের কল্যাণ সাধনের স্পৃহা তার মধ্যে ছিল বলে মনে হয়েছে। কিন্তু কিছু মেধাহীন অতি উৎসাহী লোকজন, কিছু চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এবং ধোঁকাবাজ কিভাবে শেখ হাসিনার সব সম্ভাবনাকে বর্তমান হালতে রূপান্তরিত করে ফেলল তা চিন্তা করলে মনটি ভীষণ বিষণœ হয়ে পড়ে এবং বারবার তার সেই হাসিটির কথা মনে এসে যায়, যার কারণে শুরু হয় পেট পোড়ানি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে হাসিটি আমার মনে আজো দাগ কাটছে সেটি আমি দেখেছিলাম ২০০৯ সালের কোনো এক প্রবল বর্ষণমুখর রাতে তারই সরকারি বাসভবনে। দক্ষিণ অঞ্চলে সে রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হেনেছিল। পরিস্থিতি বর্ণনার জন্য আমি সোজা তার রুমে গেলাম। রাত তখন ১০টা। গিয়ে দেখি তিনি একান্তে তার খাস কামরায় বসে চ্যানেল আই তৃতীয় মাত্রার জনপ্রিয় উপস্থাপক জিল্লুরের সাথে কি যেন আলাপ করছেন। আমাকে দেখে তিনি হঠাৎ খুশি হয়ে গেলেন। বললেন, আরে এমপি সাহেব! আসো আসো বসো। তারপর হাসিমুখে কি যেন বলতে চাইলেন- কিন্তু বলতে পারলেন না। আরেকজন বয়স্ক এমপি ঢুকে এমন প্যাঁচাল শুরু করলেন যে, তার মেজাজ ও মুড নষ্ট হয়ে গেল। আমি তার রুম থেকে বের হয়ে এলাম এবং তার সেই হাসিমাখা মুখ, উষ্ণ অভ্যর্থনা ও না বলা কথাগুলোর কল্পিত চিত্রপট হৃদমাঝারে ধারণ করে নির্বাচনী এলাকার পথে রওনা দিলাম। 
লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য


আরো সংবাদ



premium cement