২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ভারতের রুশ মার্কিন সম্পর্কের রসায়ন কী হবে

অবলোকন
-

ভারতের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নানা বাঁক পরিবর্তনের জল্পনা চলে আসছিল বেশ কিছু দিন ধরে। আফগানিস্তান থেকে ভারতের স্বার্থের কথা না ভেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাটকীয় প্রস্থান আর বিপরীতে এম ৪০০-সহ একের পর এক রাশিয়ার সাথে ভারতের উচ্চ প্রযুক্তির প্রতিরক্ষা চুক্তিতে নানা ধরনের টানাপড়েনের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। ট্রাম্পের পর জো বাইডেনের মতো উদারপন্থী ডেমোক্র্যাটের আমেরিকার প্রশাসনের দায়িত্ব গ্রহণে এমনিতে নরেন্দ্র মোদির কিছুটা অস্বস্তি ছিল। তার উপর রাশিয়ার সাথে শিথিল প্রতিরক্ষা সম্পর্কের পরিণতি নিয়েও ভাবনায় পড়ে যান মোদি। ফলে দুই বৃহৎ শক্তির সাথে কৌশলগত সম্পর্ক নিয়ে নানা সমীকরণ সামনে চলে আসে। এ ধরনের এক জটিল সময় সন্ধিক্ষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারত ও রাশিয়ার নেতাদের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ৬ ডিসেম্বর ভারতে আসছেন। কোভিড মহামারীর কারণে গত বছর স্থগিত করা হয়েছিল সফরটি।

আবার অতিঘনিষ্ঠ কৌশলগত সম্পর্ক?
পুতিনের সফরের আগে, রাশিয়ান বিদেশ বিষয়কমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ৫ ডিসেম্বর দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ২+২ মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপে অংশ নেবেন। দুই দেশের মধ্যে টু প্লাস টু ফরম্যাটের সংলাপের অ্যাজেন্ডায় ‘পারস্পরিক স্বার্থের রাজনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা বিষয়গুলো’ থাকবে। ৬ ডিসেম্বরের টু প্লাস টু মন্ত্রী পর্যায়ের সংলাপে রাশিয়া এবং ভারত আধাগোপনীয় এলাকাসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ১০টি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সংলাপে ভারতের পক্ষ থেকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন। সংলাপে অংশ নেয়া রাশিয়ার প্রতিনিধি থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। এমনটিই জানানো হয়েছে। সঙ্গত কারণেই এ সময় সংবেদনশীল কিছু প্রতিরক্ষাচুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে, যার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আগেই হুঁশিয়ার করে দেয়া হয়েছে রাশিয়ার তৈরি অস্ত্র কিনলে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে নয়াদিল্লিকে। মিত্র দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া হুঁশিয়ারিতে মস্কো থেকে সমরাস্ত্র আমদানি করলে মার্কিন কাটসা আইনে (কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভারসারিস থ্রু স্যাংশনস অ্যাক্ট) ভারতকেও যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে পরোক্ষে সেই ইঙ্গিতই দিয়েছে ওয়াশিংটন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র বলেছেন, ‘রাশিয়ার সাথে অস্ত্রচুক্তি নিয়ে ভারতকে ছাড় দেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই হয়নি। কাটসা আইনে কোনো এক বিশেষ দেশকে ছাড় দেয়ার কোনো বিধান নেই।’
এ নিয়ে খুব বেশি একটা তোয়াক্কা ভারত এ সময়ে করছে না বলে মনে হয় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাটের কথায়। তিনি লোকসভায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, রুশ এস-৪০০ মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার বিষয়টি একটি সার্বভৌম দেশের সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ফৌজের চাহিদার কথা মাথায় রেখে সরকার সমরাস্ত্র ক্রয় করে। নির্দিষ্ট সময়েই এস-৪০০ ভারতের হাতে আসবে।
রাশিয়া সম্প্রতি ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’ ভারতে পাঠানো শুরু করলে এ নিয়ে তুঙ্গে পৌঁছেছে ভারত-আমেরিকার টানাপড়েন। ভারত প্রথম দেশ নয়, যার বিরুদ্ধে এস-৪০০ কেনার জন্য নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের আগে রাশিয়ার কাছ থেকে এ অস্ত্র কেনে তুরস্ক। ফলে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে ন্যাটো সদস্য দেশটিকে।
