২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তরুণ প্রজন্মের ভাবনা কোন দিকে

-

১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ১৯৪৭ সাথে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান ও ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীনতা লাভ করেছিল। পাকিস্তান রাষ্ট্র্রটি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল : পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তান; যা আজকের বাংলাদেশ। ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যার মাধ্যমে বাংলার স্বাধীনতা ব্রিটিশরা দখল করে নেয়। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। ব্রিটিশরা ভারতের গরিব চাষিদের নীল চাষ বাধ্যতামূলক করে শোষণ করেছে। বিভিন্ন করারোপ করে। মহাজন প্রথার মাধ্যমে শোষক ও শোষিত শ্রেণী তৈরি করে। নতুন প্রজন্ম পলাশী থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ইতিহাস ভালোভাবে জানে না। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, সিপাহি বিদ্রোহ, কবি-সাহিত্যিকদের বিদ্রোহ, কবি নজরুলের বিদ্রোহ, ওহাবি আন্দোলন, ফরায়েজি আন্দোলন, দেওবন্দ আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন, কৃষক প্রজা বিদ্রোহ, প্রীতিলতা ও সূর্যসেনের বিদ্রোহ, ক্ষুদিরামের ফাঁসি, বিভিন্ন দাঙ্গা ও হাঙ্গামা এবং আন্দোলন, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দ্বিজাতিতত্ত্ব এবং শেরেবাংলা ফজলুল হক ও সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বের ফসল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।
২৪ বছর পাকিস্তানিদের শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, জেনারেল জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, ৩০ লাখ শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ।
বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণীর ও জনগণের অধিকার আদায়ের কোনো উন্নতি হয়েছে কি? এ ঘটনাপ্রবাহ বাঙালি জাতির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত করে। ৩১ অক্টোবর ১৯৭২ সালে আ স ম আবদুুর রব ও মেজর জলিলের জাসদ গঠন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। ১৬ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে খন্দকার মোশতাক সরকার ক্ষমতায় ৮৩ দিন। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ, ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতা ও জেলহত্যাকাণ্ড। ৩ নভেম্বর সামরিক অভ্যুত্থান করে খালেদ মোশাররফের ক্ষমতা দখল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি বিদ্রোহ। ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ সালে প্রধান বিচারপতি সায়েমের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল জেনারেল জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল। ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ড। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ জেনারেল এরশাদ কর্তৃক ক্ষমতা দখল। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের পতন। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের ব্যবস্থা এবং সংসদীয় সরকার গঠন। এর আগে ১৯৭৪ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হলে সাতজন ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ২ জানুয়ারি একটি কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজ শিকদার হত্যাকাণ্ড। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা মোশতাক সরকারে যোগ দেন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ নামে কালো আইন পাস করেছিলেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে চলছে অবক্ষয়ের মহাসঙ্কট, দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকের উদ্দেশ্য ভোগবাদী ধারণার ব্যাপকতা ও লুটপাট। নদী দখল, বাড়ি দখল, সরকারি ও বেসরকারি জায়গা দখল। ছাত্র সংগঠনের ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলার ছাত্রনেতা মানেই যেন চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি, সন্ত্রাসী ও গডফাদার, ঠিকাদার, মাদকসেবী, কালোবাজারি ইত্যাদি। ছাত্র সংগঠনের নেতার ছাত্রত্ব নেই, লেখাপড়া নেই; ঠিকাদার, বিবাহিত অছাত্র অনেকে উপজেলা ও জেলার ছাত্রদের নেতা। নেতার আছে বিশেষ বাহিনী। এভাবেই তৈরি হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের লিডার। ছাত্রনেতারা অনেকে কোটি টাকার মালিক ও ঠিকাদার ব্যবসায়ী। পত্রিকার পাতায় দেখা যায় অস্ত্রসহ ছাত্রনেতা আটক। মাদক কারবারি ছাত্রনেতা আটক, নারী ও শিশু নির্যাতনকারী হিসেবে ছাত্রনেতা আটক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রনেতা কর্তৃক শতাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের উৎসব পালন। ঠিকাদার থেকে কোটি টাকা চাঁদাবাজি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর থেকে চাঁদাদাবির অভিযোগে একটি ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি থেকে বহিষ্কার ইত্যাদি।
