২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইউক্রেন দখলে রাশিয়ার প্রস্তুতি, এরপর কী?

অবলোকন
-

ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সর্বশেষ বৈঠকে কোনো ফল হয়নি। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে এক ধরনের রণপ্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে। এই যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটোর সাথে সরাসরি রাশিয়ার হবে না। তবে ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র্র ও ন্যাটো এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোও সব ধরনের সহায়তা করবে। মস্কো হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, ডনবাসে পশ্চিমের উনকানি ও রাশিয়ানদের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু সতর্ক করে দেন যে, বেসরকারি মার্কিন সামরিক সংস্থাগুলো পূর্ব ইউক্রেনে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে উসকানির পরিকল্পনা করছে। পেন্টাগন রুশ মন্ত্রীর এই বক্তব্য ‘মিথ্যা’ অভিহিত করে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে এটি হতে পারে ইউক্রেনে আক্রমণের বড় একটি অজুহাত।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ইউক্রেন প্রশ্নে সমঝোতামূলক কোনো নথিতে দু’পক্ষ স্বাক্ষর করেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি মনে করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেকোনো সময় দখলের উদ্দেশ্যে ইউক্রেনে প্রবেশ করবে, তবে রাশিয়া একটি ‘পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ’ চায় না।

রাশিয়ার সম্ভাব্য আক্রমণ
ভ্লাদিমির পুতিন সীমান্তে বড় সামরিক সমাবেশ ও আক্রমণাত্মক ভাষা দিয়ে ইউক্রেনে হামলার হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। রাশিয়া ইউক্রেনের অদূরে যুদ্ধ ট্যাংক, স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাসহ সমরসজ্জা গ্রহণ করেছে।
পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার অংশ এবং কিয়েভকে রাশিয়ার বলয়ে ফিরে যেতে হবে। রাশিয়ার হুমকি অন্তত দু’টি কারণে বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। প্রথমত, রাশিয়া তার বাহিনীকে দ্রুত ইউক্রেনে নিতে পারে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য ন্যাটো দেশগুলো স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা ইউক্রেনে তাদের বাহিনী মোতায়েন করবে না।
দ্বিতীয়ত, এই আক্রমণ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে আসবে যা ফিনল্যান্ড এবং বাল্টিক রাজ্যগুলোর সাথে রাশিয়ার সীমানা বরাবর শুরু হতে পারে এবং পূর্ব ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ হয়ে অবশেষে যায় চীনের দক্ষিণ প্রান্ত বরাবর পূর্ব এশিয়ায় যাবে।
এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে, কীভাবে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে, কীভাবে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আক্রমণ পরিকল্পনাকে প্রভাবিত করতে পারে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় অংশীদারদের এর প্রতিক্রিয়া জানাতে কী বিকল্প রয়েছে। এটি বুঝতে হলে কিছু প্রশ্নের জবাব পেতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে, পুতিনের উদ্দেশ্য কী? রাশিয়ার কী কী সামরিক বিকল্প রয়েছে এবং আক্রমণ কেমন হতে পারে? যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে?
প্রথমত, ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখল করার জন্য রাশিয়ার তিনটি সম্ভাব্য পথ রয়েছে। একটি উত্তর দিক, বেলারুশের মধ্য দিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে কিয়েভের চার পাশ ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা; পশ্চিমে ইউক্রেনের দিকে অগ্রসর হয়ে মাঝামাঝি দিক থেকে ধাক্কা দেয়া; এবং দক্ষিণ থ্রাস্ট পেরেকপ ইসথমাসজুড়ে অগ্রসর হওয়া। দ্বিতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় অংশীদাররা যদি রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের কূটনৈতিক, সামরিক, গোয়েন্দা এবং অন্যান্য উপায়ে ইউক্রেনের প্রতিরোধকে সমর্থন করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় অংশীদাররা রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনকে সংযুক্ত করা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। মস্কোর ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করা ও তার পরে পূর্ব ইউক্রেনে একটি বিদ্রোহ সংঘটিত করা শুধু রাশিয়ান নেতাদের উৎসাহিত করেছিল। উপরন্তু, কিছু অংশ বা পুরো ইউক্রেনের রাশিয়ান সংযুক্তি রুশ জনশক্তি, শিল্প ক্ষমতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদকে এমন একটি স্তরে বৃদ্ধি করবে যা এটিকে বিশ্বব্যাপী হুমকিতে পরিণত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এ ভুল আর করতে পারবে বলে মনে হয় না।