নয়াদিল্লি থেকে পাওয়া আভাস অনুসারে রাশিয়ার সাথে সামরিক চুক্তি বাতিল করবে না ভারত। মস্কোর সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখেই আমেরিকার সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে চায় নয়াদিল্লি। বাইডেন প্রশাসনকেও সেই কথা মাথায় রাখতে হবে বলে বার্তা দিতে চায় দিল্লি। তাদের ধারণা কৌশলগত কারণে এশিয়া মহাদেশে চীনকে রুখতে ভারতের ওপরই ভরসা রাখতে হবে ওয়াশিংটনকে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে ব্রাসিলিয়ায় ব্রিকসের সাইডলাইনে বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পুতিনের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনটি হবে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। পুতিন ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে তার সফর ভারতের সাথে ‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ বজায় রাখার জন্য নয় বরং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর করা। ওয়াশিংটনের সাথে নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠতা সত্ত্বেও এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় ভারত এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি শক্তিশালী কৌশলগত, সামরিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর রাশিয়া উত্তরাধিকার সূত্রে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পেয়েছে। উভয়ই এই সম্পর্ককে ‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ হিসেবে অভিহিত করে।
ঐতিহ্যগতভাবে ইন্দো-রাশিয়ান কৌশলগত অংশীদারিত্ব পাঁচটি প্রধান উপাদানের উপর নির্মিত: রাজনীতি, প্রতিরক্ষা, বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা এবং আকাশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একটি ষষ্ঠ, অর্থনৈতিক উপাদান গুরুত্বের সাথে যুক্ত হচ্ছে। উভয় দেশ ২০২৫ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, যা ২০১৭ সালে প্রায় ৯.৪ বিলিয়ন ডলার ছিল। এ লক্ষ্য পূরণ করতে উভয় দেশ একটি মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি করতে চাইছে।
ভারত-রাশিয়া আন্তঃসরকারি কমিশন উভয় দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে বিষয়গুলো পরিচালনা করে। উভয় দেশই জাতিসঙ্ঘ, ব্রিকস, জি-২০ এবং এসসিও অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য যেখানে যৌথ জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করে। আর রাশিয়া প্রকাশ্যে বলেছে, ভারতকে জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী আসন পেতে সমর্থন করে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পে ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। ২০১৭ সালে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর হার্ডওয়্যার আমদানির প্রায় ৬৮ শতাংশ রাশিয়া থেকে এসেছিল, যা রাশিয়াকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রধান সরবরাহকারী করে তোলে। ২০১৪ সালের বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস পোল অনুসারে, ৮৫ শতাংশ রাশিয়ান ভারতকে ইতিবাচকভাবে দেখে, মাত্র ৯ শতাংশ নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে। একইভাবে, মস্কোভিত্তিক বেসরকারি থিংকট্যাংক লেভাদা-সেন্টারের ২০১৭ সালের জনমত জরিপে বলা হয়েছে, রাশিয়ানরা ভারতকে তাদের শীর্ষ পাঁচটি ‘বন্ধু’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, অন্যরা হলো বেলারুশ, চীন, কাজাখস্তান এবং সিরিয়া।
২০২০ সালে হিমালয়ে চীনের সাথে সীমান্ত উত্তেজনার সময় ভারতে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের সিদ্ধান্তের সাথে সাথে ভারতে অস্ত্র ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্তের পরে জাতিসঙ্ঘে নয়াদিল্লিকে সমর্থন করতে মস্কো ভারত ও চীনের মধ্যে তার ‘নিরপেক্ষতা’ও ত্যাগ করে। ভারত জাতিসঙ্ঘে এর প্রতিদান দিয়েছে অতি সম্প্রতি, রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলকে সমর্থন করে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও, রাশিয়া থেকে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কিনতে ভারতের সঙ্কল্প বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। গত দুই বছরে রাশিয়া ভারতের অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার করেছে, সক্রিয়ভাবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রোগ্রামের সাথে জড়িত থাকার চেষ্টা করার সময়, জ্বালানি সহযোগিতা দ্রুত বাড়ছে, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিক, রাসায়নিক, উচ্চ প্রযুক্তির শিল্পের নতুন ক্ষেত্র, সাইবার, ডিজিটাল ফাইন্যান্স, অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য ক্ষেত্র অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

ভারসাম্য কিভাবে করবে দিল্লি?