ডিজিটাল যুগে তরুণ প্রজন্ম ভোগবাদী ধারণার বেড়াজালে বন্দী। জাতীয় নেতৃত্বের শূন্যতার অভাব পূরণে বিকল্প নেতার অভাব রয়েছে। জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলাদেশ নিয়ে এবং অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য জনবান্ধব কিছু ভাবছে কি? বিরোধী দলেও নেতা ও নেতৃত্ব সঙ্কট বিদ্যমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানের মতো দেশপ্রেমিক দক্ষ লিডারের শূন্যতা থেকেই যাচ্ছে।
দেশে চলছে লুটপাট ও চেতনার বিভাজন। ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের পেছনে ছুটতে ছুটতে দুদক ক্লান্ত। জাতি আজ দিশেহারা অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। বিশেষ কায়দায় এমপি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইত্যাদি হওয়া বন্ধ করতে হবে। ছাত্রনেতাদের ডিগবাজি ঠিকাদারি বাদ দিয়ে, দেশপ্রেম ও মানবতার শিক্ষা হিসেবে দ্রব্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি দূর করা, ঘুষ ও লুটপাট বন্ধ এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জন্য দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ হিসেবে এগিয়ে আসতে হবে।
কেমন বিকল্প নেতৃত্ব চায় নতুন প্রজন্ম? এ বিষয়ে জাতির বিবেকের কাছে বিরাট প্রশ্ন। নেতৃত্ব প্রদানের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে কি? নতুন প্রজন্ম মা-বাবার কাছে পারিবারিক মূল্যবোধ শিখতে পারছে কি? সততা, নিষ্ঠা, সত্যবাদিতা, স্পষ্টবাদিতা, দেশের মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, পাংচুয়ালিটি, কমিটমেন্ট, ধর্মীয় মূল্যবোধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ইত্যাদি নতুন প্রজন্ম দেখতে চায়।
দেশপ্রেমিক প্রজন্মের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার কাক্সিক্ষত সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হলে নতুন প্রজন্মকে মেধা মননশীলতা, দেশপ্রেম ও মানবতার প্রেরণায় মনোবল নিয়ে অভিভাবকদের প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসতে হবে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে তরুণ প্রজন্মের ছাত্রনেতারা দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। আশির দশকে ছাত্রনেতারা জেনারেল এরশাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। ২০২০ সালের ছাত্র ছাত্রীদের ভাবতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেধা দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ভেজাল খাদ্য উৎপাদন রোধে হাইকোর্ট বিভাগের রুল কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধে উদ্যোগ নিতে হবে। খাদ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি রোধে ভূমিকা রাখতে হবে। মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে, সুশাসন নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে হবে। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখতে হবে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে, মূল্যবোধসম্পন্ন মানবসম্পদ হিসেবে দেশ-বিদেশে ভূমিকা রাখতে হবে।
সিলেটের বাবলা ও ঝালকাঠির নাসরিনদের মতো ধর্ষণদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
২০০২ সালে দিনাজপুরে সীমা গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। ২০১৯ সালে ফেনীর নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ করতে থাকে পুরো জাতি। ২০২০ সালে সিলেটে নববধূ গণধর্ষণের শিকার হয়েছিল। তদুপরি নোয়াখালীর গণধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় বইতে থাকে। দেশপ্রেমিক নাগরিকদের অংশগ্রহণে প্রতিবাদ চলেছে।
প্রতিদিন পত্রপত্রিকা খুললেই যেন ধর্ষণের খবরে সয়লাব। জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত তিন শতাধিক শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার। গণধর্ষণের পর হত্যা ১৫ জন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যা সাতজন, যৌন সহিংসতার শিকার এক হাজার ৪০৬ জন। জাতীয় মহিলা পরিষদের সূত্রে জানা যায়, ৫৪৭ জন নারী শিশু ধর্ষণের শিকার।
নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের চিত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। যেন বাংলাদেশ গণধর্ষণ ও ধর্ষকদের অভয়ারণ্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ধনিক শ্রেণীর বখাটে ছেলেদের নির্যাতনের পরিণতিতে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আবার বখাটেরা রাজনৈতিক দলের ক্যাডার। বিভিন্ন সরকারের সময় রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে স্কুলগুলোর আশপাশে ইভটিজিং, মাদকদ্রব্য সেবন করে শিশু নির্যাতন ও গণধর্ষণ করে।