রাশিয়ান রাজনৈতিক উদ্দেশ্য
ক্রেমলিন যা বলে তা আসলেই চায়। ন্যাটোর সম্প্রসারণের অবসান, পূর্ববর্তী সম্প্রসারণের একটি রোলব্যাক, ইউরোপ থেকে আমেরিকান পারমাণবিক অস্ত্র অপসারণ এবং রাশিয়ার প্রভাবের ক্ষেত্র বিস্তার এসবই রাশিয়ান এজেন্ডা। তবে ক্রেমলিনের প্রাথমিক লক্ষ্য এমন গ্যারান্টি অর্জন করা যে, বেলারুশ, ইউক্রেন এবং জর্জিয়া কখনোই মস্কোর নিয়ন্ত্রণের বাইরে অন্য কোনো সামরিক বা অর্থনৈতিক ব্লকের অন্তর্ভুক্ত হবে না। সারকথা বলা যায়, এই দ্বন্দ্ব হলো সোভিয়েত ইউনিয়নের মৃত্যুর ৩০ বছর পরে এর প্রাক্তন জাতিগত প্রজাতন্ত্রগুলো স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাস করতে পারবে নাকি তাদের উপরে মস্কোর প্রকৃত সার্বভৌম নিয়ন্ত্রণ স্বীকার করতে হবে- সেটির নিষ্পত্তি হওয়া।
স্পষ্টতই, পূর্ব ইউরোপ এবং দক্ষিণ ককেশাসে প্রভাবের একচেটিয়া ক্ষেত্র তৈরির দাবি রাশিয়ার নিরাপত্তা স্বার্থ পূরণের জন্য। ক্রেমলিন পূর্বে ন্যাটো সম্প্রসারণকে পশ্চিমের সাথে সোভিয়েত-পরবর্তী আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল পাপ হিসাবে চিত্রিত করেছে যা এখন সংশোধন করা উচিত বলে মনে করে।

রাশিয়ান সামরিক বিকল্প
এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে, ক্রেমলিনের কমপক্ষে ছয়টি সম্ভাব্য সামরিক বিকল্প রয়েছে :
১. তার স্থলবাহিনীকে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে দূরে পুনঃনিয়োগ করা, অন্তত অস্থায়ীভাবে- যদি আলোচনা সফল হয় তবুও পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়াপন্থী বিদ্রোহীদের সহায়তা অব্যাহত রাখা।
২. একতরফা ‘শান্তিরক্ষী’ হিসাবে দোনেস্ক এবং লুহানস্কের বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত রাশিয়ান সৈন্যদের পাঠানো এবং শান্তি আলোচনা সফলভাবে শেষ না হওয়া আর কিয়েভ মিনস্ক চুক্তি বাস্তবায়নে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করা।
৩. দর কষাকষির চিপ হিসাবে ব্যবহার করতে বা এই নতুন অঞ্চলটিকে রাশিয়ান ফেডারেশনে সম্পূর্ণরূপে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পশ্চিমে ডনেপ্র নদী পর্যন্ত ইউক্রেনীয় অঞ্চল দখল করা।
৪. ডনেপ্র নদী পর্যন্ত ইউক্রেনীয় অঞ্চল দখল করা এবং ওডেসা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত জমি দখল করা যা রাশিয়ান ভূখণ্ডকে বিচ্ছিন্ন ট্রান্সডনিস্ট্রিয়া প্রজাতন্ত্রের সাথে সংযুক্ত করবে এবং ইউক্রেনকে কৃষ্ণসাগরের যেকোনো প্রবেশাধিকার থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। ক্রেমলিন এই নতুন এলাকাকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করবে এবং নিশ্চিত করবে যে ইউক্রেনীয় স্টেটলেট অর্থনৈতিকভাবে অব্যবহৃত থাকবে।
৫. কিয়েভ এবং খারকিভের বড় যুদ্ধ এড়াতে ক্রিমিয়ার জন্য মিঠা পানির সরবরাহ সুরক্ষিত করা এবং সমুদ্রে ইউক্রেনের প্রবেশাধিকার বন্ধ করার জন্য রাশিয়া এবং মারিউপোল, খেরসন এবং ওডেসাসহ ট্রান্সডনিস্ট্রিয়ার মধ্যকার একটি বেল্ট দখল করা।
৬. সমস্ত ইউক্রেন দখল করা এবং রাশিয়ান, ইউক্রেনিয়ান ও বেলারুশিয়ান একটি নতুন ত্রিপক্ষীয় সাভিক ইউনিয়ন গঠনের ঘোষণা করা।
এই ছয়টি বিকল্পের মধ্যে, প্রথম দুটিতে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা কম। কিন্তু তাদের জবরদস্তিমূলক প্রকৃতির কারণে ন্যাটো সমস্যা বা মিনস্ক চুক্তিতে অগ্রগতি অর্জনের সীমিত সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যান্য সব বিকল্প বড় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও অর্থনৈতিক দুর্দশা নিয়ে আসবে রাশিয়ার জন্য।