রাশিয়া এবং ভারত উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাথে জড়িত বিভিন্ন অংশীদারের সাথে মিলিত হওয়ার কারণে পার্থক্যের কিছু ক্ষেত্র উপেক্ষা করা কঠিন হবে। যুক্তরাষ্ট্র হলো রাশিয়ার প্রাথমিক প্রতিপক্ষ আর চীন ভারতের প্রধান প্রতিপক্ষ। এ দুই সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য কিভাবে রাখা যাবে সেটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত, ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণার একটি ভিন্নতর বোঝাপড়া এবং অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত সমন্বিত কোয়াডের পুনঃউত্থান এখানে বড় কোনো বাধা হয়ে উঠতে পারে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইন্দো-প্যাসিফিকের ধারণা সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে সন্দিহান এবং কঠোর ছিলেন, যেটিকে তিনি চীন, এমনকি রাশিয়াকে ঠেকাতে মার্কিন কৌশল হিসাবে দেখেন। পুতিন নিজে অবশ্য ইন্দো-প্যাসিফিক এবং কোয়াডের বিষয়ে তার বক্তব্যে অধিকতর মধ্যপন্থী ছিলেন। তবে ইন্দো-প্যাসিফিক ধারণা সম্পর্কে রাশিয়ার অভিজাতদের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান বিতর্ক এবং উপলব্ধি রয়েছে যে ধারণাটির বিভিন্ন সংস্করণ রয়েছে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্কে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা থেকে ভিন্ন।
ল্যাভরভের গত এপ্রিলে দিল্লি থেকে ইসলামাবাদে যাওয়ার সংবেদনশীল সিদ্ধান্ত অবশ্য ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের হতাশা বাড়িয়েছে। এটাকে মস্কোর বিচ্যুতি হিসেবে চিহ্নিত করতে চান তারা। সেই সাথে তারা বিচ্যুতির দ্বিতীয় ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করতে চান আফগানিস্তানকে। সেখানকার অগোছালো মার্কিন প্রত্যাহার এবং কাবুলে তালেবানের ক্ষমতায় আসা ভারত ও রাশিয়াকে কাছাকাছি নিয়ে এসেছে বলে মনে করা হয়। পাকিস্তানের সাথে ক্রমবর্ধমান রাশিয়ান সম্পৃক্ততার ভারতের নীতিপ্রণেতাদের স্বপ্নকল্পনাকে বিভ্রান্ত করে। সম্ভাব্য দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনার তৃতীয় ক্ষেত্র হলো এ আস্থার অভাব যে দু’পক্ষ নিজেদের নতুন কৌশলগত অংশীদারদের সাথে কতদূর পর্যন্ত যেতে প্রস্তুত। এ অংশীদারিত্ব ভারতের যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এবং রাশিয়ার চীনের সাথে। নয়াদিল্লির ধারণা, পুতিনের এ সফর ভারত ও রাশিয়াকে আস্থার সব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
নয়াদিল্লি এবং মস্কো এশিয়া বা ইউরোপে আধিপত্য বা প্রভাবশালী শক্তির উত্থানের ধারণাকে ঘৃণা করে। এই সাধারণ উপলব্ধিই একটি বহুমুখী এশিয়া এবং ইউরোপ নিশ্চিত করতে এক প্রাণবন্ত ভারত-রাশিয়া অংশীদারিত্বকে অনুপ্রাণিত করবে বলে দিল্লির কৌশলবিদরা উল্লেখ করছেন। এবার চতুর্থ ক্ষেত্র হিসেবে যেটির জন্য টেকসই মনোযোগ প্রয়োজন মনে করা হচ্ছে; তা হলো অর্থনৈতিক সম্পর্ক। প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের বাণিজ্য বা চীনের সাথে রাশিয়ার বাণিজ্যের তুলনায় অনেক কম। রাশিয়ার অর্থনীতির সাথে ভারত সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
এটি মেক ইন ইন্ডিয়া প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য রাশিয়ার আগ্রহ প্রতিফলিত হয়েছে। ভিলাই থেকে ব্রাহ্মোস পর্যন্ত সফল যৌথ উদ্যোগের একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক প্রাথমিকভাবে সরকার থেকে সরকার হলেও বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা ছাড়া, ভারত-রাশিয়ান অর্থনৈতিক সম্পর্ক সামনে এগোনো কঠিন হবে বলে মনে করা হয়।
পরিশেষে, বিশ্ব-ভূরাজনীতি এবং ভূ-অর্থনীতির পরিবর্তিত হাওয়ায় ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যকার একটি উষ্ণ এবং দীর্ঘ বন্ধুত্বের গ্যারান্টি খুব সহজ কোনো বিষয় হবে না। এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে ওয়াশিংটন চীনকে মোকাবেলা করতে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ধারণা নিয়ে উৎসাহী; কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বন্ধন নানা কারণে ততটা দৃঢ় হয়ে উঠতে পারছে না।

নতুন সম্পর্ক কি গ্রেট-পাওয়ার শিফটের দুর্ঘটনা?