স্কুল ও কলেজের ম্যানেজমেন্ট কমিটিতে রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ থাকায় এসব দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে, প্রধান শিক্ষক শিশু নির্যাতন বা ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেন না। রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলেও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্রুত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। নুসরাতের ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ওসি অধ্যক্ষের পক্ষাবলম্বন করেন। একমাত্র পুলিশকে রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত ও নিরপেক্ষ রাখতে পারলে সাত দিনের মধ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন গণধর্ষণ হত্যা বন্ধ করা সম্ভব।
কেস স্টাডি-১. সিলেটের একজন বাবলাই পারে গণধর্ষণের চিত্র পাল্টে দিতে!
সিলেটে স্বামীকে জিম্মি করে নববধূকে গণধর্ষণ করা ছয়জন ছাত্রলীগ কর্মীকে যিনি আইনের আওতায় আনতে সাহায্য করেছেন তিনি হলেন মিহিত গুহ চৌধুরী বাবলা। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি স্থানীয়ভাবে বাবলা চৌধুরী নামে পরিচিত। সিলেটে ধর্ষণকারীদের নিয়ে সারা দেশে তোলপাড়! সেই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে বাবলাই প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছেন। গণধর্ষণের শিকার নববধূ ও তার স্বামী যখন কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছিল, তখন বাবলার সাথে পথে দেখা। বাবলা ঘটনা শুনলেন এবং বললেন, এমন জঘন্য ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এদের ছাড় দেয়া উচিত হবে না। বলেই বাবলা ফোন করেন শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।
তবে পুলিশ আসার আগেই ওই নির্যাতিতা ও তার স্বামীকে নিয়ে ছাত্রাবাসের দিকে রওনা দেন বাবলা। সাইফুর-রবিউলের কাছ থেকে গাড়ির চাবি উদ্ধার করেন। গেটে দাঁড়িয়ে পুলিশের জন্য অপেক্ষা করেন। পুলিশ আসে ও কয়েকজন নেতাও সেখানে আসেন। ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চলে, তর্ক হয়, তারা মীমাংসা করতে চান অর্থের বিনিময়ে। কিন্তু বাবলা অনড় ছিলেন, রাজি হননি। বাবলা বলেছিলেন, তাদের ছাড় দেয়া উচিত হবে না। তিনি নির্যাতিতার পাশে দাঁড়ান। মেয়েটি ও তার স্বামী ধর্ষণদের ফেস চিনলেও নাম জানতেন না। বাবলাই বলে দেন তারা কারা এবং বলেন তাদের বিচার হওয়া উচিত।
আসলে মানুষ মানুষের পাশে থাকলে অপরাধ করতেও অপরাধীরা চিন্তা করবে। বাবলার মতো মানুষরা এভাবে পদক্ষেপ নিলে মেয়েরা সমাজে চলতে ভয় পাবে না। ধর্ষণের প্রতিবাদকারী বাবলাদের নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের পক্ষ থেকে সম্মান দিলে হাজারো বাবলা সারা দেশে এগিয়ে আসবেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বাবলাদেরকে তাদের কাজের জন্য প্রাপ্য বাহবাটুকু দিন, দেখবেন এক দিন দেশের চিত্র পাল্টে গেছে।
কেস স্টাডি-২. ঝালকাঠির নাসরিন সারা বাংলাদেশের ফুলন দেবী!
২০২০ সালের ২ অক্টোবর দুপুরে ঘরে ঢুকে ‘স্বর্ণকিশোরী’ খেতাবপ্রাপ্ত কলেজছাত্রী নাসরিন আক্তার সারার (১৭) ওপর হামলা চালায় জুবায়ের আদনান নামে এক যুবক। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় মামলা করা হয়। মামলার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো বিষয়টি মীমাংসার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নাসরিন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে থানার সামনেই অনশনে বসেন। তাকে দেখে থানার সামনে ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। মীমাংসা নয়, নির্যাতনের বিচার দাবি জানান নাসরিন। খবর পেয়ে নাসরিনের বোন ও ভগ্নিপতি এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারাও ঘটনার বিচারের দাবি জানান। পরে পুলিশ এসে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অনশন তুলে নেয় সারা। নাসরিন ঝালকাঠির আকলিমা মোয়াজ্জেম ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।
প্রতিদিন নারী ও শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, তার বিরুদ্ধে ভারতের ফুলন দেবীর মতো নারীদের প্রতিবাদী হতে হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে শুধু নারী ও শিশু নির্যাতন হত্যা ও ধর্ষণের মামলার বিচার করতে হবে। ধর্ষকের মা ও বাবাকে তিন মাসের জেল ও জরিমানার ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে ওয়ার্ড ও মহল্লাভিত্তিক ধর্ষকের ছবি ঝুলিয়ে দিতে হবে। ধর্ষকের লেখাপড়ার সাটিৃফিকেট ও মার্কশিট বাতিল করতে হবে। সারা দেশে মসজিদ, প্যাগোডা, মন্দির, স্কুল ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস ও র্যালির ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে ভাবতে হবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যৎ কোন দিকে।
লেখক : গবেষক ও উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ


আরো সংবাদ



premium cement
রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য বেনাপোল সীমান্তে ৭০ লাখ টাকার স্বর্ণের বারসহ পাচারকারী আটক ৪ বিভাগে হতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টি!

সকল