সম্ভাব্য আক্রমণের রুট
ইউক্রেনের সাথে সঙ্ঘাতের জন্য রাশিয়ান সমাজের মতাদর্শগত প্রস্তুতি কমপক্ষে ২০১৪ সাল থেকে চলছে, ক্রেমলিন প্রোপাগান্ডা ইউক্রেনকে একটি প্রোটো-ফ্যাসিস্ট, নব্য-নাৎসি রাষ্ট্র হিসাবে চিত্রিত করেছে। জুলাই ২০২১ সালে, রাষ্ট্রপতি পুতিনের একটি চিঠি দৃঢ়তার সাথে বলে যে রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয়রা একই মানুষ এবং ইউক্রেনের কর্তৃপক্ষকে তার অতীতকে অস্বীকার করে স্বাধীনতার ন্যায্যতা দেয়ার জন্য তিরস্কার করেছে। রাশিয়ান সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রপতি পুতিনের নিবন্ধটি তার সৈন্যদের জন্য বাধ্যতামূলক পাঠ করেছে। অক্টোবরে রাশিয়ান নিরাপত্তা পরিষদের ভাইস-প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের কমারসান্ট পত্রিকায় একটি চিঠি, যেটি ইউক্রেনের বর্তমান নেতৃত্বকে চরমপন্থী, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং বিদেশী নিয়ন্ত্রিত হিসাবে বৈধতা দেয়ার জন্য ইহুদি-বিরোধী সুর ব্যবহার করেছিল।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের কৌশলটি সম্ভবত উপরোক্ত রাজনৈতিক লক্ষ্যগুলোর মধ্যে কোনটি ক্রেমলিন অর্জন করতে চায় তার দ্বারা প্রভাবিত হবে। ক্রেমলিন যদি তিন, চার বা ছয় বিকল্প ব্যবহার করতে চায় তাহলে ডনেপ্র নদীর পূর্বে ইউক্রেনীয় অঞ্চল দখল করার তিনটি সম্ভাব্য অক্ষ রয়েছে, নদীটি অগ্রিমের একটি সীমা বা একটি বৃহত্তর আক্রমণের প্রথম পর্বের লাইন।
যদি রাশিয়া সমগ্র দেশ জয় করতে চায়, তবে তার বাহিনীকে ওডেসা দখল করতে হবে (যার বন্দর সুবিধাগুলো রাশিয়ান রসদ সরবরাহ সহজতর করবে)।