২০১৪ সালে তার প্রথম বিদেশ সফরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের একত্রিত করে একটি ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাজিলের ফোর্তালেজায় গেলে পুতিনকে মোদি বলেছিলেন, ‘এমনকি ভারতীয় একটি শিশুকেও যদি বলতে বলা হয় যে ভারতের সেরা বন্ধু কে, সে উত্তর দেবে রাশিয়া কারণ রাশিয়া সঙ্কটের সময়ে ভারতের সাথে ছিল।’
এরপর মোদি ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের কাছে আরো ঘনিষ্ঠ করতে চেয়েছেন এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের অধীনে চীনের সাথে এক গভীর দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। এর অর্থ হলো মোদিকে এখন রাশিয়ার সাথে আরো জটিল সম্পর্ক পরিচালনা করতে হবে। জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক এক বৈঠকে ভারত তালেবানের জন্য কিছু কঠিন দাবি পেশ করতে তিনটি পশ্চিমা শক্তি-যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের সাথে জোট করে। বিপরীতে, আফগানিস্তান-সংক্রান্ত প্রস্তাবের ভাষাকে রাশিয়া হালকা করার চেষ্টায় চীনের সাথে যোগ দেয় এবং এতে ভোটদানে বিরত থাকে। নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে এ ধরনের বিচ্ছিন্নতা কার্যত কল্পনাতীত ছিল।
মোদি অবশ্য ওয়াশিংটনের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার সাথে দীর্ঘ দিনের অংশীদারিত্ব ত্যাগ করতে ইচ্ছুক নন। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে রাশিয়াকে ভেটোর সুযোগ দিতেও প্রস্তুত নন, যা অতীতের মতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দাবি করতে পারে। মোদি আরো সচেতন যে চীনের সাথে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়ে তার কোনো ভেটো নেই, যা মস্কো এবং বেইজিং ওয়াশিংটন থেকে উপলব্ধি করা হুমকি দ্বারা চালিত।
মস্কোর সাথে সম্পর্কের প্রতি নয়াদিল্লির আবেগপূর্ণ সংযুক্তি স্থিরভাবে দুই দেশের ক্রমবর্ধমান ভিন্ন আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক গতিপথ সম্পর্কে মোদি প্রশাসনের বাস্তববাদের অনুভূতি দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। মহাশক্তিগুলোর সম্পর্কের অস্থিরতার মধ্যে মোদি এই নতুন অসঙ্গতির উৎসকে শান্তভাবে পরিচালনা করতে চাইছে বলে মনে হচ্ছে। রাশিয়াও ধারণা করে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মোদির গভীর কৌশলগত সহযোগিতায় বাধা দিতে পারে না, যা এখন আর কেবল দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়। মস্কো অবশ্যই কোয়াড নিরাপত্তা সংলাপে নয়াদিল্লির ক্রমবর্ধমান ভূমিকা দেখে হতাশ, যা ভারতকে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর প্রধান প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্র জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথে জোটবদ্ধ করছে।
নিরাপত্তা পরিষদ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পর্যন্ত বহুপক্ষীয় ফোরামে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার কথাও মস্কো উল্লেখ করেছে। যদিও ভারত ব্রিকসের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর বাইরের ফোরামগুলোতে অংশগ্রহণ করে চলেছে। তবে কোয়াড ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আরো বেশি প্রাধান্য অর্জন করে আসছিল।
মস্কো সচেতন যে, নয়াদিল্লি এবং বেইজিংয়ের মধ্যে তীক্ষ দ্বন্দ্ব ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং ভারত-চীনা মিথস্ক্রিয়া ও আস্থা তৈরিতে ব্রিকস ফোরাম ব্যবহারের আশা করছে; কিন্তু নয়াদিল্লি ও বেইজিংয়ের মধ্যে বিরোধ এখন গভীর কাঠামোগত। এটি রাশিয়াকে ভারত ও চীনের সাথে তার সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টাকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিতে পারে।
রাশিয়া চীনের সাথে অংশীদারিত্বকে আরো গভীর করছে, যেটি ভারতের সাথে সম্পর্কের চেয়ে ভূ-কৌশলগত এবং অর্থনৈতিকভাবে বেশি ওজনদার হয়ে উঠেছে। যদিও মস্কো নতুন দিল্লিকে ছাড়ছে না। হিমালয় সীমান্তে চলমান চীন-ভারত সামরিক সঙ্কটের সময়, রাশিয়া ভারতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করলে চীন অসন্তুষ্ট হলেও তা বন্ধ করেনি। সহজ কথায়, নয়াদিল্লি এবং মস্কো উভয়েই ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের সাথে নিজ নিজ সম্পর্কের পরিবর্তনশীল গতিশীলতায় খাপ খাইয়ে নিতে চাইছে।
ভারত নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আরো বেশি সম্পর্কযুক্ত হতে শুরু করে, তবে এটি এক মেরুভিত্তিক বিশ্বপরিস্থিতির বিপদ সম্পর্কে গভীরভাবে শঙ্কিত ছিল। কাশ্মির নিয়ে পাকিস্তানের সাথে ভারতের বিরোধের সমাধানে ক্লিনটন প্রশাসনের সক্রিয়তা এবং নয়াদিল্লির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার ওপর তার মনোযোগ হয়তোবা ভারতকে মস্কোর অংশীদারিত্ব ধরে রাখতে বাধ্য করেছিল। পাকিস্তানের সাথে ক্রমাগত সামরিক উত্তেজনা এবং সোভিয়েত ও রাশিয়ান অস্ত্রের ওপর ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর নির্ভরতা এটিকে দ্বিগুণ বিচক্ষণ কৌশলে পরিণত করেছে।
মার্কিন শক্তিকে সীমিত করতে রাশিয়া একটি বৃহত্তর আদর্শিক প্রকল্পে আগ্রহী ছিল। এর নির্বাচিত যন্ত্রটি ছিল চীন ও ভারতের সাথে একটি নতুন জোট, যা একটি বহুমুখী বিশ্বকে উন্নীত করবে। নব্বইয়ের দশকে চালু হওয়া একটি ত্রিপক্ষীয় ফোরাম শেষ পর্যন্ত ব্রিকসে প্রসারিত হয়।
এদিকে চীনের সাথে ভারতের ক্রমবর্ধমান সমস্যা বেইজিংয়ের প্রতি নয়াদিল্লির নিরপেক্ষ মনোভাবের একটি বড় পরিবর্তনে বাধ্য করেছে। চীনের ভারসাম্য রক্ষায় ভারত অবশ্যম্ভাবীভাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের দিকে ঝুঁকেছে। বেইজিংয়ের উপস্থাপিত চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য ওয়াশিংটন জেগে উঠলে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বদর্শনে ভারত বৃহত্তর কৌশলগত অগ্রগতি অর্জন করতে শুরু করে। এটি ভারতকে ওয়াশিংটনের নতুন ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের কেন্দ্রে রাখার ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয়েছিল।
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ইন্দো-রাশিয়ান বিরোধ যদি চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে হয়, তবে পাকিস্তান ঘিরে আফগানিস্তানের ওপর বিচ্ছিন্নতা, এমন একটি ফ্রন্ট যা ভারতের জন্য সংবেদনশীল এবং অনেক বেশি তাৎক্ষণিক। আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অপমানজনক পশ্চাদপসরণে ভারতের উদ্ভূত নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন দিল্লি। দুই দশকের মার্কিন সামরিক উপস্থিতি আফগানিস্তানে ভারত নিজস্ব অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রোফাইল উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত করেছিল। পাকিস্তানের সমর্থনে তালেবানের ফিরে আসার পর আপাতত সেখানে এর কার্যক্রম বন্ধ করার কোনো বিকল্প নেই। এতে পাকিস্তানকে বিখণ্ড করার কথিত গোপন এজেন্ডা সামনে আগানো সম্ভবত কঠিন হবে।
গত কয়েক বছর ধরে, রাশিয়া তালেবানের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে এবং আফগানিস্তান সংক্রান্ত বিষয়ে পাকিস্তানের সাথে সমন্বয় করেছে। তালেবানের ওপর নয়াদিল্লির স্বল্প প্রভাব থাকার যুক্তি দেখিয়ে ভারতকে আফগানিস্তানের পরিবর্তন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়েছে। যদিও দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আফগানবিষয়ক জাতীয় নিরাপত্তা সম্মেলনে রাশিয়া মধ্য এশীয় মিত্রদের সাথে নিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু এরপর ইসলামাবাদের আফগান সম্মেলনেও মস্কো অংশগ্রহণ করেছে। মস্কো বিশ্বাস করে যে ইসলামাবাদ এবং তালেবান মধ্য এশিয়ায় তার দক্ষিণ অংশে ভবিষ্যতের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোকে আরো ভালোভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করবে। নয়াদিল্লি ধারণা করে যে, তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তান আবারো পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট ও উৎসাহিত ভারতবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর আবাসস্থল হয়ে উঠবে।