রাশিয়ান সাফল্যের সম্ভাবনা
যান্ত্রিক আক্রমণ সবসময় আক্রমণকারীদের আশার মতো দ্রুত হয় না। ইতিহাসে সাঁজোয়া বাহিনীর দু’টি দ্রুততম গতিবিধি- আর্ডেনেসের মধ্য দিয়ে জার্মান জেনারেল হেইঞ্জ গুদেরিয়ানের আক্রমণ এবং ১৯৪০ সালের মে মাসে ডানকার্ক দখল এবং ২০০৩ সালে কুয়েত সীমান্ত থেকে বাগদাদের দিকে মার্কিন ও জোটের অগ্রগতি- প্রতিটি গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০ মাইল। সীমিত দিবালোক ও শীতকালীন পরিস্থিতিতে নির্ধারিত শত্রুর বিরুদ্ধে অভিযান আগের সেই হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে পারে।
ক্রেমলিন তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জন না করা পর্যন্ত সামরিক বাহিনী নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে। রুশ বাহিনী ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তারা সিরিয়ায় সম্মিলিত অগ্রাভিযান চালনার ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। আর বর্তমান ময়দান আক্রমণাত্মক যান্ত্রিক যুদ্ধের জন্য অনুকূল। যাই হোক, সামরিক সামর্থ্যরে হিসাব সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরেই নেয়া যেতে পারে।
কমান্ড ও কন্ট্রোল : ইউক্রেন আক্রমণের ক্ষেত্রে, রাশিয়া ১৯৪৫ সালে বার্লিনের যুদ্ধের পর থেকে তার বৃহত্তম সম্মিলিত অস্ত্র অভিযান পরিচালনা করবে। ২০০৮ সালে রুশো-জর্জিয়ান যুদ্ধ মাত্র পাঁচ দিন স্থায়ী হয়েছিল এবং ৭০ হাজার রুশ সৈন্য এতে নিয়োজিত হয়েছিল। সিরিয়ায়, প্রাথমিক ম্যানুভার বাহিনীতে সিরিয়ার স্থল ইউনিট অন্তর্ভুক্ত ছিল, লেবানিজ হিজবুল্লাহর সহায়তায়, ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর মিলিশিয়া বাহিনী, ওয়াগনার গ্রুপের মতো ব্যক্তিগত সামরিক কোম্পানি এবং ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পস-কুদস বাহিনী। কিন্তু রাশিয়া উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রচলিত বাহিনী মোতায়েন করেনি। প্রায় এক লাখ ২০ হাজার রুশ সৈন্য ইউক্রেনের কাছে জড়ো করা হয়েছে, আরো কয়েক হাজার যুদ্ধে মোতায়েন করার জন্য প্রস্তুত। সঠিক মার্চ শৃঙ্খলার সাথে এসব বাহিনীকে প্রথমে তাদের আক্রমণ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া রাশিয়ান কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হবে।
লজিস্টিকস : প্রাথমিক আক্রমণ সম্ভবত আর্টিলারি এবং বিমান হামলার সমর্থনে শুরু হবে। রাশিয়ান সামরিক শক্তির আসল পরীক্ষা শুরু হবে- শত শত মাইল অঞ্চলে একটি বিশাল যান্ত্রিক শক্তির অগ্রগতি বজায় রাখার মধ্যে। কিয়েভ এবং ডনেপ্র নদী ক্রসিংগুলো রাশিয়ান সীমান্ত থেকে কমপক্ষে ১৫০ থেকে ২০০ মাইল দূরে রয়েছে এবং এর সেনাবাহিনীকে সেখানে পৌঁছানোর জন্য কমপক্ষে কয়েক দিনের লড়াই করতে হবে।
মনোবল : মনোবলের দু’টি স্তর রয়েছে : প্রত্যেক সৈনিকের মনোবল এবং গোটা দেশ ও এর জনগণের মনোবল। ব্যক্তিগত স্তরে, একজন ইউক্রেনীয় সৈনিক বিশ্বাস করে যে, সে তার স্বদেশ রক্ষার জন্য লড়াই করছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী যত বেশি সময় ধরে রুশদের প্রতিরোধ করবে, তার আত্মবিশ্বাস তত বাড়বে। সেই সাথে কিভাবে এই শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে তার অভিজ্ঞতাও বাড়বে। উপরন্তু, যুদ্ধ বেশি সময় ধরে চলতে থাকলে, আন্তর্জাতিক সমর্থনের মাত্রাও বেশি হতে পারে এবং যুদ্ধক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য অস্ত্র হস্তান্তরের সম্ভাবনাও বাড়তে পারে।
রাশিয়ার জন্য, যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে এবং হতাহতের সংখ্যা তত বেশি হবে। প্রতিটি ক্রেমলিন শাসক জানেন যে একটি রুশ রাজবংশ বা শাসনের অবসানের দ্রুততর উপায়গুলোর একটি হলো যুদ্ধে পরাজিত হওয়া। আফগানিস্তানে যুদ্ধের প্রাথমিক সোভিয়েত মূল্যায়ন যদিও আশাব্যঞ্জক ছিল, শেষ পর্যন্ত তারা অন্ধকারে পড়ে যায়।
রাশিয়ান পরিবারগুলো নিশ্চিত, তাদের সৈন্যদের কামানের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আজকের বিশ্বে সেলফোন ক্যামেরা ও ভিডিওচিত্রের সর্বত্রগামিতা সৈন্যদের অভিযোগকে তাদের বাহিনীর বাইরে ছড়িয়ে দেবে। অতএব, ক্রেমলিনের জন্য সমস্যা হবে : যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে ততই হতাহত এবং অর্থনৈতিক চাপের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিক্রিয়া তীব্র হবে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা প্রতিক্রিয়া
রুশ উচ্চাকাক্সক্ষা নস্যাৎ করার মূল চাবিকাঠি হলো মস্কোকে দ্রুত বিজয় অর্জন থেকে বিরত রাখা এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যয় বাড়ানো, পশ্চিম থেকে রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহের সম্ভাবনা উত্থাপন করা যা রাশিয়াকে ধ্বংস করে দেয়। ইউক্রেনে মার্কিন এবং ইউরোপীয় সামরিক উপস্থিতি থাকবে না। ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য না হওয়ায় রাষ্ট্রপতি বাইডেন সে সম্ভাবনা ইতোমধ্যেই বাতিল করেছেন। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর দ্রুত মোতায়েন প্রতিরোধ করা সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শাস্তির মাধ্যমে।
রাশিয়া সহজে ইউক্রেন দখল করতে পারলে তার অর্থ হবে এই যে, এর প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্র আর নিরাপদ থাকবে না। আর সেটি কোনোভাবেই বিশ্বব্যবস্থার জন্য শুভ নয়। রাশিয়ার ইউক্রেন সেক্টরে সাফল্য চীনকে তাইওয়ান দখলে উদ্দীপ্ত করবে।
mrkmmb@gmail.com

 


আরো সংবাদ



premium cement
‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সকল