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের সাবেক সদস্য সি. রাজা মোহনের পর্যবেক্ষণটি এ ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে, ‘অতীতে, নয়াদিল্লি রাশিয়ার সংবেদনশীলতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। ভারত এ অঞ্চলের কয়েকটি দেশের মধ্যে ছিল যেগুলো ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তান আক্রমণে সোভিয়েত ইউনিয়নকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে ইচ্ছুক ছিল না। আজ মোদি এবং তার পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টারা ইন্দো-প্যাসিফিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাশিয়ার সাথে মতপার্থক্য প্রকাশ করতে আর অস্বস্তিকর নন। কোয়াড এবং আফগানিস্তান নিয়ে নয়াদিল্লি এমন একটি কৌশলে পৌঁছেছে, যা মস্কোর সাথে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে যেখানেই সম্ভব সহযোগিতা সম্প্রসারণ করে, আর পার্থক্য লুকিয়ে রাখে না। ... ভারত ব্রিকস গোষ্ঠী এবং রাশিয়া ও চীনের আধিপত্যে থাকা অন্যান্য বহুপক্ষীয় ফোরামে অংশগ্রহণ অব্যাহত রেখেছে, পরেরটির সাথে আগের এবং চলমান দ্বন্দ্বের সাথে প্রকাশ্য পার্থক্য সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ ছাড়াই। একই সময়ে, নয়াদিল্লি কোয়াড কাঠামোকে শক্তিশালী করতে জোর দিচ্ছে। এটি এমন একটি ভারতীয় কৌশল যা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের সাথে ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের বিষয়ে আর প্রতিরক্ষামূলক নয়, যা এ মাসে সম্পূর্ণ প্রদর্শনের মধ্যে থাকবে।’
বৈশ্বিক পরিস্থিতি এ সময়ে যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে; তাতে রুশ-চীন আর মার্কিন দু’পক্ষের প্রতিযোগিতা স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের চেয়েও বেশি উত্তেজনাকর অবস্থায় পৌঁছেছে। এ সময়ে দু’পক্ষের সাথে একই সাথে থাকাটা দিল্লির পক্ষে কতটা সম্ভব হবে তা বলা কঠিন। রাশিয়ার সাথে প্রতিরক্ষা সম্পকের্র নতুন পর্যায় কোনোভাবে একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে না। এ বাস্তবতায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় নতুন মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা জোট অকাসের জন্ম হয়েছে, যেখানে ভারত সদস্য নয়। ভারতের চীনের সাথে দ্বন্দ্ব ও রাশিয়ার সাথে অতি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এক সাথে চলবে বলেও মনে হয় না। কোয়াডে ভারতে সাম্প্রতিক নিষ্ক্রিয়তায় সেটি স্পষ্ট হয়। নতুন অবস্থায় ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সম্পর্কে ভাটা অনিবার্য হয়ে উঠবে। চীন থেকে পশ্চিমা বিনিয়োগ যেভাবে ভারতমুখী হওয়ার কথা সেটি হবে না। এমনকি এম-৪০০ কেনার জন্য যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হচ্ছে সেটিও আরোপিত হতে পারে। এটি হলে তুরস্কের চাইতেও বেশি চাপে পড়বে ভারত। একই সাথে আমেরিকা বিনিয়োগ ক্ষেত্র ও কৌশলগত মিত্র খোঁজার জন্য বিকল্প সন্ধানে সক্রিয় হতে পারে। এ ক্ষেত্রে স্নায়ুযুদ্ধ সময়ের পাক-মার্কিন সম্পর্কের যুগ ফের যদি ফিরে আসে বিস্মিত হওয়ার কিছু থাকবে না। আর বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার তুলনামূলক ছোট দেশগুলোর গুরুত্ব বাড়বে।
mrkmmb@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল